দুষ্কৃতীদের সঙ্গে দারুণ সাহসের লড়াই, সাত বছরের মেয়ের বিক্রমে পালাল ডাকাত

সাত বছরের অবনীর সাহসিকতা ও চতুরতার কারণে বড় ঘটনা এড়ানো গেছে বলেও মনে করছে পুলিশ। ওই ছোট্ট মেয়েটি ঘর থেকে বের না হলে বাড়িও লুট করত দুষ্কৃতীরা বলে অনুমান। 

Parna Sengupta | Published : Apr 15, 2022 1:33 PM IST / Updated: Apr 15 2022, 07:10 PM IST

উত্তরপ্রদেশের আগ্রায় মা-মেয়ের সাহসের ভিডিও ভাইরাল। দুজনের প্রবল বিক্রমের কাছে পালাতে বাধ্য হল ডাকাতরা। বিএসএফ জওয়ানের স্ত্রী ও মেয়ের এই দুর্দান্ত সাহসিকতার ভিডিওতে দুষ্কৃতীদের লেজ গুটিয়ে পালাতে দেখা গিয়েছে। পুরো ঘটনাটি ধরা পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজে। ঘটনাটি বায়ু বিহার (শাহগঞ্জ) অবস্থিত ব্রিজ বিহার কলোনির।

প্রকাশ্যে দিবালোকে এক বিএসএফ জওয়ানের বাড়িতে ঢুকেছিল দুই দুষ্কৃতী। নিরস্ত্র বন্দুকধারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিএসএফ জওয়ানের স্ত্রী। বন্দুকের বাট দিয়ে মহিলার মাথা ভেঙে দেয় ওই দুষ্কৃতী। রক্ত পড়তে শুরু করে। মাকে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে লড়াই করতে দেখে সাহস দেখাল সাত বছরের মেয়েও। মেয়েটি সোজা বাড়ি থেকে দৌড়ে বেরিয়ে চিৎকার করতে শুরু করে। 

মেয়ের সাহস দেখে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তবে যাওয়ার সময় একটি পার্স নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে নগদ টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল।

কী ঘটেছিল

মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৪৯ মিনিট। বিএসএফ জওয়ানের স্ত্রী রেখা তার সাত বছরের মেয়ে অবনী এবং শ্রাব্যার সাথে থাকেন। শাশুড়ি ও শ্বশুর থাকেন কাসগঞ্জ গ্রামে। স্বামী উরভেশ কুমার বিএসএফে আছেন। মোতায়েন বিকানেরে। রেখা পুলিশকে জানিয়েছেন, মেয়ে অবনী এয়ারফোর্স স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। মঙ্গলবার ছিল অবনীর স্কুলের প্রথম দিন। শ্রাব্যাকেও সঙ্গে নিয়ে যায়। ফেরার সময় পথে একটি এটিএম থেকে পাঁচ হাজার টাকা তুলে নেন তিনি। এরপরেই বাড়ি ঢুকতে গিয়ে তিনি দেখেন তার পিছনেই একটি  স্কুটার এসে থামে। মেয়েরা ঘরের ভিতরে চলে গিয়েছে ততক্ষণে। স্কুটারটি থেকে দুই যুবক ঘরে ঢুকে পড়ে। এক যুবকের হাতে ছিল পিস্তল। তাদের মারধর শুরু করে।

'অপুরণীয় ক্ষতি হল চিকিৎসাক্ষেত্রে', চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তীর প্রয়ানে শোকবার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতার

সঙ্গীর এই ৭টি আচরণই বলে দেবে তিনি আপনাকে ভালোবাসেন, না পরকীয়ায় আসক্ত

'পুরানা পাকিস্তান', ইমরান বিরোধী বিক্ষোভ নিয়ে শেষপর্যন্ত মুখ খুললেন প্রাক্তন স্ত্রী জেমিমা

দুষ্কৃতীরা তাদের টেনে হিঁচড়ে রুমে নিয়ে যেতে থাকে। দুই পক্ষ থেকে শুরু হয় মারামারি। এদিকে মেয়ে অবনী দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। বাইরে পৌঁছেই সে চিৎকার করতে শুরু করে। দুষ্কৃতী দু’জনই ভয় পেয়ে যায়। বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় তারা। ততক্ষণে কলোনিতে বসবাসকারী লোকজন চলে এসেছে। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। 

সিসিটিভিতে ধরা পড়ল ঘটনা

লোহামন্ডির সিও অর্চনা সিং জানান, পার্সটি ছিনতাই করেছে দুষ্কৃতীরা। পার্সে রাখা ছিল পাঁচ হাজার টাকা নগদ, এটিএম কার্ড, আধার কার্ড ইত্যাদি। রেখার বাড়িতে পাঁচটি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। ঘটনাটি সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে। সেই ফুটেজের ভিত্তিতে দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এসওজিও জারি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান রেখার মুখে মারার ফলে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সারা মুখ রক্তে মাখামাখি অবস্থায় ছিল। মাকে এ অবস্থায় দেখে মেয়েরা কাঁদতে থাকে। অন্যদিকে, খবর পেয়ে রেখার শ্বশুরবাড়ির লোকজন চলে আসেন। পরিবারের লোকেরা জানান, রাতে ঘুমাতে পারেননি রেখা। তার মেয়েরা এখনো ভয় পাচ্ছে। 

সাত বছরের অবনীর সাহসিকতা ও চতুরতার কারণে বড় ঘটনা এড়ানো গেছে বলেও মনে করছে পুলিশ। ওই ছোট্ট মেয়েটি ঘর থেকে বের না হলে বাড়িও লুট করত দুষ্কৃতীরা বলে অনুমান। ছোট্ট অবনীর চিৎকারের জন্যই তারা সুযোগ পায়নি লুঠ করার। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দেখা গেছে, দু’মিনিট ঘটনাস্থলেই ছিল দুষ্কৃতীরা। 

Share this article
click me!