সাম্প্রতিক ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে (NHFS) অনুসারে, ১৮টির মধ্যে ১৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ৩০ শতাংশেরও বেশি মহিলাদের দাবি কোনও সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে পুরুষদের তাদের স্ত্রীদের মারধর নাকি করতেই পারে।
স্ত্রী রান্না না করলে, পরিবার ও সন্তানদের সময় না দিলে বা স্বামী যদি সন্দেহ করেন, তাঁর স্ত্রী অন্য সম্পর্কে রয়েছেন, তবে সেই স্ত্রীকে নাকি মারধর করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে স্বামীর। না কোনও পুরুষের বক্তব্য এটা নয়। খোদ মহিলারাই এই কথা বলছেন।
সাম্প্রতিক ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে (National Family Health Survey) অনুসারে, ১৮টির মধ্যে ১৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির (Union Territories) ৩০ শতাংশেরও (30 per cent women) বেশি মহিলা এই মত দিয়েছেন। তাঁদের দাবি কোনও সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে পুরুষদের তাদের স্ত্রীদের মারধর (domestic violence) নাকি করতেই পারে। স্বামীদের মারধর করার পিছনে যুক্তি রয়েছে বলে বেশ কিছু অবাক করা কারণ দেখিয়েছেন মহিলারা।
NHFS-5 অনুসারে, ৭৫ শতাংশেরও বেশি মহিলা তিনটি রাজ্যে পুরুষদের তাদের স্ত্রীদের মারধর করার কারণ তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে তেলেঙ্গানা (৮৪ শতাংশ), অন্ধ্র প্রদেশ (৮৪ শতাংশ) এবং কর্ণাটক (৭৭ শতাংশ)। মণিপুর (৬৬ শতাংশ), কেরালা (৫২ শতাংশ), জম্মু ও কাশ্মীর (৪৯ শতাংশ), মহারাষ্ট্র (৪৪ শতাংশ) এবং পশ্চিমবঙ্গ (৪২ শতাংশ)। এই রাজ্যগুলির নির্দিষ্ট সংখ্যক মহিলারা স্বামীর মারধরকে ন্যায্য বলে দাবি করেছেন।
NFHS-এর সমীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়, একজন স্বামীর কি তার স্ত্রীকে আঘাত করা বা মারধর করা ন্যায্য?"। ১৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৩০ শতাংশেরও বেশি মহিলা বলেছেন, "হ্যাঁ"। সমীক্ষাটি জানিয়েছে একজন স্বামী তার স্ত্রীকে মারধর করতে পারে যদি সে তাকে অবিশ্বস্ত বলে সন্দেহ করে, যদি স্ত্রী শ্বশুরবাড়িকে অসম্মান করে, যদি স্বামীর সঙ্গে স্ত্রী তর্ক করে, যদি স্ত্রী, স্বামীর সাথে সহবাস করতে অস্বীকার করে, যদি সে তাকে না জানিয়ে বাইরে যায়, যদি সে ঘর বা বাচ্চাদের অবহেলা করে, যদি সে ভালো খাবার না রান্না করে।
এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে দুটি কারণের ওপর। এগুলি হল ঘর বা বাচ্চাদের অবহেলা করা এবং শ্বশুরবাড়ির প্রতি অসম্মান দেখানো। ১৮টি রাজ্যের মধ্যে ১৩টিতে মহিলা উত্তরদাতারা -- হিমাচল প্রদেশ, কেরালা, মণিপুর, গুজরাট, নাগাল্যান্ড, গোয়া, বিহার, কর্ণাটক, অসম, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, নাগাল্যান্ড এবং পশ্চিমবঙ্গে -- "শ্বশুরবাড়ির প্রতি অসম্মান" এই কারণটিতে বেশি জোর দিয়েছেন।
হিমাচল প্রদেশে (১৪.৮ শতাংশ) সবচেয়ে কম হারে নারীরা স্বামীদের মারধরকে ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করেন। তেলেঙ্গানায়, যেখানে ৮৪ শতাংশ মহিলা তাদের স্বামীদের মারধরকে ন্যায্যতা দিয়েছে, সেখানে সরকার মহিলাদের সুরক্ষা এবং ক্ষমতায়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সমর্থনে বিভিন্ন প্রকল্প চালায়। স্কিমগুলির মধ্যে রয়েছে সখী - ওয়ান স্টপ সেন্টার, উইমেন হেল্পলাইন - 181, স্বধার গৃহ এবং উজ্জ্বলা হোমস, কিশোরীদের জন্য স্কিম (এসএজি) এবং মহিলা শক্তি কেন্দ্র।