রাজ্যসভায় অধিবেশন চলাকালীন প্রশ্নোত্তর পর্বে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য জানান, ভারতে এখনও ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি। তবে সদা সতর্ক রয়েছে কেন্দ্র।
ওমিক্রন সম্পর্কে আশ্বস্ত করল কেন্দ্র। রাজ্যসভায় (Rajya Sabha) অধিবেশন চলাকালীন প্রশ্নোত্তর পর্বে (Question Hour) কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী (Union Minister of Health and Family Welfare) মনসুখ মান্ডব্য (Mansukh Mandaviya) জানান, ভারতে এখনও ওমিক্রনে (Omicron) আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি। তবে সদা সতর্ক রয়েছে কেন্দ্র। ওমিক্রন সম্পর্কে একটি প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, "এই নতুন রূপটি ১৪টি দেশে পাওয়া গেছে। ভারতে এখনও ওমিক্রনের কোনও আক্রান্তের খবর মেলেনি। তবে আমরা সমস্ত সম্ভাব্য সতর্কতা অবলম্বন করছি এবং পাশাপাশি জিনোম সিকোয়েন্সিং করছি।
জিনোম সিকোয়েন্সিং কী
জিনোম সিকোয়েন্সিং এমন এক পদ্ধতি যা বিজ্ঞানীদের একটি কোভিড সোয়াব নমুনা থেকে ভাইরাল উপাদান আলাদা করতে, আরএনএ সনাক্ত করতে এবং এর গঠন নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। সুতরাং, এই পদ্ধতির মাধ্য বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের সঠিক রূপটি সনাক্ত করতে সক্ষম হয় যা একজন ব্যক্তিকে সংক্রামিত করেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন সর্বশেষ এই ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার চেয়েও বিপজ্জনক। কোভিড জীবাণুর সবচেয়ে বেশি মিউটেট হওয়া সংস্করণ ওমিক্রন। এ কারণেই বিজ্ঞানীরা একে ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নতুন কোভিড-১৯ রূপের নামকরণ করেছে B.1.1.529। এটি দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হয়েছে। 'Omicron' হিসাবে পরিচিত করোনা ভাইরাসের নতুন রূপ সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের খবরে বিভিন্ন দেশের বিমনাবন্দরে জারি হয়েছে নতুন সতর্কতা। এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ডি অলিভিয়েরা জানিয়েছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট মিউটেট করেছে ৫০ বার। আর এর স্পাইক প্রোটিন বদলেছে ৩০ বার। মানুষের দেহের মধ্যে ঢুকতে কোভিড ভাইরাস এই স্পাইক প্রোটিন ব্যবহার করে। এবং করোনার ভ্যাকসিন সাধারণত এই স্পাইক প্রোটিনকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়।
ভাইরাসের যে অংশটি প্রথম মানুষের দেহকোষের সঙ্গে সংযোগ ঘটায় তার নাম ‘রিসেপ্টার বাইন্ডিং ডোমেইন’। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট সেই রিসেপ্টার বাইন্ডিং ডোমেইনে মিউটেশন ঘটিয়েছে ১০ বার। সেই তুলনায় করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে এই পরিবর্তন হয়েছে মাত্র দু’বার। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের মিউটেশন সম্ভবত একজন রোগীর দেহের জীবাণু থেকে এসেছে, যিনি এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে পারেননি।
করোনার এই নয়া রূপভেদটি হল বি.১.১.৫২৯ ভেরিয়েন্ট (B.1.1.529 Variant) বা বতসোয়ানা ভেরিয়েন্ট (Botswana variant)। বতসোয়ানাতেই (Botswana) প্রথমে এই ভেরিয়েন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল বলে এই নাম দেওয়া হয়েছে। তারপর দক্ষিণ আফ্রিকা এবং হংকং-এও (Hong Kong) এই প্রজাতির দেখা মিলেছে। ফলে এনআইসিডির কাছে করোনার এই প্রজাতি সম্পর্কে বিশেষ কোনও তথ্য একেবারেই নেই। ফলে এই প্রজাতি সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে তার উপর কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।