অভিযুক্ত ও নিহতের মেয়ে শ্রীলক্ষ্মী একে অপরকে আগে থেকেই চিনত। মেয়ের সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল আগে। তবে পরে সেই সম্পর্ক থেকে মেয়েটি বেড়িয়ে আসে।
নৃশংস বললেও হয়তো কম বলা হবে। মেয়ের বিয়ের আগেই বাবার শেষযাত্রার ছবি দেখল কেরালার কাল্লাম্বালাম। ঘটনাটি ঘটেছে রাজ্যের ভাদাসেরিকোনমে। যেখানে রাজু নামে এক ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে খুন করেছে তার পাড়ায় বসবাসকারী এক যুবক জিষ্ণু। পুলিশ সূত্রে খবর রাজু নামে ওই ব্যক্তির মেয়ের বিয়ে ছিল সেদিন। সেদিনই তাকে খুন করা হয়। এই ঘটনায় রীতিমত হতভম্ব সকলে। কী কারণে খুন, তা জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযুক্ত ও নিহতের মেয়ে শ্রীলক্ষ্মী একে অপরকে আগে থেকেই চিনত। মেয়ের সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল আগে। তবে পরে সেই সম্পর্ক থেকে মেয়েটি বেড়িয়ে আসে। তাঁর পরিবারের তরফে ঠিক করা বিয়েতে রাজি হয়ে যায়। তবে মেয়েটির এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি ওই যুবক। মেয়েটির সঙ্গে এই বিয়েকে কেন্দ্র করে রীতিমত ঝগড়া হয়। এখানেই শেষ নয়। মেয়েটির বাবা রাজুর সঙ্গেও ওই যুবক কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে। তার ভাই এবং বন্ধুরাও এতে তাকে সমর্থন করেছিল। রাজুর মেয়ে শিবগিরি, ভার্কালায় বিয়ে করতে যাচ্ছিল।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজুর মেয়ের বিয়ের কথা ছিল। বিয়ের আগের দিন, পরিবার বন্ধু এবং পরিবারের জন্য ডিনারের আয়োজন করেছিল। আত্মীয়রা বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পরে, জিষ্ণু, তার ভাই এবং দুই বন্ধু - মনু এবং শ্যাম - মধ্যরাতে ওই বাড়িতে ঢোকে। এরপর পরিবারের সাথে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে।
ধস্তাধস্তির সময় এক আসামি রাজুকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। হট্টগোল শুনে রাজুর ভাই ও পরিবারের লোকজন বাড়িতে এলেও চারজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় জিষ্ণুর সঙ্গে তার ভাই জিজিন এবং তার দুই বন্ধু শ্যাম ও মনু ছিলেন। নিহতের মাথায় বেলচা দিয়ে আঘাত করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষের সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি এবং তদন্ত চলছে বলে জানায় পুলিশ। চার হামলাকারীকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রাজুর মেয়ের সঙ্গে জিষ্ণুর আগে বন্ধুত্ব ছিল। তারা দুজনেই বিয়ে করার কথা ভাবছিল, কিন্তু জিষ্ণুর স্বভাবের কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। পরে মেয়ের বিয়ে ঠিক হয় অন্যত্র। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জিষ্ণু ও তার বন্ধুরা বাড়িতে এসে তোলপাড় সৃষ্টি করে। রাজন ছাড়াও এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন আত্মীয়।
প্রাক্তন প্রবাসী রাজু ২৫ বছর বিদেশে থাকার পর কেরালায় তার পরিবারের সাথে বসবাস করার জন্য তার কাজ ছেড়েছিলেন। ফিরে এসে অটোরিকশা চালক হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। কাল্লাম্বালাম পুলিশ জানায়, রাত ১টার দিকে তাদের কাছে অপরাধের কথা জানানো হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছলেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। চারজনই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া করে পুলিশে ডায়েরি করে।