লকডাউনকে দায়ি করে আত্মহত্যা করেন শ্রমিক, দুই সরকারকে তুলোধনা প্রিয়াঙ্কার

লকডাউনে কাজ হারিয়েছিলেন ভানুপ্রকাশ
হাতে পয়সা না থাকায় আত্মহত্যা করেন তিনি
পুরো ঘটনার তদন্তে নেমেছে যোগী সরকার
রাজনীতির ময়দা আবারও সরব প্রিয়াঙ্কা গান্ধী 
 

Asianet News Bangla | Published : May 30, 2020 8:34 AM IST

৫০ বছরের ভানুপ্রকাশ গুপ্ত শেষ করে দিলেন নিজের জীবন। উত্তর প্রদেশের লক্ষ্মীপুর খেরি স্টেশন সংলগ্ন রেল লাইনে উদ্ধার হয়েছে তাঁর নিথর দেহ। চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক অনুমান। একই সঙ্গে পুলিশ হাতে পেয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। যেখানে লকডাউনকেই আত্মহত্যার কারণ হিসেবে দায়ি করেছেন ভানুপ্রকাশ। করোনভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউনের পথেই হেঁটেছে ভারত। এই অবস্থায় প্রায় স্তব্ধ দেশের জনজীবন। 

জানা গেছে লকডাউনের প্রথম দিকেই কাজ হারিয়েছিলেন ভানুপ্রকাশ। উত্তর প্রদেশের শাহজাহানপুরের একটি হোটেলের কর্মী ছিলেন তিনি।  লকডাউনের হোটেল বন্ধ।  দুমাসেরও বেশি সময় ধরে চলা লকডাউনের তাঁর সমস্ত সঞ্চয় শেষ হয়ে গেছে। দীর্ঘ লকডাউনের ধকল সহ্য করার মত আর্থিক অবস্থা ছিল না। বাড়িতে রয়েছে বৃদ্ধ ও অসুস্থ মা, স্ত্রী ও চারটি ছেলেমেয়ে।  এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে পরিবারের বোঝা বইতে অক্ষম বছর পঞ্চাশের মানুষটি। তাই নিজের জীবনকে অকালেই শেষ করে দিয়েছেন বলেও লিখে গেছেন সুইসাইড নোটে। 

সুইসাইড নোটে ভানুপ্রকাশ বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন রেশন দোকান থেকে পাওয়া গম ও চাল রয়েছে তাঁর বাড়িতে। কিন্তু সংসার চালাতে তা পর্যাপ্ত নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি লিখেছেন নুন, চিনি আর দুধ কেনার মত নূন্যতম পয়সা তাঁর কাছে নেই। তিনি আরও লিখেগেছেন, বাড়িতে রয়েছে তাঁর বুড়ী মা। অসুস্থ মায়ের জন্য ওষুধ কেনার পয়সা নেই তাঁর কাছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি। তাই অক্ষমতার কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। 

পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন উত্তর প্রদেশ প্রশাসন। প্রথমিক তদন্তের পর জানা গেছে মৃত ভানুপ্রকাশের রেশন কার্ড  রয়েছে। তাই কোটার খাদ্য শস্য় তিনি পেয়েছেন। তাঁর বাড়িতে চালডাল বাড়ন্ত থাকার কথা নয়। তাই কী কারণে ভানুপ্রকাশ আত্মহত্যা করেছেন তা খতিয়ে দেখা হবে। 

এই ঘটনা উত্তর প্রদেশের যোগী সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরছে বলে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি যোগী ও মোদী সরকারকে রীতিমত তুলোধনা করে বলেন,  এই ঘটনা খুবই দুর্ভ্যাগ্যজনক। তাঁর মায়ের চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। সরকার রেশন দিলেও তাঁর হাতে আর কিছুই ছিল না, যা দিয়ে সরসার চালানো যায়। বর্ষপূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী যে চিঠি লিখেছেন কিন্তু এই ব্যক্তির চিঠি মোদীর কাছে পৌঁছায়নি। তবে ভানু প্রকাশের চিঠিটি প্রধানমন্ত্রীকে পড়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। 

Share this article
click me!