দেশের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে রবিবার লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে একাধিক বড় ঘোষণা করা হয়।
গর্বের ৭৫। দেশের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে রবিবার লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা তুললেন (unfurling the national flag) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Prime Minister Narendra Modi)। এদিন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে একাধিক বড় ঘোষণা (Independence Day speech) করা হয়। দেশের ঐহিত্য সংস্কৃতি এদিন যেমন উঠে এসেছিল মোদীর বক্তব্যে, তেমনই দেশের উন্নয়ন ও ভবিষ্যতের প্রগতির রূপরেকাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁর বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি দেখে নিন এক নজরে। ১৫ই অগাষ্ট লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে কী কী ঘোষণা (important quotes) করলেন মোদী, রইল তার বিস্তারিত তথ্য।
১. সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস
লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী নতুন ভারত গড়ার জন্য 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস' -এর সাথে' সবকা প্রার্থনা' -এর ডাক দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন ভারতের স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপন করব তখন আমাদের আত্মনির্ভর ভারত গড়ার লক্ষ্য পূরণ করতে হবে। এই লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে, তা পূরণ করার দায়িত্ব প্রত্যেক ভারতবাসীকে নিতে হবে।
২. প্রধানমন্ত্রী গতি শক্তি প্ল্যান
গতিশক্তি প্রকল্প নিয়ে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে সেই ঘোষণায় সিলমোহর পড়ল। মোদী বলেন আগামী দিনে, গোটা দেশে চালু করা হবে প্রধানমন্ত্রী গতি শক্তি পরিকল্পনা। এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০০ লক্ষ কোটি। যা সামগ্রিক পরিকাঠামোর ভিত তৈরি করে দেবে ও অর্থনীতির মজবুত পথ তৈরি করে দেবে।
৩. ছোটা কিষান বনে দেশ কি শান
মোদী বলেন আমাদের মন্ত্র হল 'ছোট কিষান বনে দেশ কি শান। এটা আমাদের স্বপ্ন। আগামী বছরগুলিতে, আমাদের দেশের ছোট কৃষকদের গোষ্ঠীবদ্ধ শক্তিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে হবে। তাঁদের নতুন সুবিধা দিতে হবে। এদিন মোদী স্মরণ করিয়ে দেন কিষাণ রেল আজ দেশের ৭০টিরও বেশি রেল রুটে চলছে।
৪. ১৪ অগাষ্টকে বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস হিসেবে পালন
পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস, কিন্তু দিনটি ভারতের কাছে যন্ত্রণার। সেই রক্তাক্ত ১৪ই অগাষ্টকে বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস হিসেবে পালন করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। মোদী বলেন আমরা ১৪ অগাষ্টকে বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশভাগের সময় দেশবাসীকে যন্ত্রণা ও দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, তাঁদের প্রতি সম্মান জানাতে এই দিবস পালন করা হবে।
৫. প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছে পরিষেবা পৌঁছনোর পরিকল্পনা
এদিন মোদী বলেন বড় পরিবর্তন, বড় সংস্কার আনার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। আজ, বিশ্ব দেখতে পাচ্ছে যে ভারতে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির কোন অভাব নেই। সংস্কার আনতে ভালো ও স্মার্ট শাসন প্রয়োজন। বিশ্ব সাক্ষী রয়েছে যে ভারত সরকার শাসনের একটি নতুন অধ্যায় লিখছে
৬. রেলে ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকরণ
প্রধানমন্ত্রী বলেন স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্ণ করার আগে ভারতকে শক্তিক্ষেত্রে স্বাধীন করার প্রতিশ্রুতি নিতে হবে। ভারত বৈদ্যুতিক গতিশীলতার দিকে এগিয়ে গেছে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ নিট-জিরো কার্বন নির্গমনকারী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার লক্ষ্য নিয়েছে। এজন্য ভারতীয় রেলের ১০০ শতাংশ বিদ্যুতায়নের কাজ চলছে।
৭. ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতি
মোদী বলেন একটা সময় ছিল যখন খেলাধুলাকে জীবনের মূলধারার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হত না। অভিভাবকরা শিশুদের বলতেন যে তারা খেলতে থাকলে তাদের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে। এখন, খেলাধুলা এবং ফিটনেস সম্পর্কে সচেতনতা দেশের মধ্যে এসেছে। প্রত্যেকে তা অনুভব করেছেন এবারের অলিম্পিকে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এটি আমাদের দেশের জন্য একটি বড় টার্নিং পয়েন্ট। এই দশকে আমাদের দেশে খেলাধুলায় প্রতিভা, প্রযুক্তি এবং পেশাদারিত্ব আনতে অভিযানকে আরও গতিশীল করতে হবে। এটা গর্বের বিষয় যে ভারতের মেয়েরা অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে, সেটা বোর্ড পরীক্ষা হোক বা অলিম্পিক।
৮. সার্জিক্যাল স্ট্রাইক থেকে এয়ারস্ট্রাইক- সেনার শক্তির পরিচয়
সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং বিমান হামলা চালিয়ে, ভারত তার শত্রুদের কাছে একটি নতুন ভারতের উত্থানের বার্তা দিয়েছে। এর ফলে এটা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে যে ভারত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এদিন লালকেল্লা থেকে বার্তা দেন মোদী।
৯. সৈনিক স্কুল এখন মেয়েদের জন্য খোলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন লক্ষ লক্ষ মহিলা, কন্যাসন্তানদের জন্য উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের থেকে বার্তা আসত যে তারা সৈনিক স্কুলে পড়তে চায়। আজ, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে প্রতিটি সৈনিক স্কুলের দরজা এখন মেয়েদের জন্য খোলা থাকবে।
১০. গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্য
মোদী এদিন বলেন জলবায়ু পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় হাইড্রোজেন মিশন ঘোষণা করা হল। গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন ও রপ্তানির জন্য হাব তৈরি হবে ভারতে।