উল্লেখ্য সমপ্রেমী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে উঠে এল ৩৭৭ ধারা। ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭৭ ধারাকে প্রত্যাহার করে সমকামিতাকে 'অপরাধ'-এর তকমা থেকে মুক্ত করা হয়েছিল।
বিয়ে সম্পর্কে নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে নতুন ভাবে সংজ্ঞা দেওয়ার কথা বললেন প্রধান বিচার ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সমপ্রেমী প্রেমী বিবাহে নতুন প্রশ্ন তুললেন প্রধান বিচারপতি। সমলিঙ্গ বিবাহ মামলার তৃতীয় দিনের শুনানিতে বিয়ের জন্য ভিন্ন লিঙ্গের দুই ব্যক্তির উপস্থিতি অপরিহার্য কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। শুধু তাই নয় সমকামী সম্পর্ক যে শুধু শারীরিক চাহিদার উপর নির্ভর করে না, সে কথাও পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। আদালতের পক্ষে বলা হয়েছে,'সমকামী সম্পর্কগুলি কেবল শারীরিক নয় বরং মানসিক ও স্থিতিশীল সম্পর্ক।
উল্লেখ্য সমপ্রেমী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে উঠে এল ৩৭৭ ধারা। ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭৭ ধারাকে প্রত্যাহার করে সমকামিতাকে 'অপরাধ'-এর তকমা থেকে মুক্ত করা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে টেনে আদালতের,'যদি সমকামিতা অপরাধ না হয় তবে দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক সমলিঙ্গের মানুষের বিয়ের মতো স্থিতিশীল বন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধা কোথায়?' পাশাপাশি তিনি এও বলেন,'বিয়ে সম্পর্কে চিরাচরিত ধারণার নতুন সংজ্ঞা দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, সমপ্রেমী বিবাহে কেন্দ্রের 'শহুরে অভিজাত দৃষ্টিভঙ্গি' তত্ত্ব খারিজ করল আদালত। এই মন্তব্যের নিরিখে কোনও যথাযথ প্রমাণ কেন্দ্র পেশ করতে পারেনি বলেও জানান প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সমকামী বিবাহের জন্য আইনি অনুমোদন চাওয়ার যুক্তি শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট বুধবার এমনটাই জানালো। প্রধান বিচারপতি জানান কেন্দ্রের কাছে কোনো তথ্য নেই যে এটি একটি শহুরে অভিজাত ধারণা। তাঁর কথায়,'রাষ্ট্র একজন ব্যক্তির সঙ্গে এমন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বৈষম্য করতে পারে না যার উপর ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের কাছে এমন কোনো তথ্যও নেই যাতে দেখা যায় যে সমলিঙ্গের বিয়ে একটি শহুরে অভিজাত ধারণা।'
কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টের এই বিষয়ে শুনানির বিরোধিতা করছে এবং দাবি করেছে যে শুধুমাত্র আইনসভাই নতুন সামাজিক সম্পর্ক তৈরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,'ব্যক্তিগত আইনের প্রশ্নে, আইনসভার কর্তব্য হল জনপ্রিয় ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করা। যেখানে সামাজিক সম্মতি বিবাহের একটি নির্দিষ্ট সংজ্ঞাকে সমর্থন করে, সেখানে আইনসভা সেই ফর্মটিকে অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তার দায়িত্ব পালন করছে। জনগণের ইচ্ছা। এই দ্ব্যর্থহীন গণতান্ত্রিক ইচ্ছাকে বিচারিক আদেশ দ্বারা প্রত্যাখ্যান করা উচিত নয়।' পাশাপাশি আরও বলা হয় যে,'বিবেচনা করা প্রাসঙ্গিক হবে যে এই মাননীয় আদালতের সামনে যা উপস্থাপন করা হয়েছে তা সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার উদ্দেশ্যে একটি নিছক শহুরে অভিজাত দৃষ্টিভঙ্গি।'