সোস্যাল মিডিয়ায় থেকে যাতে কোনওভাবেই তথ্য পাচার না হয়ে সেই বিষয়ে এবার কড়া পদক্ষেপ করল ভারতীয় সেনা। নিরাপত্তার কারণে ৮৯টি অ্যাপের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল সেনা। ভারতীয় সেনা জওয়ান ও আধিকারিকদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হল।
গালওয়ান উপত্যকায় চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত উত্তেজনার মাঝেই ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছিল কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ভারতীয় সেনার নিষিদ্ধ অ্যাপের তালিকায় অবশ্য টিকটক ছাড়াও রয়েছে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামও। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের পাশাপাশি ই-কামর্স ও ডেটিং সাইটের বেশ কয়েকটি অ্যাপকেও এই নিষেধাজ্ঞা তালিকায় রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গালওয়ানে তাঁবু গুটিয়ে ফেলল লালফৌজ, উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ল অস্থায়ী শিবির ভাঙার ছবিও
ভারতীয় সেনা বাহিনীর তরফে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে 'ব্যান' করা ৮৯টি অ্যাপ থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত প্রত্যেককে তাঁদের অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে হবে। নির্দেশ না মানলে, কড়া শাস্তিমূলক পদক্ষেপের কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা অ্যাপগুলির মধ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটক ছাড়াও আর যেসব জনপ্রিয় অ্যাপ রয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্ন্যাপচ্যাট , উইচ্যাট , হাইক , ট্রু কলার , পাবজি , লাইকি , টিন্ডারের মতো অ্যাপও।
নিরাপত্তার কারণেই অ্যাপগুলি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় সেনা। ফলে অন ডিউটি বা অফ ডিউটি কোনও ভাবেই এই অ্যাপগুলির ব্যবহার করতে পারবেন না ভারতীয় সেনার জওয়ানরা৷
আরও পড়ুন: স্বাগত নন চিনের প্রেসিডেন্ট, জিনপিংয়ের টোকিও সফর বাতিল করতে চাইছে জাপান
বহুবার দেখা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে হানিট্র্যাপের ফাঁদ পেতে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য জেনে নিয়েছে ৷ তাদের টার্গেট হয় ভারতীয় জওয়ানরা৷ সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষ করে ফেসবুকের মাধ্যমে সুন্দরী মহিলাদের সঙ্গে জওয়ানদের আলাপ করিয়ে তারপর সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয় পাকিস্তান৷
বহুবার আইএসআইয়ের এই হানিট্র্যাপের ফাঁদ ধরে ফেলেছে ভারত সেনা ৷ জওয়ানদের নানা ভাবে এই নিয়ে সচেতনও করা হয়৷ কিন্তু তারপরেও একটা-দুটো এরকম ঘটনা ঘটেই চলেছে৷ সেই ঘটনা পুরোপুরি বন্ধ করতে তাই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের উপর লাগাম টেনে দিল ভারতীয় সেনা৷ তাছাড়া ভারত-সিন সীমান্ত সংঘাতের আবহতে যাতে কোনও ভাবেই গোপন তথ্য পাচার না হয় সেই ব্যাপারে সচেতন ভারতীয় সেনা।
পাকিস্তানের মত ইদানিং চিনা গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও ভারতীয় সেনা বাহিনীকে টার্গেট করছে। সেই আবহেই ভবিষ্যতের সাইবারযুদ্ধের কথা মাথায় রেখে, নিরাপত্তার খাতিরেই এবার এই সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় সেনা কর্তৃপক্ষ।