উত্তরাখণ্ড প্রাক-নির্বাচনী সমীক্ষা: বিজেপি সরকারের পক্ষে রাজ্যের ৪৫ শতাংশ মানুষ

উত্তরাখণ্ড বিধানসভা নির্বাচন ২০২২-এ টাফ টক্করের মুখে গেরুয়া শিবির। জন কি বাত জরিপ অনুযায়ী, ৪৫ শতাংশ ভোটার মনে করেন যে আজই নির্বাচন হলে বিজেপি আবার সরকার গঠন করতে পারে। 

Parna Sengupta | Published : Oct 4, 2021 4:38 PM IST

উত্তরাখণ্ডে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে বিজেপি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে অর্থাৎ উত্তরাখণ্ড বিধানসভা নির্বাচন ২০২২-এ টাফ টক্করের মুখে গেরুয়া শিবির। জন কি বাত সমীক্ষা অনুযায়ী(Uttarakhand Pre-Election Survey), ৪৫ শতাংশ ভোটার (45% of the people) মনে করেন যে আজই নির্বাচন হলে বিজেপি (BJP) আবার সরকার গঠন করতে পারে। রাজ্যের মানুষ বিশ্বাস করে যে আম আদমি পার্টির (AAP) উত্থান কংগ্রেসের ক্ষতি করবে। সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য বিজেপির সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ হরিশ রাওয়াত (Harish Rawat)। 

সমীক্ষা কবে থেকে করা হয়েছিল?

উত্তরাখণ্ডের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে জন কি বাত মানুষের মতামত জানতে চায়। সমীক্ষাটি ২০শে সেপ্টেম্বর থেকে ২৬শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত হয়েছিল। এই সমীক্ষায় মানুষকে অনেক প্রশ্ন করা হয়। 

১. আজ যদি নির্বাচন হয়, উত্তরাখণ্ডে কে জিতবে, কার সরকার গঠিত হবে?

জন কি বাত সমীক্ষা অনুযায়ী, ৪৫ শতাংশ বলেছেন উত্তরাখণ্ডে বিজেপি সরকার গঠন করবে, ৪৩ শতাংশ বলেছেন কংগ্রেস সরকার গঠন করবে, যখন ১২ শতাংশ বলেছে আম আদমি পার্টি সরকার গঠিত হবে।একই সময়ে, ১২ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন যে উত্তরাখণ্ডে নির্বাচনে ত্রিশঙ্কু ফলাফল আসতে পারে। 

২. বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কি প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া আছে?

সমীক্ষা অনুসারে, উত্তরাখণ্ডের ৪৫ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন যে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির বিরুদ্ধে সেই অর্থে বিরোধিতা নেই। যদিও ৩৬ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা রয়েছে। একই সময়ে, ১৯ শতাংশ বলেছেন যে তাঁদের কাছে এই বিষয়ে কোনও তথ্য নেই।

সমীক্ষায় বিশ্লেষণ করা হয়েছে যে, আম আদমি পার্টি এবং কংগ্রেস উত্তরাখণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, ৪৫ শতাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি। যদিও ৩৬ শতাংশ মানুষ বলেন যে পুষ্কর সিং ধামির বিরোধিতা রয়েছে এবং ১৯ শতাংশ কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি।  সমীক্ষা অনুসারে, ১৯ শতাংশ অনিশ্চিত ভোটাররা তাদের পক্ষে বা বিরোধী উভয় পথেই যেতে পারে। 

৩. বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কি প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা আছে?

সমীক্ষা অনুসারে, ৫৫ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন যে বিজেপির উত্তরাখণ্ড সরকারের বিরুদ্ধে কোনও বিরোধী ক্ষমতা নেই। যেখানে ৩২ শতাংশ বলেছেন যে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মত আছে। একই সময়ে, ১৩ শতাংশ বলেছেন যে তারা জানেন না এই বিষয়ে। সমীক্ষা অনুযায়ী, উত্তরাখণ্ডে তিনবার বিজেপি তার মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন করেছে, কিন্তু জনগণের ক্ষোভ সত্ত্বেও, মোদী ফ্যাক্টর প্রাধান্য পেয়েছে।

৪. বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে কি প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা আছে?

সমীক্ষা অনুসারে, বিজেপির ৬০ শতাংশ বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে।  মাত্র ২৮ শতাংশ একমত যে বিধায়কদের এলাকায় কোনও বিরুদ্ধ মত নেই। যেখানে ১২ শতাংশ মানুষ কোনো উত্তর দেয়নি। সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে এইবার টিকিট বন্টন বিজেপির জন্য খুব কঠিন সিদ্ধান্ত হবে, কারণ ৬০ শতাংশ বিধায়ককেই টার্গেট করা হয়েছে। 

৫. মুখ্যমন্ত্রী পদের সবচেয়ে প্রিয় মুখ কে?

রিপোর্ট অনুসারে, ৪০ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন যে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত সবচেয়ে প্রিয় মুখ। যেখানে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা পুষ্কর ধামিকে ২৫ শতাংশ মানুষ প্রিয় মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বিজেপির রাজ্যসভার সদস্য অনিল বালুনিকে মুখ্যমন্ত্রী পদের পছন্দের মুখ হিসেবে ১৯ শতাংশ  মনোনীত করে। একই সময়ে, আম আদমি পার্টির অজয় কোঠিয়ালকে মনোনীত করেছে ৭শতাংশ মানুষ। বাকি সাত শতাংশ কাউকেই বেছে নেয়নি

৬. বিধানসভা নির্বাচনে জনগণের সমস্যা কী?

সমীক্ষা অনুযায়ী, বেকারত্ব উত্তরাখণ্ডের সবচেয়ে বড় সমস্যা। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৪০ শতাংশ বলেছেন, বেকারত্ব একটি নির্বাচনী সমস্যা। যেখানে ২০ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন যে স্বাস্থ্য এবং পানীয় জল এখানে সবচেয়ে বড় নির্বাচনী সমস্যা হবে। ১৩ শতাংশ বলেছেন, শিক্ষা একটি বড় নির্বাচনী বিষয়, যখন ছয় শতাংশ কোভিড -১৯কে নির্বাচনী সমস্যা বলে এবং নয় শতাংশ মানুষ এবারের নির্বাচনী সমস্যা হিসেবে পরিকাঠামোকে তুলে ধরেছে। নয় শতাংশ মানুষ অন্যান্য সমস্যার কথা জানিয়েছেন।

৭. বিজেপির কী ক্ষতি হচ্ছে?

সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৬৪ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘন ঘন পরিবর্তনের কারণে উত্তরাখণ্ডে বিজেপির ক্ষতি হয়েছে। যেখানে ৩৬ শতাংশ বলেছেন যে উত্তরাখণ্ড ২০২২ নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তনের কারণে কোনও ক্ষতি হবে না।

৮. উত্তরাখণ্ড সরকার কি কোভিড -১৯য়ের মোকাবিলা করতে পেরেছে?

সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৫৩ শতাংশ মানুষ বলেছেন যে তারা করোনার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের লড়াইয়ে সন্তুষ্ট। যেখানে ৪৭ শতাংশ বলেছেন যে রাজ্য সরকার করোনার লড়াইয়ে ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে।

Share this article
click me!