দুর্গা পুজোয় ২০০ টাকা চাঁদা না দেওয়ার 'শাস্তি', ২ সপ্তাহ ধরে সামাজিক বয়কট ১৪টি আদিবাসী পরিবারকে

  • মহামারির কারণে কাজ নেই
  • আর্থিক সংকট তীব্র সংসারে 
  • তাই ২০০ টাকা চাঁদা দিতে পারেনি 
  • ১৪ গোন্ড পরিবারকে সামাজিক বয়কট 

 ওঁদের একটাই 'অপরাধ', দেবী আরাধনার জন্য ওঁরা মাত্র ২০০ টাকা করে চাঁদা দিতে পারেননি। আর সেই কারণেই সমাজের মাথারা ওঁদের শাস্তি দিয়েছেন। রেশন থেকে শুরু করে কাজও পাচ্ছেন না ওঁরা। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার পর ওঁরা স্থানীয় জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। টাকা দুসপ্তাহ ধরে তাঁদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়েছিল বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হয়েছে। 

চরম নক্কারজনক এই ঘটনার সাক্ষী থাকলের মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট জেলা। প্রায় ১৪টি গোন্ড পরিবারকে স্থানীয়রা টানা দুসপ্তাহের জন্য সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়েছিল বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ জানিয়েছেন সমস্যায় জর্জরিত আদিবাসী পরিবারগুলি। সমস্যায় পড়া আদিবাসী পরিবারের সদস্যদের কথায়, করোনা মহামারির কারণে তাঁরা এমনিতেই আর্থিক সমস্যায় পড়ছে। আর সেই কারণে তাঁরা ২০০ টাকার পরিবর্তে মাত্র একশো টাকা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি পুজো কমিটি। আর সেই কারণেই তাঁদের সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়েছিল। তবে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার পরেই পুরো বিষয়টি সামাধান হয় বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলি। 

Latest Videos

করোনাভাইরাসের টিকার দাম ১ হাজার টাকা, অক্সফোর্ডের প্রতিষেধক নিয়ে একগুচ্ছ তথ্য দিলেন সেরাম কর্তা ...

ভূটানের উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাবে ভারত, রুপে কার্ড উদ্বোধন করে বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

ঘটনার সূত্রপাত গত ১৪ই অক্টোবর। বালাঘাটের লামতা গ্রামে স্থানীয় দুর্গাপুজো কমিটি একটি সভা করে। আর সেই সভাতেই ঘোষণা করা হয় গ্রামের সমস্ত পরিবারকে দুর্গাপুজোর জন্য ২০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হবে। কিন্তু সেই সভাতেই ৪০টি গোন্ড পরিবার জনিয়েছিল লকডাউনের কারণে তাঁরা কাজ হারিয়েছেন। বর্তমান সময়ে তীব্র আর্থকষ্ট রয়েছেন। তাঁদের চাঁদা পরিমাণ কমানোর আবেদন জানিয়েছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন তাঁরা অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যান। কিন্তু লকডাউনের জন্য তাঁদের এখন কাজ নেই। তাই তাঁরা ২০০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে পারবেন না বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাজি হয়নি পুজো কমিটি। 

সামাজিক চাপে পড়ে ২৬টি পরিবারই তাঁদের জমা পুঁজি বিক্রি করে দেবী আরাধনার টাকা যুগিয়েছিলেন। কিন্তু ১৪টি পরিবার তা না পেরে ১০০ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখান করা হয়। সেই সঙ্গে তাঁদের ওপর জারি করা হয় সামাজিক বয়কট। তারপর থেকেই তাদের চাল-ডালের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবেশীরা যাতে তাদের পরিবারগুলির সঙ্গে প্রতিবেশীরা যাতে কোনও সম্পর্ক না রাখে সেদিকেও সচেতন করা হয়েছিল। মহামারির এই সময় পরিবারগুলি যাতে কোনও রকম চিকিৎসা না পায় সেদিকেও খেয়াল রেখেছিল গ্রামের মাতব্বররা। চিকিৎসকেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। 

গত ৩ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত সামাজিক বয়কটের কারণে চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছিল ১৪টি আদিবাসী পরিবারকে। অবশেষে বাধ্যই তারা জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়। জেলা শাসক দীপ আর্জ জানিয়েছেন তাঁরা ভুক্তভোগী পরিবারের গুলির সমস্ত অভিযোগ শুনেছেন। গ্রামেও গিয়েছিলেন। যারা তাদের সামাজিক বয়কটের বিধান দিয়েছিল তাদের সতর্ক করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অভিযুক্তগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও পিছুপা হবে না প্রশাসন- তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 


 

Share this article
click me!

Latest Videos

'আমি মারা গেলে আমার যেন স্ট্যাচু না হয়' দলের উদ্দেশ্যে বার্তা মমতার
হঠাৎ করে TMC নেতারা পুলিশের বিরুদ্ধে কেন? কী উদ্দেশ্যে? প্রশ্ন অগ্নিমিত্রার | Agnimitra Paul
'বালি চুরি, কয়লা চুরিতে যুক্ত পুলিশদের একাংশ' বিস্ফোরক মন্তব্য মমতার | Mamata Banerjee
Live: মথুরাপুরে সদস্যতা অভিযান অগ্নিমিত্রা পালের, দেখুন সরাসরি
Bangla News : সুকান্তকে বাধা, বেলডাঙা নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি | Asianet News Bangla