বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ওড়িশা সফর করেন। ভূবনেশ্বরে নবীন পট্টনায়েকের বাডডিতে যান। সেখানেই মধ্যাহ্নভোজন করেন। প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনা করেন।
এক ঘণ্টার বৈঠকে জোট নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। সাংবাদিকদের একই কথা জানালেন নীতিশ কুমার ও নবীন পট্টানায়েক। এদিন ভূবনেশ্বরে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন বিহার ওড়িশার দুই মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরা দুজনেই বৈঠকের পর দাবি করেন যে আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের জন্য জেডিইউ ও বিজেডি রাজনৈতিক জোট নিয়ে কোনও আলোচনা করেনি। তাঁদের বৈঠক ছিল নিছকই সৌজন্য মূলক।
এদিন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ওড়িশা সফর করেন। তাঁর কর্মসূচি ছিল পূর্ব নির্ধারিত। ভূবনেশ্বরে নবীন পট্টনায়েকের বাডডিতে যান। সেখানেই মধ্যাহ্নভোজন করেন। প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনা করেন। তারপর দুজনেই একসঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই তাঁরা বলেন, তাঁদের দুজনের সম্পর্ক খুবই পুরনো। তাঁরা একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু জোট নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। নবীন পট্টনায়েক বলেন, তাঁরা দুজনেই অটল বিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় একসঙ্গে কাজ করেছেন। সেই থেকেই তাঁদের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। তিনি আরও বলেন, ওড়িশা সরকার বিহার থেকে জগন্নাথ দর্শনের আসা দর্শকদের সুবিধের জন্য পুরীতে বিহার সরকারকে দেড় একর জমি বিনামূল্যে দেবে। সেই নিয়েও দুজনের মধ্যে কথা হয়েছে।
অন্যদিকে নীতিশ কুমার বলেন, নবীন ও তাঁর বাবা বিজু পট্টনায়েকের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। কোভিড মহামারির কারণে তাঁরা দীর্ঘদিন দেখা করতে পারেননি। সেই জন্যই এটি ছিল সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার। তিনি আরও বলেন,তাঁদের মধ্যে রাজনীতির আলোচনা হয়েছে। তাঁদের সম্পর্ক ভাল। তাঁদের মধ্যে রাজনীতিক আলোচনার প্রয়োজনও নেই। তবে নীতিশ কুমার বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলিকে একত্রিত করার কাজ করছেন। সেই কারণেই তাঁর নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক জল্পনা ছিল তুঙ্গে।
যাইহোক, বর্তমানে নীতিশ কুমার যেমন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরে রয়েছেন। তেমনই নবীন পট্টনায়েক জানিয়েছেন তিনি ও তাঁর দল কংগ্রেস ও বিজেপি দুটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই সমান দূরত্ব বজায় রেখে চলবে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপি-বিরোধী রাজনীতিবিদদের একত্রিত করার চেষ্টা করছেন, এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সহ বিভিন্ন দলের নেতাদের সাথে দেখা করেছেন। চলতি বছরের মার্চে পট্টনায়কের সঙ্গে দেখা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই সময়ই তাঁরা জানিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে কোনও রাদনৈতিক আলোচনা হয়নি।
ওড়িশা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন বলেছেন, পট্টনায়েক এবং কুমারের মধ্যে বৈঠক জাফরান পার্টিতে কোনও প্রভাব ফেলবে না। তিনি আরও বলেন, নবীন পট্টনায়েক সবসময় তার স্বার্থে যা কিছু করেন তা করেন। যদি তিনি মনে করেন যে তৃতীয় ফ্রন্টে যোগদান তাকে সাহায্য করবে, তাহলে তিনি তা করতে পারেন এবং যদি তিনি মনে করেন এটি সাহায্য করবে না, তাহলে তিনি যোগ দেবেন না। বিজেডি বিধায়ক সৌম্য রঞ্জন পট্টনায়েক বলেছেন, নীতিশ কুমার দেশে একটি সংস্কারমূলক এবং বিকল্প মোর্চা চান। তিনি নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই সাফ করেছেন যে বিজেডি কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয়ের থেকে সমতা বজায় রেখে চলবে।