কর্নাটকের উদুপি (Udupu, Karnataka) থেকে ভারত জুড়ে ছড়িয়েছে হিজাব বিতর্ক (Hijab Row)। হিজাব নিয়ে কী মত ছিল ইন্ডিয়ান মুসলিগ লিগের (Indian Muslim League) নেতা তথা পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ আলি জিন্নার (Muhammad Ali Jinnah)?
ভারত জুড়ে চলছে হিজাব বিতর্ক (Hijab Row)। যে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল কর্নাটকের উদুপিতে (Udupi, Karnataka)। তারপর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব-বোরখা পরার অনুমতি দেওয়া উচিত কি উচিত নয়, এই নিয়ে নানা মত-পাল্টা মত চলছে। হিজাব নিয়ে কী মত ছিল ইন্ডিয়ান মুসলিগ লিগের (Indian Muslim League) নেতা তথা পরবর্তীকালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম দেওয়া মহম্মদ আলি জিন্নার (Muhammad Ali Jinnah)? আদৌ কি তিনি এই পোশাকগুলিকে ভারতীয় পোশাক বলে মনে করতেন?
১৯৪৮ সালেই জিন্নার মৃত্যু হয়। তাই তাঁর নিজে মুখে মত জানাবার উপায় নেই। জীবদ্দশাতেও তিনি হিজাব বা বোরখা নিয়ে কোথাও তিনি কোনো মন্তব্য করেছেন বলে শোনা যায়নি। তবে, তাঁর সেই সময়ের একটি ছবি রয়েছে, যা এই বিষয়ে হাজার কথা বলার সমান। ১৯৪৬ সালে পাঞ্জাব নির্বাচনে আগে প্রথম মুসলিম লিগ প্রথমবার, ভারতীয় মুসলিমদের জন্য ভিন্ন রাষ্ট্রের দাবি তুলেছিল। এই সময়ে অল ইন্ডিয়া মুসলিম লিগের শিক্ষার্থী সংগঠন অল ইন্ডিয়া মুসলিম স্টুডেন্টস ফেডারেশনকে (All India Muslim Students Federation), শহরাঞ্চলে মুসলিম ভোট সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই সংগঠনে মেয়েরাও ছিল। সেই সময়ই জিন্নাকে মধ্যমণি করে সংগঠনের মেয়েরা ছবি তুলেছিলেন। সেই ছবিটিই হিজাব নিয়ে জিন্নার মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছিল বলে মনে করা হয়।
কী দেখা যাচ্ছে ছবিটিতে? মুসলিম স্টুডেন্টস ফেডারেশনের অন্তত জনা পঞ্চাশেক মহিলা সদস্যের সঙ্গে বসে আছেন মহম্মদ আলি জিন্না। তারা কেউ শাড়ি পরে আছে, কেউ সালোয়ার-কামিজ। কিন্তু, তাদের কারোর মুখ বোরখায় ঢাকা নয়, কিংবা কারোর মাথা হিজাবে ঢাকা নয়। অনেকেরই চুলে বেনি করা। কাজেই বোঝাই যাচ্ছে, মেয়েদের হিজাব বা বোরখা পরা ধর্মীয় কারণে বাধ্যতামূলক বলে মহম্মদ আলি জিন্না অন্তত বিশ্বাস করতেন না। আর ভারতীয় মুসলিম মেয়েদের পোশাক হিসাবেও হিজাব বা বোরখাকে মনে করতেন না পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা। এই মেয়েদের বেশিরভাগই ছিলেন উত্তর ভারতের বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং প্রগতিশীল মুসলিম জাতীয়তাবাদী পরিবারের সন্তান।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন ডট কম পোর্টালে, ২০১৪ সালের ৩১ জুলাই 'ভেরিয়াস শেডস অব গ্রিন: অ্যান ইডিওলজিকাল হিস্ট্রি অব দ্য মুসলিম লিগ' (Various shades of green: An ideological history of the Muslim League) নামে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। সেই নিবন্ধের সঙ্গেই জিন্না ও মুসলিম লিগের শিক্ষার্থী সংগঠনের মেয়েদের এই ছবিটি প্রকাশিত হয়েছিল। ছবির নিচের ক্যাপশনে লেখা ছিল, 'অল ইন্ডিয়া মুসলিম স্টুডেন্টস ফেডারেশনে'র মহিলা শাখার সদস্যদের সঙ্গে জিন্না। শাখাটিকে 'মুসলিম মহিলা গার্ড'ও বলা হত'।