রবিবার জেপি নাড্ডার সঙ্গে দিলীপের বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু, সেদিন অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন নাড্ডা। ফলে বৈঠক সম্ভব হয়নি। অবশেষে সোমবার সন্ধের দিকে নাড্ডার বাড়িতে হয় বৈঠক। সেখানেই উঠে আসে একাধিক বিষয়।
ভোটের আগে যাঁরা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের অনেক জনকেই দলের মধ্যে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। এনিয়ে পুরোনো কর্মীরা প্রকাশ্যে অসন্তোষও প্রকাশ করেছেন। তাই এবার যাতে দলের মধ্যে তাঁদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া না হয় সেই আর্জি জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পাশাপাশি দলের মধ্যে থাকা বেসুরো নেতাদের নিয়েও সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সামনে সরব হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- কংগ্রেসে জি-২৩ টুইস্ট - অধীরের বদলি কে হবেন, কারা রয়েছেন এই দৌড়ে
দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল দিলীপকে। সেই কারণে শনিবারই তড়িঘড়ি উড়ে গিয়েছিলেন তিনি। রবিবার জেপি নাড্ডার সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু, সেদিন অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন নাড্ডা। আর সেই কারণে তিনি দিলীপকে সময় দিতে পারেননি। ফলে বৈঠক সম্ভব হয়নি। অবশেষে সোমবার সন্ধের দিকে নাড্ডার বাড়িতে হয় বৈঠক। সেখানেই উঠে আসে একাধিক বিষয়।
আরও পড়ুন- মুর্শিদাবাদে আন্তর্জাতিক মাদক সিন্ডিকেট চক্রের পর্দা ফাঁস করল CID, ধৃত পাচারকারী
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের দিলীপ ঘোষ বলেন, "অনেকেই প্রকাশ্যে অনেক কথা বলছেন, যা দলের বাইরে বলা ঠিক নয়। এ ব্যাপারে আমি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি। এ ধরনের মন্তব্য দলের পুরনো কর্মী, যাঁরা শৃঙ্খলাপরায়ণ তাঁদের মনোবলে আঘাত করছে।" তবে দলে থেকে প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন অনেকেই। সেই তালিকাটা নেহাত কম নয়। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বেসুরো মন্তব্য করেছেন অনেকেই। যদিও দিলীপ ঘোষ কারও নাম উল্লেখ করেননি। তবে তাহলে কি এবার তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল? এ বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, "এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি রয়েছে। কী ব্যবস্থা নেবে, কাদের বিরুদ্ধে নেবে তা দলের উচ্চ নেতৃত্ব ঠিক করবেন।" পাশাপাশি তিনি এও বলেন যে, রাজ্যে দল প্রত্যাশা মতো ফল করতে না পারার জন্য হয়তো অনেকেই হতাশ হয়েছেন। তার জেরেই এই ধরনের মন্তব্য করে ফেলেছেন।
এমনকী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলের পর বাংলা থেকে সেখানে জায়গা করে নিয়েছেন চারজন সাংসদ। যদিও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরীকে। এরপরই ফেসবুক পোস্টে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বাবুল। তাঁর এই মন্তব্য পছন্দ হয়নি দিলীপেরও। তবে রাজ্য বিজেপি-র সাংগঠনিক রদবদলের সম্ভাবনা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, দেবশ্রী ও বাবুলের কাঁধে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়ার জন্যই তাঁদের মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হয়েছে। তবে সাংগঠনিক রদবদলের বিষয়টি কোনও মন্তব্য করেননি দিলীপ ঘোষ। শুধু তিনি বলেন, "দল আমাকে এই পদে বসিয়েছে। দায়িত্ব পালন করছি। ওঁরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। তাই ওঁদের বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় কমিটি নেবে।"
আরও পড়ুন- PAC-র চেয়ারম্যান মুকুল কেন, বিধানসভায় সমস্ত পদ ছাড়ছে BJP, মঙ্গলে রাজভবনে শুভেন্দু
তবে দিলীপ ঘোষ প্রকাশ্যে না বলেও সূত্রের খবর, যে আগামীদিনে সাংগঠনিক রদবদল হলে সেখানে যেন পুরোনোদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। নাড্ডার কাছে এই আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। কারণ পুরোনোদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। ভোটের আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন দলের কর্মীরা। আর সেই কারণেই এবার সাংগঠনিক রদবদল হলেও যাতে পুরোনোদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় সেই আর্জি জানিয়েছেন দিলীপ।