রবিবার দিনের আলোতে গ্রামের বাড়ি থেকে ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মৃত্যু হয়েছে পঞ্জাবের জনপ্রিয় গায়ক তথা কংগ্রেস নেতা সিধু মুসে ওয়ালার। তার গাড়ি তিনদিক থেকে ঘিরে ধরেছিল দুষ্কৃতীরা পর পর প্রায় ত্রিশ রাউন্ড গুলি চালানো হয় সিধুর ওপর। প্রায় তিন ধরনের অস্ত্র থেকে গুলি চালানো হয় বলে পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে। ঘটনাস্থলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন সিধু।
অন্য দিনের মতো বুলেটপ্রুফ গাড়িটি না নিয়ে নিজের পছন্দের মাহিন্দ্রা থর গাড়িটি নিয়ে বেরিয়েছিলেন সিধু। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তিনি যখন পাঞ্জাবের মানসা গ্রাম থেকে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন সেই সময় রাস্তায় তিনদিক থেকে দুষ্কৃতীরা ঘিরে ধরে ক্রমাগত এলোপাথাড়ি গুলি করতে থাকে। প্রায় ৩০ রাউন্ড গুলি চালানো হয় সিধুর উপর। সঙ্গী চার গানম্যান এর মধ্যে তিন জনই গুরুতর ভাবে আহত হয়ে পড়েছিলেন। রবিবার সিধুর শরীরে প্রায় আটটি গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। যদিও সিধু কে মানসা সিভিল হাসপাতালে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, ডাক্তার জানিয়েছিলেন ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২৮ বছর বয়সী গায়কের।
নিজের একাধিক গানে হিংসা এবং বহু বিতর্ক সৃষ্টি করার কারণে বহুবার সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল ২৮ বছরের সিধুকে। আসুন সিধুর জীবন সম্পর্কিত পাঁচটি অজানা তথ্য জেনে নিই-
১. সিধুর জন্ম পাঞ্জাবের মুসা গ্রামে। তার মা গ্রামের প্রধান। পঞ্জাবে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশুনা শেষ করে ২০১৬ তে পরবর্তী পড়াশুনো শেষ করার জন্য কানাডা চলে গিয়েছিলেন সিধু। ২০১৭ তে তিনি নিজের প্রথম গান ' সো হাই ' তৈরি করেন।
২. নিজের গানে হিংসা এবং আগ্নেয়াস্ত্রকে প্রচার করার জন্য সিধু অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। ২০২০ তে তার একটি গানে আগ্নেয়াস্ত্র প্রচার করার জন্য ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং-এর পঞ্জাব সরকার তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করেছিল।
৩. ২০১৯ সালে করোনা মহামারির সময় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে সিধুকে এ কে ৪৭ রাইফেল নিয়ে ফায়ারিং করতে দেখা যায়। এই নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল।
৪. সিধু মুসেওয়ালা এই বছর পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। নভজ্যোত সিং সিধু, যিনি সিধুর কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সময় পাঞ্জাব কংগ্রেসের প্রধান ছিলেন, সিধুকে একজন যুব আইকন এবং একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব বলে অভিহিত করেছিলেন।
৫. চলতি বছরেই বিধানসভা ভোটে পাঞ্জাবের মানসা জেলা থেকে কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়েছিলেন সিধু। আপ প্রার্থীর কাছে প্রায় ৬৩ হাজার ভোটে হেরে যাওয়ার পর তিনি ভোটদাতাদেরকে নিজের গানে বিশ্বাস ঘাতক বলে অভিহিত করেছিলেন যা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল।
শনিবারই নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হয়েছিল সিধু-সহ আরও ৪২৪ জনের ভিভিআইপি-র। এই ভিভিআইপি-দের তালিকা আবার প্রকাশ্যে বেরও করে দেওয়া হয়েছিল। অনেকেই মনে করছেন এই তালিকাটা প্রকাশ্যে না আনলে সিধুর মৃত্যু হত না। সিধু বহুদিন ধরেই পঞ্জাবের মাফিয়াদের চক্ষুশূল।এর আগেও সিধুর উপরে প্রাণঘাতী হামলা হয়েছিল। কিন্তু কপাল জোরে সববার বেঁচে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন- পরপর গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন কংগ্রেস নেতা সিধু- ঘটনাস্থলেই মৃত্যু
আরও পড়ুন- কলকাতায় ফের উঠতি মডেলের দেহ উদ্ধার, পল্লবী-বিদিশা-মঞ্জুষার পর সরস্বতী দাসের রহস্যমৃত্যু
আরও পড়ুন- রাতদুপুরে পাণিহাটিতে বোমাবাজি, চার চাকা গাড়িতে করে তোলা তুলতে এসেছিল চোর বিশু