লকডাউনে তৈরি করলেন 'সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং বাইক', উচ্ছ্বসিত ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী

শুক্রবার লকডাউন-এর মেয়াদ আরও বেড়েছে

তবে কড়াকড়ি অনেকটাই শিথিল হচ্ছে

রাস্তা বের হলে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা সমস্যার

এর সমাধানে 'সোশ্য়াল ডিসট্যান্সিং বাইক' তৈরি করলেন ত্রিপুরার এক ব্যক্তি

 

একমাসের বেশি সময় ধরে চলছে লকডাউন। শুক্রবার আরও দুই সপ্তাহের জন্য এর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তৃতীয় দপার লকডাউনে অনেকটাই শিথিল হচ্ছে কড়াকড়ি। রাস্তায় বের হলে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা সমস্যার। বিশেষ করে বাইক-স্কুটারের মতো যানবাহনে তো চালক এবং অপর যাত্রী একেবারে গা ঘেসাঘেসি করে বসে থাকেন। তাই ত্রিপুরার এক টিভি মেকানিক লকডাউনে বাড়িতে বসে মাথা খাটিয়ে তৈরি করে ফেললেন 'সোশ্য়াল ডিসট্যান্সিং বাইক' বা 'সামাজিক দূরত্বের বাইক'।

আগরতলার ওই টিভি মেকানিক-এর নাম পার্থ সাহা। তাঁর একটি আট বছরের মেয়ে আছে।  ৩৯ বছর বয়সী পার্থ নিজে স্কুলের পড়া শেষ করতে পারেননি। কিন্তু, মেয়ের যাতে স্কুলে যাওয়া কোনওভাবে না আটকায় সেইদিকে সবসময় খেয়াল রাখেন তিনি। প্রথম দফার লকডাউনের ঘোষণার সময় প্রধানমন্ত্রী মহাভারতের ১৮ দিনের যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে ২১ দিনের করোনাযুদ্ধ জেতার কথা বললেও পার্থ বুঝেছিলেন, করোনা-কে এত সহজে হারানো যাবে না।

Latest Videos

লকডাউন উঠলে মেয়ে কীকরে স্কুলে যাবে, সেই ভাবনা তখন থেকেই তাঁর মাথায় কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিল। লকডাউন একদিন না একদিন প্রত্যাহার করা হবে। আর তারপর মেয়ের স্কুলও খুলবে। তখন মেয়েকে স্কুলের বাসে বা ভাড়া গাড়িতে স্কুলে পাঠানোটা ঝুঁকির হ.য়ে যাবে। কারণ বাস হোক কি অন্য গাড়ি, শিশুদের ভিড় থাকবে। আর শিশুদের পক্ষে নিরাপদ দূরত্ব রাখাটা প্রায় অসম্ভব। তাই মেয়েকে  নিজেই স্কুলে পৌঁছতে চেয়ছিলেন টিভি মেকানিক পার্থ সাহা।

সেই সময়ই মাথায় আসে বাইক কেনার কথা। কিন্তু, বাইকেও গা ঘেসাঘেসি করে বসতে হবে। তাঁর থেকে সংক্রামিত হতে পারে মেয়ে। তাই অনেক ভেবেচিন্তে এই সামাজিক দূরত্বের বাইক তৈরির নকশা করেন তিনি। এরপর গাড়ির পুরোনো যন্ত্রাংশ বিক্রেতার কাছ থেকে নিজের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে অল্প দামে একটি পুরোনো বাইক কিনেছিলেন। প্রথমেই এর ইঞ্জিনটি তিনি সরিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর গোটা বাইকটিকেই তিনি খুলে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলেন। তারপর এক মিটারের চেয়ে সামান্য লম্বা একটি রড নিয়ে তার দুই প্রান্তে বাইকের চাকাদুটি সংযুক্ত করেন।

পার্থ সাহা জানিয়েছেন, বাইকটি থেকে তার ইঞ্জিন সরিয়ে তিনি একটি ব্য়াটারি চালিত ইঞ্জিন যোগ করেছেন। প্রতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে তাঁর তৈরি এই দূরত্বওয়ালা বাইক। আর এর ব্যাটারিটি তিন ঘন্টার মধ্যে সম্পূর্ণ চার্জ হয়ে যায়। একবার সম্পূর্ণ চার্জ দিলে বাইকটি একটানা ৮০ কিলোমিটার পর্যন্তত চলতে পারে। আর ব্য়াটারি চার্জ করার খরচ মাত্র ১০ টাকা।

ইতিমধ্যেই পার্থ তাঁর এই অভিনব বাইক রাস্তায় চালিয়ে পরীক্ষা করেছেন।  পথচলতি মানুষ তাঁর এই নয়া নকশার বাইক দেখে বিস্মিত হয়েছেন। পার্থর দাবি, এভাবে সমাজে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব রাখার বার্তাও দিচ্ছেন তিনি। শুধু পথচলতি মানুষই নন, পার্থর এই বাইকটি দেখে উচ্ছ্বসিত স্বয়ং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব-ও।  তিনি টুইট করে বলেছেন, 'প্রয়োজনীয়তাই সকল আবিষ্কারের জননী! কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন সচেতনতা সৃষ্টিতে একটি অনন্য মোটরসাইকেল তৈরি করার জন্য আমি ত্রিপুরার পার্থ সাহাকে অভিনন্দন জানাই'।

 

Share this article
click me!

Latest Videos

হঠাৎ করে TMC নেতারা পুলিশের বিরুদ্ধে কেন? কী উদ্দেশ্যে? প্রশ্ন অগ্নিমিত্রার | Agnimitra Paul
Naihati-তে কার পাল্লা ভারী? ফল ঘোষণার আগে উত্তেজনা তুঙ্গে গোটা এলাকায় | Naihati By Election Results
ট্যাব কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে শিক্ষকদের জোরদার বিক্ষোভ! দাবি সঠিক তদন্তের! | Bengal Tab Scam
'কয়লার ৭৫ ভাগ তৃণমূলের (TMC) পকেটে যায়' বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)
Bear Rescue Operation | বরফের মধ্যে ভাল্লুকের প্রান বাঁচাল ভারতীয় সেনা, দেখুন দুঃসাহসিক ভিডিও