প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরে সরব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন ও মহুয়া মৈত্র। ডেরেক ও ব্রায়েক টুইট করে কড়া ভাষায় প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন।
বিরোধী মহাজোট INDIA-কে আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে কটাক্ষ করে মঙ্গলবারই নয়াদিল্লিতে আয়োজিত বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক থেকে সরব হন তিনি। বিরোধী জোটের নাম সম্পর্কে তিনি বলেন, “যেভাবে ব্রিটিশরা এসে নিজেদের নাম দিয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, সেইরকম ভাবেই বিরোধীরাও নিজেদের জোটের নাম ইন্ডিয়া রেখেছে। এমনকি, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির নামেও ইন্ডিয়া রয়েছে।” জোটের ঐক্যবদ্ধতাকে কটাক্ষ করে মোদীর বক্তব্য, “বিরোধীরা সম্পূর্ণ দিশাহীন। মনে হয়, তারা দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী আসনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা আমাদের সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ বছর। কিন্তু, এটি একটা নতুন সূচনাও বটে। কারণ, ২০২৪ সালে আমরা আবার সরকার গঠন করব।”
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরে সরব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন ও মহুয়া মৈত্র। ডেরেক ও ব্রায়েক কড়া ভাষায় প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন মোদী আজ যা বলেছেন তা মণিপুর ইস্যু থেকে নজর সরানোর খুব সহজ পথ। যেভাবে বিরোধী জোটকে তিনি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তুলনা করেছেন, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট নরেন্দ্র মোদী চাইছেন মণিপুরের কুৎসিত ঘটনা থেকে যেন মানুষের দৃষ্টি সরে গিয়ে তাঁর বিতর্কিত বক্তব্যের ওপর পড়ে। কিন্তু বিরোধী জোট তা হতে দেবে না। সংসদের বাইরে কথা না বলে তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে সংসদের মধ্যে মুখ খোলার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
এদিন এই বিষয়ে সরব হন তৃণমূলের আরেক সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী শক্তিশালী বিরোধীদের প্রতি ভয় লুকিয়ে রাখতে চেয়ে এই বক্তব্য রেখেছেন। কীভাবে এটিকে একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর সাথে তুলনা করেছেন তা লজ্জাজনক। I.N.D.I.A মণিপুরের উপর জবাবদিহি বক্তব্য এবং উত্তর দাবি করে মোদীর কাছ থেকে। প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে ভাষণ দিতে হবে, মূল ইস্যু থেকে পালাবেন না বলে কড়া বাক্যবাণ ছুঁড়েছেন মহুয়া মৈত্র।
এদিন নিজেদের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে বিবৃতি দেয় তৃণমূল কংগ্রেসও। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মণিপুর সঙ্কট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় হতাশা নরেন্দ্র মোদীকে গ্রাস করছে! ব্যর্থতা ঢাকতে প্রধানমন্ত্রী এখন একটি শোচনীয় কৌশলের মাধ্যমে মুখ বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
বিরোধী রাজনৈতিক জোটকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে তুলনা! একটি গণতান্ত্রিক দেশে একজন প্রধানমন্ত্রীর জন্য অবিশ্বাস্য এবং একেবারেই অবাঞ্ছিত বক্তব্য। জবাবদিহি না করে দোষ ঢাকার এই নির্লজ্জ প্রচেষ্টা জাতির মূল্যবোধ ও জনগণের অপমান। দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সম্ভাব্য সবচেয়ে জোরালো ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে তৃণমূল!