SIR: বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন হচ্ছে। পরের বছর এই রাজ্যে নির্বাচন। এই রাজ্যেও হতে পারে এই কর্মসূচি। তার আগেই জেনেন নিন নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেব কী কী নথি জমা দিতে হবে।
বিহারে হচ্ছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা Special Intensive Revision (SIR)। যা নিয়ে বিরোধীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বিরোধীরা যখন এই সমীক্ষার বিরোধিতা করছে তখন বিজেপি বলছে এটাই বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারীদের সাফাই অভিযান। দেশের একটি অংশের কথায় এটি নাগরিকত্ব যাচাই অভিযানের শুরু। কিন্তু কী এই SIR?
26
কি Special Intensive Revision (SIR)?
নির্দিষ্ট সময় অন্তর নির্বাচন কমিশন এই বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা করে। শেষবার এই সমীক্ষা হয়েছিল ২০০২ থেকে ২০০৪ সালে। বিহারে শেষবার এই সমীক্ষা হয়েছিল ২০০৩ সালে। ভুয়ো, মৃত বা অন্যত্র চলে যাওয়া ভোটারদের ঝাড়াইবাছাই করতেই এই সমীক্ষা করা হয়। ঝাড়াইবাছাই করার পরেই তৈরি হয় সংশোধিত ভোটার তালিকা।
36
বিহার নিয়ে সমস্যা কেন?
ভারতে একাধিকবার ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা সমীক্ষা হয়েছে। কিন্তু ধীরেসুস্থে হয়েছে। কিন্তু বিহারে নির্বাচন শুরুর আগে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। যার কারণে প্রতৃক অনেক ভোটার বাদ পড়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ বিরোধীদের। ইতিমধ্যেই বিহারের তালিকা থেকে ৫৬ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। তবে কমিশন বিহারের তালিকা প্রকাশ করবে ১ অগস্ট।
বিহারের ক্ষেত্রে ১১টি নথি চেয়েছেন নির্বাচন কমিশন। তাই অন্যান্য় রাজ্যেই একই নথি নির্বাচন কমিশন চাইবে বলেও মনে করা হচ্ছে। ১১টি নথি হলঃ
১। কেন্দ্র, রাজ্য সরকারের বর্তমান কর্মী বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মী হলে সেই পরিচয়পত্র।
২। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগের কোনও সরকারি নথি। ব্যাঙ্ক পোস্ট অফিস বা LIC নথি গ্রহণযোগ্য।
৩। জন্মের সংশাপত্র
৪। পাসপোর্ট
৫। সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থায়ী বসবাসকারীর সংশাপত্র।
৬। যে কোনও বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সংক্রান্ত শংসাপত্র। সেখানে জন্মের তারিখ উল্লখ থাকতে হবে।
৭। তফসিলি জাতি, উপজাতি, অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত হলে তার শংসাপত্র।
৮। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (NRC) তালিকায় নাম।
৯। রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশানের তৈরি করা পারিবারিক রেজিস্ট্রার।
১০। বনাঞ্চলের অধিকারের শংসাপত্র।
১১। সরকার প্রদত্ত জমি বা বাড়ির নথি। (দলিল পর্চা ইত্যাদি)
56
আধার, এপিক বা রেশন কার্ড অযোগ্য কেন?
SIR নিয়ে একগুচ্ছ মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ১০ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট কমিশনকে আধার, এপিক বা রেশন কার্ড নথি হিসেবে বিবেচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কমিশন জানিয়েছে ভোটার তালিকার জন্য এগুলি বিবেচ্য নয়। কমিশনের মতে আধার কার্ড পরিচয়পত্র মাত্র। নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণ নয়। ভোটার কার্ড ও রেশন কার্ডকেও তেমনই নথি হিসেবে মানতে নারাজ কমিশন।
66
কাদের নথি জমা দিতে হবে?
বিহারের হিসেব ধরলে ২০০৩ সালে যাদের নাম ভোটার তালিকায় ছিল তাদের নাম থাকবে। বাতিল হবে না। কিন্তু তারপরে হত ২২ বছর ধরে যে নাম ভোটার তালিকায় তোলা হয়েছে সেগুলির জন্য প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে। এই রাজ্য যদি SIR শুরু হয়, তাহলে ২০০২ সালকেই নির্ভুল হিসেবে ধরবে কমিশন। পরবর্তীতে যাদের নাম ভোটার তালিকায় উঠেছে তাদেরই প্রয়োজনীয় নথি জমি দিতে হবে।