বিচারপতি হিমা কোহলি ও বিচারপতি অমানুল্লাহর বেঞ্চে উঠেছিল পতঞ্জলির বিভ্রান্তুকর মামলা। সেখানে বলা হয়েছে 'ক্ষমাপত্র কাগজে কলমে আছে। তাদের পিঠ দেওয়া ঠেকে গেছে।
পতঞ্জলির বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন মামলা আবারও অস্তস্তি বাড়াল যোগগুরু বাবা রামদেব ও বালকৃষ্ণের। কোম্পানির বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের জন্য পতঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা রামদেব ও বালকৃষ্ণের দায়ের করা আরও একটি ক্ষমার হলফনামা প্রত্যাখ্যান করেছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি সুর চড়িয়ে নিশানা করেছে রামদেবদের। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, 'আমরা অন্ধ নয়ই'। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, এটি এমনই একটি ক্ষেত্র যেখানে উদার হওয়া কোনও জায়গা নেই। এদিন আদালত এতদিন পতঞ্জলির বিরুদ্ধে কাজ না করার জন্য উত্তরাখণ্ড লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষেও ধমক গিয়েছে। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের উত্তরেও যে সন্তুষ্ট নয় তাও স্পষ্ট করে দিয়েছে।
বিচারপতি হিমা কোহলি ও বিচারপতি অমানুল্লাহর বেঞ্চে উঠেছিল পতঞ্জলির বিভ্রান্তুকর মামলা। সেখানে বলা হয়েছে 'ক্ষমাপত্র কাগজে কলমে আছে। তাদের পিঠ দেওয়া ঠেকে গেছে। আমরা এটা মেনে নিতে অস্বীকার করি আমরা এটাকে ইচ্ছেকৃতভাবে অঙ্গীকার লঙ্ঘন বলে মনে করি।' বিচারের শুরুতেই বেঞ্চ উল্লেখ করেছে রামদেব ও বালকৃষ্ণ প্রথমে মিডিয়ার কাছে তাদের ক্ষমা চেয়ে পাঠিয়েছেন। বিচারপতি হিমা কোহলি বলেন, 'বিষয়টি আদালতে না আসা পর্যন্ত প্রতিযোগীরা আমাদের হলফনামা পাঠানোর উপযুক্ত মনে করেননি। তারা প্রথম মিডিয়াতে পাঠিয়েছেন।গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত আমাদের জন্য কোনও কিছু আপলোড করা হয়নি। তারা স্পষ্টভাবেই প্রচারে বিশ্বাস করে।'
অন্যদিকে পতঞ্জলির পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে অ্যাডভোকেড মুকুল রোহতগি বলেন, তিনি রেজিস্ট্রির পক্ষে কথা বলতে পারবেন না। তবে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। হলফনামা পড়ার সময় বিচারপতি আমানল্লাহ বলেন, 'আপনি হসফনামাটি ফাঁকি দিচ্ছেন। কে তৈরি করেছে, আমি অবার হচ্ছি।' উত্তরে আইনজীবী বলেন, এটি ভ্রান্তি ছিল। পাল্টা আদালত বলেন এই শব্দটা খুব ছোট একটি শব্দ। এরপরই বিচারপতি আমানউল্লাহ প্রশ্ন করেছে এই ক্ষমা প্রর্থনা আন্তরিক কিনা। তার উত্তরে রোহতগি বলেন, 'আর কি বলার দরকার, আমার প্রভু, আমরা করব। তিনি (ক) পেশাদার মামলাকারী নন। মানুষ জীবনে ভুল করে।' পাল্টা বিচারপতি বলেন, আদালতের আদেশ লঙ্ঘন পরেও ক্ষমা চাওয়া যথেষ্ট নয়। আদালতের আদেশ লঙ্ঘনের জন্য সংস্থাকে ফল ভোগ করতে হবে। তারপরই আদালত বলে এই ক্ষেত্র আদালত কখনই উদার হতে পারবে না। আদালত বলেছেন, একটি বার্তা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছানো প্রয়োজন। বলা হয়েছে, এটি শুধুমাত্র এফএমসিজি সনম্পর্ক নয়। আইনেরও লঙ্ঘন করা হয়েছে।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট উত্তরাখণ্ড সরকারের দিকেও আঙুল তুলেছে। প্রশ্ন করেছে, কেন লাইসেন্সিং ইনপেক্টররা কাজ করেনি। তিন জন অফিসারকে বরখাস্ত করার কথাও বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্র কর্তকর্তারাও কেন কিছু করেনি সেই প্রশ্নও তুলেছে আদালত। আদালত বলেছে, "আধিকারিকদের জন্য 'বোনাফাইড' শব্দটি ব্যবহারে আমাদের তীব্র আপত্তি রয়েছে। আমরা (এটি) হালকাভাবে নিতে যাচ্ছি না। আমরা আপনাকে ছিঁড়ে ফেলব," এতে বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা কেবল "ফাইলগুলি ঠেলে দিচ্ছেন"।
সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, এটা ৬ বার হয়েছে। কিন্তু কোনও বারই যথাযথ পদক্ষেপ করা হয়নি। ডিভিসন বেঞ্চ আরও বলেছে, সুপ্রিম কোর্টকে ব্যাঙ্গ করা হয়েছে। পোস্ট অফিসের মত কাজ করা হচ্ছে। অন্যদিকে উত্তরাখণ্ডের আইজীবী বলেন, তারা ব্যবস্থা নেবেন। তারপরই আদালত বলেছে, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ আপনারা এখন জেগে উঠেছেন। বুঝতে পারছেন কীভাবে আইনলঙ্ঘন করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, রামদেব ও বালকৃষ্ণ সুপ্রিম কোর্টে সশরীরে হাজিরা এড়াতে বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছে। আর লাইসেন্সিং দফতর গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন।