পশ্চিমবঙ্গে ও ঝাড়খণ্ডের মেয়েদের কাজের সুযোগ কম। তাই বাবা - মা ২১ বছর হওয়ার আগেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয়। কেন্দ্রীয় রিপোর্ট মানতে নারাজ লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ও সুদেষ্ণা রায়।
২১ বছরে পা দেওয়ার আগেই পশ্চমবঙ্গে আর ঝাড়খণ্ডের প্রায় অর্ধেক মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় । আর সেই কারণেই তারা খুব ভাল চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সমীক্ষা রিপোর্টে তেমনই দাবি করা হয়েছে। আর এই রিপোর্ট নিয়ে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে দুই রাজ্যে।
গত মাসের শেষের দিকে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে গবেষণায় দেখা গেছে পশ্চিমবঙ্গে আর ঝাড়খণ্ড হল দেশের দুটি রাজ্য যেখানে এখনও অর্ধেকের বেশি মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় মাত্র ২১ বছর বয়স হওয়ার আগেই। এই রাজ্যে ৫৪.৯ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় ২১এর পা দেওয়ার আগে। আর ঝাড়খণ্ডে এই সংখ্যাটা হল ৫৪.৬। তবে জাতীয় গড় কিন্তু দুই রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত। গোটা দেশে মাত্র ২৯.৫ শতাংশ মহিলারই ২১ বছর বয়স হওয়ার আগে বিয়ে হয়ে যায়।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, যেসব মহিা গ্রামীণ এসাকায় বাস করে তারা অনেক সমস্যার সম্মুখীন। উপযুক্ত কর্মসংস্থানের অভাব তাদের কর্মজীবনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আর সেই কারণে পিতামাতার কাছে বিয়ে দেওয়া ছাড়া আর অন্য কোনও বিকল্প থাকে না। ঝাড়খণ্ডে বাল্যবিবাহ বিরোধী প্রচারের অন্যতম পুরোধা ও কংগ্রেস বিধায়ক দীপিকা পাণ্ডে সিং তেমনটাই জানিয়েছেন। আদিবাসী হিন্দু, সংখ্যালঘু, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ধনী বা দরিদ্র সকল ক্ষেত্রেই মহিলাদের জন্য সমস্যা অনেকটা একই।
অন্যদিকে কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক সুকন্যা সর্বাধিকারীর দাবি, গ্রামীণ অঞ্চলে একজন যুবত মহিলার জন্য উপযুক্ত কাজের সুযোগ অনেকটাই সীমিত। আর সেই কারণে মেয়েকে বাড়িতে না বসিয়ে রেখে বাবা ও মা মেয়ের বিয়ের জন্য ব্যস্ত হয়ে যায়। গ্রামীণ মহিলারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হওয়ার জন্য বেশিদিন অপেক্ষার সময় পায় না। তিনি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, যেহেতু দুটি রাজ্য কাছাকাছি - তাই দুটি রাজ্যের সমস্যা একই।
তবে ঝাড়খণ্ডের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ডিন অলোক কে গুপ্তা জানিয়েছেন, এই রাজ্যগুলির একমুখী উন্নয়ন সম্পর্কে ভলিউম বলে। এটি প্রকাশ করে যে জনসংখ্যার এমন কিছু অংশ থাকতে হবে যারা এখনও রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সুবিধা থেকে দূরে রয়েছে।" নীতি প্রণয়ন ও বাাস্তবায়নের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক স্তরে ব্যর্থতা স্পষ্ট বলেও তিনি দাবি করেন।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, "আমি যা বলতে পারি তা হল আমি ব্যক্তিগতভাবে সমস্ত জেলা পরিদর্শন করেছি এবং আনার অভিজ্ঞতা এই রিপোর্টের সঙ্গে মেলে না।" মোটকথা তিনি রিপোর্ট মানতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, দু-চারটি জেলায় মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু সরকার তা আটকাতে একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে। এই রাজ্যে কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য মহিলারা অনেক সুবিধে পেয়ছে বলেও তিনি দাবি করেন।
একই কথা বলেছেন সুদেষ্ণা রায়। ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস এর চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় বলেছেন যে ১৮ বছরের বেশি বয়সী কোনও মহিলা যদি বিবাহিত হন তবে এটি তার নিজের স্বাধীন সিদ্ধান্ত কারণ তিনি ইতিমধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছেন। "পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে, মহিলারা আরও বেশি স্বাধীন এবং তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা যায় না," এমনটাই জানিয়েছেন সুদেষ্ণা রায়।
আপনার দিন সুরু হোক এই জুসগুলি দিয়ে, জানুন ৫টি জুসের উপকারিতা
'বিনামূল্য খাদ্যশস্য় নয় বরং ৫০০ টাকার গ্যাস সিলিন্ডার দিন', মোদীকে নিশানা প্রশান্ত কিশোরের
মহিলাকে ঝোপের আড়ালে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ ১০ জনের বিরুদ্ধে, আক্রান্ত প্রেমিকও