আগুন থেকে উদ্ধার করলেন মুসলমান প্রতিবেশীদের, নিজে পুড়ে গেলেন প্রেমকান্ত

Published : Feb 27, 2020, 04:32 PM ISTUpdated : Feb 27, 2020, 06:51 PM IST
আগুন থেকে উদ্ধার করলেন মুসলমান প্রতিবেশীদের, নিজে পুড়ে গেলেন প্রেমকান্ত

সংক্ষিপ্ত

উত্তর-পূর্ব দিল্লির শিববিহার এলাকা এমনিতে শান্ত সেখানেও লেগেছিল হিংসার আগুন মুসলিম প্রতিবেশীর বাড়িতে আগুন জ্বলছে দেখে সব ফেলে ছুটে গিয়েছিলেন প্রেমকান্ত  

উত্তর-পূর্ব দিল্লির শিববিহার এলাকা। এখানে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু এবং মুসলমানরা অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে একসঙ্গে বাস করেন। এখানকারই বাসিন্দা প্রেমকান্ত বঘেল। সোমবার থেকেই অনেক জায়গা থেকে হিংসার খবর আসছিল। তা, যে তাদের শিববিহার-এও এসে পড়বে তা ভাবেননি প্রেমকান্ত। তাই মঙ্গলবার রাতে  হঠাৎ তাঁর মুসলমান প্রতিবেশীর বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখে সব কিছু ফেলে প্রতিবেশীদের বাঁচাতে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। প্রতিবেশীদের বাঁচাতে পেরেছেন, কিন্তু বিনিময়ে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে তাঁকে।

জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে শান্ত শিববিহার-এ আচমকাই পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে ওঠে। একের পর এক বাড়ি জ্বানিয়ে দিতে থাকে উন্মত্ত দুষ্কৃতীরা। পেট্রোল বোমা মারা হয় বাড়ি, গাড়িতে। লুঠপাট চালানো হয় দোকানে। প্রেমকান্ত-এর দীর্ঘদিনের বন্ধু তথা প্রতিবেশী এক মুসলিম পরিবারের বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাড়ি থেকে বের হওয়ার উপায় ছিল না তাঁদের।

আরও পড়ুন - দিল্লি হিংসা-র বলি, একনজরে দেখে নিন মৃত ৩৪ জনের নাম-পরিচয়

পরিস্থিতি খারাপ দেখে বাড়িতেই ছিলেন প্রেমকান্ত। খবর পেয়ে ই ছুটে যান প্রেমকান্ত। দদরজা ভেঙে এক-এক করে তিনি ওই পরিবারের ছয় সদস্যকে বের করে আনেন। কিন্তু, তার মধ্যে আগুন আরও বেড়ে যায়। তাঁর বন্ধুর বৃদ্ধা মা তখনও ওই বাড়িতে আটকা পড়েছিলেন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়েই আগুনে ঝলসে যান প্রেমকান্ত।

আরও পড়ুন - হোয়াটসঅ্যাপেই হয়েছিল দিল্লি হিংসা-র ছক, ফুটেজ ধরে ধরে চলছে 'বহিরাগত'দের খোঁজ

প্রেমকান্ত-এর ভাই সুমিত জানিয়েছে, তার দাদা আগুনে ঝলসে যাওয়ার পর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেকের কাছ থেকেই গাড়ি চেয়েছিলেন। কিন্তু কেউ দিতে রাজি হয়নি। কারণ শিববিহার, মুস্তাফাবাদ ও খুরেজি-র বিভিন্ন অঠ্চল থেকে ব্যাপক হিংসার খবর আসছিল। অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য ফোন করেন তাঁরা। কিন্তু, মাঝপথেই সেই অ্যাম্বুল্যান্স-ও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন - মর্গে পড়ে আসফাক-রাহুল'দের দেহ, হাহাকারের দিল্লিতে মুসলিম বাবার পাশেই হিন্দু মা

কাজেই পোড়ার জ্বালা নিয়েই প্রেমকান্ত রাতভর বাড়িতে পড়ে ছটফট করেন। পরিবারের লোকজন ধরেই নিয়েছিল তিনি বাঁচবেন না। কিন্তু, আশঙ্কা সত্যি হয়নি। সকালে তাঁর ভাই ও অন্যান্য পরিজনরা তাঁকে জিটিবি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিত্সার পরে তাকে বার্ন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখানও তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। সেই অবস্থাতেও প্রেমকান্ত জানিয়েছেন, তিনি পুড়ে গেলেও, তাঁর বন্ধুর মা-কে যে তিনি বাঁচাতে পেরেছেন, তাতেই তিনি খুব আনন্দিত।

 

PREV
click me!

Recommended Stories

এনডিএ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কেন সম্মান? শীতকালীন অধিবেশনের ৭ম দিনে কী হবে?
8th Pay Commission: অষ্টম বেতন কমিশনে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে ঘনাচ্ছে রহস্য? কর্মচারী ও পেনশনভোগীরা খুঁজছে উত্তর