মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের থেকে বেশ কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলা শুরু করেছে হাত শিবির। সেই ফাটল আরও বাড়ল মঙ্গলবার।
তৃণমূল কংগ্রেস(TMC) ও কংগ্রেসের (Congress) মধ্যে জাতীয় স্তরে ক্রমশ দূরত্ব বাড়ছে। মুম্বই সফরে গিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যর্থতার জন্য সরাসরি কংগ্রেসের দিকে আঙুল তোলার পর, এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের থেকে বেশ কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলা শুরু করেছে হাত শিবির। সেই ফাটল আরও বাড়ল মঙ্গলবার। এদিন সন্ধ্যায় কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) দিল্লির বাসভবনে একটি বিরোধী দলগুলির বৈঠকের (Opposition Meet) আয়োজন করা হয়। বলাই বাহুল্য তাতে আমন্ত্রিত ছিল না তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)।
রাজ্যসভার ১২ জন সাংসদের স্থগিতাদেশ বাতিলের পথ তৈরি করার জন্য একটি স্ট্র্যাটেজি তৈরির বৈঠক ডাকা হয়। কংগ্রেস ছাড়াও, পাঁচটি বিরোধী দলের নেতারা বৈঠকে ছিলেন। সূত্র জানিয়েছে, এতে শরদ পাওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, ডিএমকে এবং শিবসেনা উপস্থিত ছিল।
সূত্র জানায়, শরদ পাওয়ার, সেনা নেতা সঞ্জয় রাউত, ডিএমকে-র টিআর বালু, সিপিএম-এর সীতারাম ইয়েচুরি এবং ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লাহ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে রাহুল গান্ধীও উপস্থিত ছিলেন।
রাজ্যসভার বহিষ্কৃত সাংসদদের ওপর থেকে সাসপেনশন তুলতে শরদ পাওয়ারকে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডুর সাথে কথা বলতে বলেছেন বিরোধী দলের নেতারা। টিআর বালু জানান, কেন্দ্রের সমস্যা সমাধানের কোনও উদ্যোগ নেই। রাজ্যসভার কোনও সদস্যের ওপর এত কঠোর আচরণ করতে পারে না সরকার।
এর আগে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে ছিলেন ইউপিএ কি। তার কাজ কি। শরদ পাওয়ার তার চেয়ারপার্সন হয়ে কি করবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে কংগ্রেস। কংগ্রেসের তরফ থেকে জানানো হয় তৃণমূল নেত্রীর এই বক্তব্য আদপে বিজেপিরই সুবিধা করে দিয়েছে।
বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো কংগ্রেস নেতৃত্বকে খোঁচা দিয়ে বলেন ইউপিএ-র কোনও অস্তিত্ব নেই। জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আঞ্চলিক দলগুলিকে আহ্বান জানান মমতা। তবে মমতার এই উদ্যোগকে মোটেও ভাল চোখে দেখেননি কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে খোঁচা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "রাজনীতিতে ক্রমাগত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আপনি বেশিরভাগ সময় বিদেশে থাকতে পারেন না।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধতে রাজি নন মুম্বই সফরে গিয়ে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এর আগে দিল্লি সফরে গিয়ে মমতা সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেননি। তিনি বলেছিলেন, কেন তিনি বারবার সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করবেন। পাশাপাশি রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা বৈঠকেই যোগ দেয়নি তৃণমূল সাংসদরা। যা নিয়ে কংগ্রেস তৃণমূল জোটের ভূবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। এদিনও কংগ্রেসকে বাদ রেখেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথ তৈরি করেছেন।