একটি স্টিলের টর্চ দিয়ে তীব্র আঘাত করে ৬১ বছরের স্ত্রীকে খুন করেছিল। তারপর দেহ লোপাট করতে স্ত্রীর দেহ কুঁচি কুঁচি করে কেটে ভরে রেখেছিল টিফিন বক্সে। আর সেই টিফিন বক্স রেখে দিয়েছিল লোহার ট্রাঙ্কে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। এত কিছু করেও বাঁচতে পারলনা ভারতীয় সেনা বাহিনীর প্রাক্তন চিকিৎসক ৭৮ বছরের সোমনাথ পারিডা। রহস্যের সমাধান করল স্থানীয় পুলিশ। অবশেষ ওড়িশার ভূবনেশ্বরের আদালত প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট কর্নেলকে যাবজ্জীবন সাজার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।
নৃশংস খুনের এই ঘটনা সামনে আসে ২০১৩ সালের ২২ জুন। দীর্ঘ দিন দিদির খোঁজ না পেয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোমনাথ পারিডার স্ত্রী ঊষশ্রী সমলের ভাই বাড়িতে আসেন। সঙ্গে ছিল ঊষশ্রীর পরিবারের অনেক সদস্যও। কিন্তু সেই বাড়িতে কেউই ছিল না। বারবার ডাকাাডাকি করলেও কেউ সাড়া দেয়নি। টেলিফোন করেও দিদি ও জামাইবাবুর কাছ থেকে কোনও উত্তর তাঁরা পাননি। তারপরই দ্বারস্থ হয় পুলিশের। তদন্তে নামে স্থানীয় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সোমনাথককে। মুখ খুলতে অস্বীকার করে সে। পুলিশ সূত্রের খবর স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করার পরেও নিজেকে রীতিমত স্বাভাবিক রেখেছিল সেনাবাহিনীর প্রাক্তন চিকিৎসক। নিজের ডিস্পেনসারির পাশাপাশি স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়মিত যাতায়াত করত। নিয়মিত রোগীও দেখত। আরও পড়ুনঃ পেশাদারিত্বের অভাব রয়েছে দিল্লি পুলিশের, তীব্র তিরস্কার শীর্ষ আদালতের
কিন্তু দীর্ঘ জেরা ও তল্লাশির পরই সব তথ্য সামনে আসে। পুলিশ সোমনাথের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে স্ত্রীর কুঁচি কুঁচি দেহ। প্রথমে টর্চের আঘাতে স্ত্রীকে খুন করে সোমনাথ। তারপর তার দেহ কেটে ফেলে। ৩০০টি টুকরো করে স্ত্রীর দেহের। সেই দেহ ভরে রাখে ২২টি টিফিন বক্সে। আর সেই বাক্স গুলি রেখেছিল একটি লোহার ট্রাঙ্কে। দেহ পচে যাওয়ার গন্ধ আটকাতে টুকরো গুলি ফিনাইল দিয়ে ধোয়া হয়েছিল। তবে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর প্রথমে সোমনাথ জানিয়েছিল সে স্ত্রীকে খুন করেনি। তার স্ত্রী ৬১ বছরের ঊষশ্রী আত্মহত্যা করেছিল। শিরডিতে, যেখানে তাদের পরিবারের শেষকৃত্য হত সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্যই দেহ টুকরো টুকরো করে জমিয়ে রেখেছিল সে।
আরও পড়ুনঃ লজ্জার শিরোপা ভারতের, বিশ্বের দূষিত শহরগুলির দুই-তৃতীয়াংশ রয়েছে এদেশে
কিন্তু পুলিশ সোমনাথের বাড়ি তল্লাশি করে উদ্ধার করেছিল অপারেশনের ছুরি কাঁচি ও সবজি কাটার একটি বড় ছুরি। যেগুলি পরীক্ষা করে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছিল দেহে কাটার জন্য সেগুলি ব্যবহার করা হয়েছিল। বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হয় সোমনাথকে। তারপর চলে দীর্ঘ জেরা। আর সেই জেরার মুখে ভেঙে পড়ে স্ত্রীকে খুনের কথা কবুল করে প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোমনাথ পারিডা।