আগাম সতর্ক করা হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর মহল থেকে। তাও নিজেদের পতন রোধ করতে পারলেন না দুই জওয়ান। সোশ্যাল মিডিয়ায় পাক গুপ্তচর সংস্থার আইএসআই-এর পাতা মধুফাঁদ বা হানিট্র্যাপে আটকে ফাঁস করে দিলেন ভারতীয় সেনার বেশ কিছু গোপন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তবে শেষরক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার তাঁদের গ্রেফতার করল রাজস্থান পুলিশ।
জানা গিয়েছে ল্যান্সনায়েক রবি বর্মা ও সেপাই বিচিত্র বেহরা-র আচরণে সন্দেহ হওয়ার বেশ কয়েকদিন ধরেই তাদের উপর নজর রাখছিল গোয়েন্দা বিভাগ। দেখা যায় একটি পাকিস্তানি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দুই জওয়ানই দীর্ঘক্ষণ ধরে চ্যাট করেন। এরপরই ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো ও রাজস্থান পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে এদিন তাঁদের গ্রেফতার করে।
পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা গত বেশ কয়েকমাস ধরেই ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় মধুফাঁদ পাতছিল। এই বিষয়ে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে সতর্ক করেছিল সেনা কর্তৃপক্ষ। সেনার তরফে সোশ্য়াল মিডিয়ায় কোনও অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে তথ্য আদানপ্রদান, এমনকী সম্পর্ক স্থাপনেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। শুধু সুন্দরী নয়, কোনও বাবাজি, বিমার দালাল-এর ভেক ধরেও ফাঁদ পাতা হয়ে থাকতে পারে।
কোনও সতর্কতাই অবশ্য ল্যান্সনায়েক রবি বর্মা ও সেপাই বিচিত্র বেহরা-কে সামলাতে পারেনি। জানা গিয়েছে ফেসবুকে মধুফাঁদে প্রথম পড়েন সেপাই বিচিত্র বেহরা। সীরাত নামে এক মহিলার সঙ্গে ফেসবুকে সম্পর্ক হয় তাঁর। শুধু তাই নয় এরপর এক পাক এজেন্টকে তিনি নিয়মিত অর্থের বিনিময়ে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে ভারতীয় সেনা সম্পর্কে তথ্য পাঠাতে শুরু করেন। গোয়েন্দা বিভাগ এই কথা জানার পর থেকেই তাঁর উপর নজর রাখতে শুরু করে। আর তাতেই জানা যায়, বিচিত্র বেহরার ইউনিটেরই আরেক জওয়ান ল্যান্সনায়েক রবি বর্মা-ও ওই সীরাত নামের অ্য়াকাউন্টটিতে ঘন্টার পর ঘন্টা চ্যাট করেন। তিনিও ফাঁদে পা দিয়ে তথ্য সরবরাহ করছিলেন।
এদিন তাঁদের দুইজনকে গ্রেফতার করে জয়পুর কোর্টে তোলা হয়। আদালত তাদের ৫ দিনের জন্য রাজস্থান ইন্টেলিজেন্স পুলিশের হেফাজতে পাঠিয়েছে।