সাম্রাজ্যবাদের যুগ শেষ, সেনাকে পাশে নিয়ে এবার লাদাখ থেকে চিনকে হুঁশিয়ারি মোদীর

  • সীমান্ত সংঘাতের আবহে লাদাখে নরেন্দ্র মোদী
  • আচমকাই লাদাখে হাজির হলেন প্রধানমন্ত্রী
  • চিনকে কড়া বার্তা দিতেই মোদীর এই লাদাখ সফর
  • সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে বিঁধলেন জিনপিংয়ের দেশকে

Asianet News Bangla | Published : Jul 3, 2020 9:56 AM IST / Updated: Jul 03 2020, 03:28 PM IST

কাকপক্ষীও টের পায়নি তিনি লাদাখে যাচ্ছেন। সবাইকে অবাক করে দিয়েই লেহর  সামরিক ঘাঁটিতে সকাল ১০টা নাগাদ অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সঙ্গে ছিলেন তিন বাহিনীর প্রধান চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং স্থলবাহিনীর প্রধান মনোজ মুকুন্দ নরভানে। এদিন যে মোদী লাদাখ যেতে পারেন এমন কোনও খবরই আগে থেকে সংবাদমাধ্যমের কাছে ছিল না। বরং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এদিন লাদাখ সফর করবেন বলে আগে ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও শেষ মুহুর্তে সেই সফর বাতিল করা হয়। আর চিনকে গুগলি দিয়ে লাদাখে ভারতের সীমান্ত চৌকিতে হাজির হন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর এই আচমকা সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেজ্ঞরা।

জানা গিয়েছে, লাদাখের রাজধানী লেহ থেকে এলএসি-র দিকেও যান মোদী। এলএসিতে ভারতীয় বাহিনীর যে সব সীমান্ত চৌকি রয়েছে, সেগুলোর কয়েকটিতে প্রধানমন্ত্রী যান  এবং সীমান্তে মোতায়েন জওয়ানদের সঙ্গেও কথা বলেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১ হাজার ফুট উঁচুতে সিন্ধু নদের ধারে লাদাখের নিমুতে এদিন সেনা, বায়ুসেনা ও আইটিবিপি কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। 

১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা অনুপ্রবেশকে ঘিরে সংঘর্ষে জড়ায় দুই দেশের সেনা। এতে ভারতীয়দের তরফে ২০ জন সেনা শহিদ হন। উত্তেজনা কমাতে দুই দেশের সেনা ও কূটনৈতিক পর্যায়ে বৈঠক চলছে। কিন্তু তাতেও সমাধান সূত্র অধরা। এবার তাই চিনকে বড় বার্তা দিতে রাজনাথের সফর স্থগতি করে  নিজেই লাদাখে হাজির হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুঝিয়ে দিলেন যে কোনও আগ্রাসনের জবাব দিতেই ভারত তৈরি।

 

এদিন ১১ হাজার ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে মোদী ভারতীয় সেনাকে উদাত্ত কন্ঠে প্রশংসা করেন। বলেন, আপনারা যেখানে মোতায়েন আছেন, তার থেকেও  আপনাদের সাহসিকতা বেশি। ১৪ নম্বর কোরের সাহসিকতা এবং বীরত্ব নিয়ে সারা বিশ্বের মানুষ আজ অবিহিত।

এদিন নাম না করে সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে চিনকে নিশানা করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। মোদী বলেন, সাম্রাজ্যবাদের যুগ শেষ হয়ে গিয়েছে, এটা বিকাশবাদের যুগ, বিকাশবাদই ভবিষ্যত, অতীত সাক্ষী রয়েছে, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, নাহলে হার মেনেছে। বীরত্বই শান্তির পূর্ব শর্ত, দুর্বলরা শান্তি আনতে পারে না।

ভারতীয় সেনার মনোবল বাড়িয়ে মোদী বলেন, আমরা কঠিন পরিস্থিতিতে জয়লাভ করে এসেছি এবং ভবিষ্যতেও জয়লাভ করতে থাকব। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সীমান্ত সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা। পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর না হলে বা খুব বড় পদক্ষেপের কথা ভাবা না হলে প্রধানমন্ত্রী নিজে সীমান্ত চৌকিতে যেতেন না বলেই ধারণ আন্তর্জাতির বিশেষজ্ঞদের। এই অবস্থায়  প্রধানমন্ত্রীর এই আচমকা সীমান্ত সফর বাহিনীর মনোবল অনেকটা বাড়িয়ে দেবে বলে দাবি করছেন প্রাক্তন সেনাকর্তারা। কূটনীতিক মহলও বলছে, চিনের জন্যও এটা খুব বড় বার্তা। লাগাতার আলোচনা চললেও চিন এখনও সীমান্ত থেকে সেনা সরায়নি। চিনের এই দ্বিচারিতা  ভারত যে বেশি দিন সহ্য করবে না, সীমান্তে মোদীর পদার্পণ আজ সরাসরি চিনা প্রেসিডেন্ট জিনপিংকে সেই বার্তাই দিয়ে দিল।


 

Share this article
click me!