শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডে আফতাবের বিরুদ্ধ তথ্য পেশ করতে রীতিমত আঁটঘাট বেঁধেই নামার চেষ্টা করছে দিল্লি পুলিশ। হাতে এসেছে বেশ কিছু তথ্য। কিন্তু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তদন্তকারীরা।
ছ'মাস আগের ঘটে যাওয়া শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যারহস্য সমাধান করতে রীতিমত ঘুম ছুটেছে দিল্লি পুলিশের। দিল্লিতে সহবাস সঙ্গী আফতাব আমিন পুনাওয়ালার হাতে খুন হয়েছিলেন গত ১৮ মে। তারপর দিনই শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করে সেগুলি রে খে দিয়েছিল নতুন কেনা ফ্রিজে। মেয়ের দীর্ঘ দিন খোঁজ না পেয়ে বাবা ছুটে আসেন মুম্বই থেকে দিল্লিতে। তারপরই ধরা পড়ে খুন প্রেমিক আমিন। পুলিশের জেরায় খুনের কথা স্বীকারও করে অভিযুক্ত। এবার এক নজরে দেখেনিন এপর্যন্ত দিল্লি পুলিশের হাতে শ্রদ্ধা খুনে কী কী তথ্য প্রমাণ হাতে এসেছে।
১. পুলিশ দিল্লি জঙ্গল থেকে এখনও পর্যব্ত ১০-১৩টি হাড় খুঁজে পেয়েছে। আফতাপ প্রমাণ লোপাটের জন্য শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করে কেটে কেটে প্রতি দিন রাত ২টোর সময় জঙ্গলে গিয়ে ফেলে দিয়ে আসত। তবে শ্রদ্ধার কাটা মাথা এখনও উদ্ধার হয়নি।
২. হাড়গুলি শ্রদ্ধার না অন্য কোনও প্রাণীর জানতে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠান হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান হাড়গুলি শ্রদ্ধার। মেহরাউল্লির জঙ্গলে আফতাবকে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি চালিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
৩. দিল্লির ছতরপুরের যে ফ্ল্যাটে শ্রদ্ধা আর আফতাব সহবাস করত সেই ফ্ল্যাটের রান্না ঘরে রক্তের দাগ পেয়েছে পুলিশ। সেটিরও ফরেনসিক তদন্ত হচ্ছে। এছাড়াও শ্রদ্ধার দেহ একটি ফ্রিজে রাখা হয়েছিল। সেই ফ্রিজও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
৪. রক্ত ও উদ্ধার হওয়া অঙ্গ প্রত্যঙ্গ শ্রদ্ধার কিনা তা জানতে মৃতার বাবা ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। সমস্ত কিছুর ডিএনএ পরীক্ষাও হবে।
৫. আফতাব ও শ্রদ্ধার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩০০ টাকার একটি বকেয়া বিল। যা জল কেনার রশিদ। পুলিশের অনুমান আফতাব প্রচুর পরিমাণে জল ব্যবহার করেছিল। পুলিশের দাবি যা প্রমাণ করে আফতাব রক্ত ও হত্যার অন্যান্য সামগ্রী ধোয়া আর পরিষ্কারের জন্য এই জল ব্যবহার করেছিল।
৬. তবে তদন্তের জন্য পুলিশের ৬ মাস আগের সিসিটিভি ফুটেজ প্রয়োজন। কিন্তু এই এলাকায় যে সিসিটিভিস ফুটেজ এখনও পর্যন্ত পুলিশের হাতে এসেছে ১৫ দিনের ফুটেজ। কিন্তু পুলিশ ওই এলাকার ৬ মাস আগের ফুটেজ খুঁজজে হন্যে হয়েছএ।
৭. শ্রদ্ধার জিনিসপত্র-সহ একটি ব্যাগ পেয়েছে পুলিশ। তবে এটি এখনও পর্যন্ত সনাক্ত করেনি শ্রদ্ধার পরিবার।
৮. দিল্লি পুলিশ আফতাবের নারকো টেস্টের জন্য আবেদন করেছে- এখনও অনুমতি পাওয়া যায়নি। দিল্লি পুলিশ জানতে চায় আফতাব সত্যি কথা বলছে নাকি তদন্তকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কারণ হত্যাকাণ্ডটি ৬ মাস আগে হয়েছে।
৯. আফতাব মে মাসে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল। সেই সময় তার হাতে একটি ক্ষত তৈরি হয়েছিল। চিকিৎসক জানিয়েছেন, ছুরি দিয়ে কেটে যাওয়ার কারণে ক্ষত তৈরি হয়েছে। তবে আফতাব জানিয়েছিল ফল কাটতে গিয়ে হাত কেটেগিয়েছিল। তবে চিকিৎসক সেই সময়ও সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন ক্ষতের গভীরতা নিয়ে। কারণ তাঁর দাবি ফল কাটাতে গিয়ে কারও হাত অতটো গভীর হয়ে কেটে যায় না।
১০. শ্রদ্ধাকে হত্যা করার পর আফতারর মৃতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট অ্যাপ ব্যবহার করত। প্রায় ৫৪ হাজার টাকাও সে শ্রদ্ধার অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিয়েছিল।