আজ জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা। এই বিশেষ দিনে প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র ও দেবী সুভদ্রা স্নান করার জন্য স্নানবেদীতে আহরণ করেন। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় 'পহণ্ডিবিজয়'। প্রতি বছর এই দিনটায় পুরীতে তিল ধারণের জায়গা থাকে না । জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে ১০৮টি সোনার কলসীতে জল এনে স্নান করানো হয় । এই দৃশ্য দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে বহু ভক্তের সমাগম হয় নীলাচলে। কিন্তু এবারের চিত্রটা এবাকের আলাদা। এবার স্নানযাত্রার দিন জগন্নাথ ধামে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। ভিড় এড়াতে কারফু জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষের । ৪ জুন রাত ১০টা থেকে ৬ জুন দুপুর ২টো পর্যন্ত এই কারফু চলবে।
আরও পড়ুন: আরও একবার দৈনিক সংক্রমণে রেকর্ড, দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ২ লক্ষ ২৬ হাজার
এই পুরীতে প্রথম ভক্ত সমাগম ছাড়াই অনুষ্ঠিত হচ্ছে জগন্নাথের স্নানযাত্রা। করোনা সংক্রমণের কারণে দেশে লকডাউন চলায় পূণ্যার্থীদের মন্দিকে প্রবেশের অধিকার না থাকলেও ইউটিউব ভক্তদের জন্য তা দেখার ব্যবস্থা করেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরের পরিচারক ও সেবায়েতদের নিয়েই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের রথযাত্রা। স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে শ্রীক্ষেত্রের মন্দির ও সংলগ্ন এলাকাকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে।
কথিত আছে, প্রতি বছর জৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমার দিনে অসুস্থ হয়ে পড়েন জগন্নাথ। অসুস্থ থাকেন টানা ১৫ দিন। এই ১৫ দিন জগন্নাথকে ৫৬ ভোগ দেওয়া হয় না। মন্দিরের দরজা থাকে বন্ধ। এই সময় তাঁকে আয়ুর্বেদিক ভেষজ ভোগ নিবেদন করা হয়। শীতল প্রলেপ লাগানো হয় জগন্নাথের মূর্তিতে। তারপর আসে রথযাত্রা। আগামী ২৩ জুন রথযাত্রা। কার্যত স্নানযাত্রার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় রথের কাউন্ট ডাউন। সাজো সাজো রব দেখা যায় পুরীতে। কিন্তু এবারে পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। গত ২৪ মার্চ রাত ১২টা থেকে দেশে লকডাউন চলছে। জুন মাসে দেশে ধীরে ধীরে লকডাউন তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও এবছর কোনও পুণ্যার্থীকেই অনুমতি দেওয়া হয়নি পুরীর ঐতিহ্যমন্ডিত স্নানযাত্রায় অংশ নেওয়ার।
এবছর পুরীর ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা বন্ধ না থাকলেও স্নানযাত্রার মত রথের দিনও ভক্তদের সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না বলেই জানা যাচ্ছে।
এদিকে গত সোমবার থেকে আনলক ১ শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। এবারে মন্দির সহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভক্তদের জন্য খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় আগামী ১১ জুন খুলছে তিরুপতির বেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের দরজা। মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে অনলাইন টিকিট বিক্রিও শুরু করেছে তিরুপতি কর্তৃপক্ষ।