নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বিএসএফের ক্ষমতা নিয়ে পরিষ্কার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন প্রধানমন্ত্রীকে তিনি সাফ জানান বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধি তিনি মেনে নেবেন না।
দিল্লি সফরে (Delhi Visit) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Prime Minister Narendra Modi) সঙ্গে বৈঠকে বিএসএফের (BSF) ক্ষমতা নিয়ে পরিষ্কার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee)। এদিন প্রধানমন্ত্রীকে তিনি সাফ জানান বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধি তিনি মেনে নেবেন না। এদিনের বৈঠকে রাজ্য সংক্রান্ত একাধিক ইস্যু উঠে আসে। এর মধ্যে ছিল রাজ্যে দীর্ঘদিনের পাওনার বিষয়টিও।
২২শে নভেম্বর দিল্লি যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় ফিরবেন ২৫শে নভেম্বর। মোদী মমতা বৈঠকের অ্যাজেন্ডা ছিল রাজ্যের দীর্ঘদিনের বকেয়া পাওনা। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) এক্তিয়ার ১৫ কিলোমিটার থেকে ৫০ কিলোমিটারে বাড়ানোর কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও তার আপত্তির কথা এদিন তৃণমূল নেত্রী জানিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী এর আগে বলেছিলেন যে কেন্দ্রের পদক্ষেপ শুধুমাত্র "সাধারণ মানুষকে অত্যাচার করা" এবং এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠিও লিখেছিলেন মমতা।
এর আগে জুলাই মাসে তিনি দিল্লি সফর করেছিলেন। আর রাজ্যে তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর সেটাই ছিল তাঁর প্রথম দিল্লি সফর। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। আর জয়ের পরই বাংলার পাশাপাশি অন্য রাজ্য দখলের দিকে ঝোঁকে তারা। ত্রিপুরা, অসম ও গোয়াকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে। পাশাপাশি ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে একত্রিত করতে চাইছেন মমতা। আর সেই জোটের গুরুত্বপূর্ণ মুখ হিসেবে উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে মমতার। ।
নভেম্বর মাসেই বিএসএফের ক্ষমতাধীন এলাকার পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রের মোদী সরকার। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয় সীমান্তের ৫০ কিমি পর্যন্ত এলাকায় তল্লাশি, গ্রেফতারের অধিকার দেওয়া হয়েছে বিএসএফকে। বলা হয় এখন থেকে বাংলা-সহ তিন রাজ্যে ৫০ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে তারা তল্লাশি, গ্রেফতার ও পণ্য বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। এমনকী অসম, পশ্চিমবঙ্গ এবং পঞ্জাবে রাজ্য পুলিশের মতো তল্লাশি ও গ্রেফতারির অধিকারও থাকবে বিএসএফের।
উল্লেখ্য, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা বিএসএফের (BSF) সীমানা বৃদ্ধি নিয়ে এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গ ও পঞ্জাবের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকেই সংঘাত চলছে দিল্লির। এর আগে জুলাই মাসে দিল্লি গিয়ে মোদীর সঙ্গে দেখা করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেবার কোভিড টিকা, রাজ্যের নাম পরিবর্তন এবং সাম্প্রতিক পেগাসাস কেলেঙ্কারি নিয়ে কথা হয় দুই প্রধানের।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভাবনের বাইরে দাঁড়িয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করে ছিলেন, পেগাসাস কেলেঙ্কারি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা উচিত। বিরোধী দলীয় নেতারা, দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং ৪০ জন সাংবাদিক এই ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে নজরদারি করার সম্ভাব্য লক্ষ্য হিসাবে প্রকাশিত হয়েছে। এই স্পাইওয়্যার শুধুমাত্র বিভিন্ন দেশের সরকারদেরই বিক্রি করা হয়। তাই এই ঘটনার সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতে তদন্ত হওয়া উচিত।