বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান - এই তিন দেশে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়া সংখ্য়ালঘুদের আশ্রয় দেওয়ার জন্যই নরেন্দ্র মোদী সরকার নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী এনেছে। প্রায় প্রতিটি বিষয়েই মোদী সরকারের সঙ্গে দ্বিমত হলেও, ভারতের বাইরে নির্যাতিত হিন্দুদের প্রতি সহানুভূতির প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সরকারে সঙ্গে একমত হলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তাঁর মতে এই নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের কথা সরকারের অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত।
বেঙ্গালুরুতে ইনফোসিস সায়েন্স ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইনফোসিস প্রাইজ ২০১৯-এ যোগ দিয়েছিলেন এই নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ। সেখানেই বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করেন তিনি। ভারতের বাইরে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়া সংখ্যালঘুদের আশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নে মোদী সরকারের সহ্গে একমত হলেও তিনি ওই অনুষ্ঠানে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ ২০১৯-কে সরাসরি অসাংবিধানিক বলে অভিহিত করেছেন।
তাঁর মতে এই আইনকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দিয়ে বাতিল করা উচিত সুপ্রিম কোর্টের। কারণ নাগরিকত্বের মৌলিক মানবাধিকারে ধর্মীয় ভেদাভেদ টানা যায় না। নোবেলজয়ীর মতে, নাগরিকত্বের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত কোনও ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং সেই ব্যক্তি তারপর কোথায় ছিলেন, সেটুকুই।
তিনি আরও বলেন, এই সংশোধিত আইনটি সংবিধানের ধারা লঙ্ঘন করেছে। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব সংবিধান প্রণেতাদের পরিষদের আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে 'এই জাতীয় বৈষম্যের উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার করা গ্রহণযোগ্য নয়।' কাজেই তাঁর মতে নাগরিকত্বের জন্য বিবেচনার ক্ষেত্রে ধর্ম থেকে স্বতন্ত্র থাকতে হবে, তবে নির্যাতন এবং অন্যান্য আরও বেশ কিছু বিষয় বিবেচ্য হবে।