রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র, কেসি বেনুগোপাল, হরিশ রাওয়াতদের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের বৈঠক। পঞ্জাবের কংগ্রেস-এর শীর্ষ নেতৃত্বে কোন্দলের মধ্যে আলোচনা কি শুধু 'প্রোজেক্ট সিধু' নিয়েই হল, নাকি উঠে এল 'প্রোজেক্ট মোদী'ও?
মঙ্গলবার, দিল্লিতে রাহুল গান্ধীর বাসভবনে পা পড়ল ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা কেসি বেনুগোপাল, হরিশ রাওয়াত এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রও। মনে করা হচ্ছে পঞ্জাবের কংগ্রেস-এর শীর্ষ নেতৃত্বে যে কোন্দল চলছে, তারই মীমাংসার লক্ষ্যে এই বৈঠক হয়েছে।
আগামী বছরের শুরুতেই পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু, তার আগে একেবারে গৃহযুদ্ধ বেঁধে গিয়েছে পঞ্জাব কংগ্রেসের মধ্যে। প্রকাশ্যেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং-এর প্রবল সমালোচনা করে চলেছেন মন্ত্রিসভায় তাঁরই ডেপুটি নভজোৎ সিং সিধু। এই পরিস্থিতিতে দুই তরফের মধ্যে একটা শান্তি স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন গান্ধী ভাইবোন এবং হরিশ রাওয়াত, কেসি বেনুগোপালরা।
ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের প্রধান উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোর। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপির বিরুদ্ধে বিপুল জয়ে সহায়তা করার পর, পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি যোগ দিয়েছেন অমরিন্দরের দলে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ অমরিন্দর-সিধু দ্বন্দ্ব মেটাতে দিল্লিতে বেশ কয়েকটি বৈঠকের পর এবার প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন - 'মন্ত্রী' হচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর, বাংলা পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই পোয়াবারো ভোট-কুশলীর
আরও পড়ুন - সিধুর নামে নিখোঁজ পোস্টার, খোঁজ দিলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার
২০১৭ সালের পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোট প্রচার পরিচালনা করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। ১১৭ সদস্যের বিধানসভায় কংগ্রেস ৭৭ টি আসনে জিতে ক্ষমতায় এসেছিল। মনে রাখতে হবে, সেই সময়ে ভারত জুড়ে চলছিল মোদী-শাহ হাওয়া। কংগ্রেসের এই জয়ের পিছনে দলীয় কর্মসূচির যেমন ছিল., তেমনই ছিল প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্কও। 'কফি উইথ ক্যাপ্টেন', 'পাঞ্জাব দা ক্যাপ্টেন'-এর মতো প্রচারের লাইন বের করেছিলেন তিনি। বাংলায় 'দিদিকে বলো' বা 'বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়'-এর মতোই।
তবে, গান্ধীদের সঙ্গে পিকের এই আলোচনা শুধুই 'প্রোজেক্ট সিধু' নিয়ে, এমনটা নাও হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আলোচনা হতে পারে 'প্রোজেক্ট মোদী' নিয়েও। সম্প্রতি প্রশান্ত কিশোর জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপি (NCP) প্রধান শরদ পওয়ারের সঙ্গেও দেখা করেছেন। পওয়ারের দিল্লির বাসভবনে দুইপক্ষের মধ্যে প্রায় এক ঘন্টা ধরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলে। তার আগে, জুন মাসে শরদ পওয়ারের মুম্বইয়ের বাড়িতেও দ্বিপ্রাহরিক খাওয়ারের সময় পওয়ারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন প্রশান্ত।
এই বৈঠকগুলি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির একত্রিত হয়ে ফ্রন্ট গঠনের সম্ভাবনা সম্পর্কে জল্পনা তৈরি করেছে। সেই বিষয়েও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে প্রশান্ত কিশোরের এমনটাই মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, ইউপিএ সভানেত্রীর পদে সনিয়া গান্ধীর বদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চাইছেন শরদ পওয়াররা।