আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গব জানাচ্ছেন এমন মনে করার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি মেলেনি যে বুস্টার ডোজই একমাত্র কার্যকরী করোনার বিরুদ্ধে। তাই এখনই বুস্টার ডোজ নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
করোনা টিকার (COVID-19 vaccine) বুস্টার ডোজ (Booster Dose) না নিলে, করোনার (COVID-19) বিরুদ্ধে লড়াই অসম্পূর্ণ। এই তথ্যে বিশ্বাসী নন আইসিএমআরের (ICMR) গবেষকরা। আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গব (ICMR Director General Dr Balram Bhargava) জানাচ্ছেন এমন মনে করার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি মেলেনি যে বুস্টার ডোজই একমাত্র কার্যকরী করোনার বিরুদ্ধে। তাই এখনই বুস্টার ডোজ নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। সোমবার এমনই জানিয়েছেন ভার্গব।
আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে কেন্দ্রের লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব করোনার দুডোজের টিকা প্রত্যেক নাগরিকের কাছে পৌঁছে দেওয়া। তারপরে বুস্টার ডোজের কথা ভাবা যাবে। বিশেষ সূত্রের খবর, ভারতে টিকাদান সংক্রান্ত ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ বা NTAGI-এর পরবর্তী বৈঠকে বুস্টার ডোজ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাতকারে ভার্গব জানিয়েছেন, সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার জন্য COVID-19 টিকার দ্বিতীয় ডোজ পরিচালনা করা এবং প্রত্যেককে টিকা দেওয়া নিশ্চিত করা এখন সরকারের অগ্রাধিকার। তিনি আরও বলেন কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে বুস্টার ভ্যাকসিনের ডোজের প্রয়োজনকে সমর্থন করার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মেলেনি।
এই বিষয়ে প্রায় একই মত পোষণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হু-র ডিরেক্টর জেনারেল টেডরোস অ্যাডানম ঘিব্রিয়াস জানান একদিকে যখন গরীব দেশগুলো করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজও পায়নি, তখন উন্নত দেশগুলো দুটো ডোজ পেয়েও বুস্টার ডোজ নিয়ে মাতামাতি করছে, যা রীতিমত বৈষম্যমূলক।
প্রতিদিন, কম আয়ের দেশগুলিতে প্রাথমিক ডোজগুলির তুলনায় বিশ্বব্যাপী ছয় গুণ বেশি বুস্টার শট পরিচালিত হয়। এই বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গুরুত্ব আরোপ করেছে। টেডরোস জানিয়েছেন উন্নত দেশগুলিতে প্রাপ্তবয়স্কদের বুস্টার ডোজ দেওয়া বা শিশুদের টিকা দেওয়ার কোনও মানে হয় না, যখন বিশ্বজুড়ে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলিতে স্বাস্থ্যকর্মী, বয়স্ক ব্যক্তি এবং অন্যান্য উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী এখনও তাদের প্রথম ডোজটির জন্য অপেক্ষা করছে।
তবে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে টিকার কার্যকারিতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। সেই কারণে স্বাস্থ্য চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। পাশাপাশি পরীক্ষা করে দেখা গেছে, বুস্টার ডোজ টিকার কার্যকারিতা অনেকদিন পর্যন্ত বজায় রাখে। তাই কোভিড মোকাবিলায় বুস্টার ডোজ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। উল্লেখ্য, সরকার এবং কিছু বিশেষজ্ঞের মতামত যে এই বুস্টার ডোজ জরুরি নয় এবং টিকার দুটি ডোজ দিয়েই করোনার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করা সম্পূর্ণ হয়। তবু কিছু দেশ, তাদের প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করেছে।