কার্গিলে চার পাকিস্তানিকে নিকেশ করেছিলেন, এখন যানজট সামলান সৎপল

  • কার্গিল যুদ্ধের অন্যতম নায়ক সৎপল সিং
  • একা চার পাকিস্তানি সেনাকে নিকেশ করেছিলেন
  • এখন পঞ্জাবের ভবানীগড়ে ট্রাফিক সামলান
  • বিজয় দিবসে তাঁর পদোন্নতির ঘোষণা পঞ্জাবের মুথ্যমন্ত্রীর

debamoy ghosh | Published : Jul 26, 2019 11:29 AM IST

কার্গিলের পাহাড় থেকে পঞ্জাবের ছোট্ট শহর ভবানীগড়ের রাস্তা। কার্গিলে তাঁর প্রতিপক্ষ ছিল সশস্ত্র পাকিস্তানি সেনা। একা হাতে তাঁদের চারজনকে নিকেশ করেছিলেন তিনি। এখন সেই সৎপল সিং- কেই রোজ  রাস্তায় নেমে সামলাতে হয় অটো, রিকশ, গাড়ি। কারণ কার্গিল বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া এই জওয়ান বর্তমানে পঞ্জাব পুলিশের হেড কনস্টেবল। রাস্তায় নেমে গাড়ি সামলানোই তাঁর দায়িত্ব। কার্গিলের দুর্গম পাহাড়ে প্রতিপক্ষকে সামলানোর তুলনায় সেটা যদিও অনেক সহজ। 

কার্গিল যুদ্ধ জয়ে অবদানের জন্য বীর চক্র পুরস্কার পেয়েছিলেন সৎপল। আর শুক্রবার কার্গিল বিজয় দিবসে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং জানিয়েছেন, এবার থেকে আর রাস্তায় নেমে গাড়ি সামলাতে হবে না সৎপলকে। কার্গিল যুদ্ধে অবদানের জন্য পদোন্নতি দিয়ে তাাঁকে অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব- ইন্সপেক্টর করা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন- কার্গিল যুদ্ধ কেড়েছে তাঁর দুই পা, ডান হাত! ২০ বছর পর ফিরলেন শহিদ তর্পনে

কার্গিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে একজন সিপাই হিসেবে কর্মরত ছিলেন সৎপল। একা প্রতিপক্ষের কম্যান্ডার কারনাল শের খান-সহ চার পাক সেনাকে মেরেছিলেন সৎপল। পরবর্তী সময়ে সেই শের খানকেই সেদেশের সর্বোচ্চ সাহসিকতার পুরস্কার মরণোত্তর নিশান-ই-হায়দার সম্মানে ভূষিত করেছিল পাকিস্তান সরকার। টাইগার হিল দখলে বড় ভূমিকা নিয়েছিল সৎপলের এই দুঃসাহসিক কীর্তি।

সৎপল নিজে স্মৃতিচারণ করে বলেন, 'আমার লাইট মেশিন গান থেকে গুলি চালাতে চালাতে আমি ওঁদের দিকে এগিয়ে যাই। আমার শরীরেও চারটি গুলি লাগে। ওঁদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। ওঁদের বাহিনীকে যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, সেই উঁচু, লম্বা, সুঠাম চেহারার অফিসারের উপরে আণি ঝাঁপিয়ে পড়ি। তখন চারপাশে চিৎকার, চেঁচামেচি চলছিল। পরস্পরের প্রতি সবাই গালাগাল দিচ্ছিল। এসবের মধ্যেই ওই অফিসারকে মারতে সক্ষম হই আমি।' তখনও অবশ্য তিনি জানতেন না যে, ওই অফিসারই শের খান। 
২০০৯ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন সৎপল। কিন্তু বীর চক্র পাওয়ার পরেও কেন রাস্তায় ট্রাফিক সামলানোর চাকরি নিতে হল সৎপলকে? জবাবে কারগিল যুদ্ধের অন্যতম এই নায়ক বলছেন, 'হয়তো আমার সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। বীর চক্র পদকের জন্য আলাদা কোনও সুবিধে পাইনি আমি। প্রাক্তন সেনাকর্মীদের কোটায় এই চাকরি পেয়েছিলাম।' তবে সংবাদমাধ্যমে তাঁর কথা জানতে পেরেই পদন্নোতি দিয়ে সৎপলকে সম্মান জানানোর উদ্যোগ নেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। 
 

Share this article
click me!