মঞ্চে ভাষণ দেওয়ার সময় সব স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম ও বাসস্থান উল্লেখ করছিলেন মোদী। ঠিক সেই সম্য় মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের বলে ফেলেন তিনি। আর তাঁর এই ভুলকে হাতিয়ার করে আসরে নেমে পড়ে তৃণমূল।
স্বাধীনতা সংগ্রামী মাতঙ্গিনী হাজরা অসমের! আজ ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে লালকেল্লায় ভাষণ দেওয়ার সময় এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে চরম বিতর্ক শুরু হয়েছে। এনিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়ে গিয়েছে।
মঞ্চে ভাষণ দেওয়ার সময় সব স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম ও বাসস্থান উল্লেখ করছিলেন মোদী। ঠিক সেই সম্য় মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের বলে ফেলেন তিনি। আর তাঁর এই ভুলকে হাতিয়ার করে আসরে নেমে পড়ে তৃণমূল। তাঁর এই ভুলকে বাংলার অপমান বলে দাবি করেছে ঘাসফুল শিবির। যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সাফাই, "এই ধরনের ছোট ভুল হতেই পারে।" তবে সাফাইয়ের পরও থামছে না বিতর্ক।
এ প্রসঙ্গে টুইটারে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লেখেন, "মাতঙ্গিনী হাজরা অসমের? প্রধানমন্ত্রী কি পাগল হলেন? নিজে জানেন না। আবেগ নেই। অন্যের লিখে দেওয়া ভাষণ পড়ে নাটক করতে গেলে এই হয়। এটা বাংলার প্রতি অপমান। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমা চান। ওঁদের পূর্ব মেদিনীপুরের গদ্দারও ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিন।"
আরও পড়ুন- স্বাধীনতা দিবসে ত্রিপুরায় ফের আক্রান্ত TMC, দোলা সেনের গাড়িতে হামলা, ধিক্কার কুণালের
এই ভুলকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের দোষ বলে দেখেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, "এটা মোদীর দোষ নয়। কারণ তাঁরা আরএসএসের থেকে শিক্ষা পান। তাতে ভারতের সংস্কৃতি জানা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। কারণ তাঁরা তো একটাই জিনিস জানেন, তা হল সাম্প্রদায়িক বিভাজন। আর বাংলা সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণাই নেই।"
আরও পড়ুন- জঙ্গির বাবা তুললেন জাতীয় পতাকা, বড় পরিবর্তন জম্মু-কাশ্মীরে
তবে যেখানে প্রধানমন্ত্রীর ভুল নিয়ে আসরে নেমে পড়েছে তৃণমূল, সেখানে এই ভুলকে 'ছোট' বলে দাবি করেছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর সাফাই, "এটা ছোটখাটো ভুল। ভারতবর্ষে হাজার হাজার এ রকম মহাপুরুষ এসেছেন। তাঁরা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। কোনও কারণে ছোটখাটো ভুল হতেই পারে। তাই এটাকে বড় করে দেখা কোনও দরকার নেই। এনিয়ে যাঁরা এত কষ্ট পাচ্ছেন তাঁরা মাতঙ্গিনী হাজরার জন্য কী করেছেন।"
আরও পড়ুন- অদম্য সাহস ও দক্ষ নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা, শৌর্য চক্র সম্মানে সম্মানিত ক্যাপ্টেন শচীন
প্রসঙ্গত, মাতঙ্গিনী হাজরার বাড়ি মেদিনীপুরের হোগলা গ্রামে। তাঁর স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে পুরোটাই জুড়ে ছিল মেদিনীপুর। ১৯৪২-তে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়ে শহিদ হন তিনি। তমলুকের 'গান্ধী বুড়ি' নামেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে অসমের কোনওরকম যোগাযোগ ছিল না বলে জানিয়েছেন ইতিহাসবিদরা।