স্বীকার করে নিলেন শিম্পাঞ্জির সঙ্গে তাঁর প্রেম চলছে। বেলজিয়ান মহিলার প্রবেশই নিষিদ্ধ করল অ্যান্টওয়ার্প চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
আমাদের মধ্য়ে অনেকেই পশুপ্রেমী, বস্তুত পশুদের শিশুর মতো আচরণ কার না বালো লাগে। কিন্তু, তাই বলে কেউ যদি সত্যি সত্যি কোনও পশুর প্রেমে পাগল হয়ে যান, তখন সমস্যা দেখা দেয় বৈকি। অবিশ্বাস্য হলেও ঠিক এমনটাই ঘটেছে বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্প শহরে। সেখানকার চিড়িয়াখানা এক শিম্পাঞ্জির প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন স্থানীয় এক মহিলা। আর সেই শিম্পাঞ্জিও নাকি মনিষ্যির প্রেমে কাবু। অবস্থা এমনই দাঁড়ায়, যে শেষ পর্যন্ত চিড়িয়াখানায় ওই মহিলার প্রবেশই নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন অ্যান্টওয়ার্প চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা। এতে শিম্পাঞ্জির প্রেমিকা ভয়ঙ্কর চটে গেলেও, কর্মকর্তারা বলছেন পশুটির ভালোর কথা ভেবেই তারা এই ব্যতিক্রমী ভালোবাসার পথে কাঁটা হয়ে উঠেছেন।
বেলজিয়ান সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই মহিলার নাম এডি টিমারম্যানস। অ্যান্টওয়ার্প চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা লক্ষ্য করেছিলেন, এডি চিড়িয়াখানার একটি নির্দিষ্ট শিম্পাঞ্জির সঙ্গে একটু মাত্রাতিরিক্ত সময় কাটাচ্ছেন। মাত্রাতিরিক্ত মানে ঠিক কতটা? চিড়িয়াখানার কর্তারা জানিয়েছেন, গত চার বছর ধরে তিনি প্রতি সপ্তাহে চিড়িয়াখানায় আসতেন। আর সারাদিন কাটাতেন শিম্পাঞ্জিদের কাচঘেরা ঘরের সামনে।
প্রথমে চিড়িয়াখানার কর্তারা ভেবেছিলেন এডি বোধহয় শিম্পাঞ্জি প্রেমী। অনেকেরই কোনও বিশে, প্রজাতির পশুর প্রতি বেশি টান থাকে। কিন্তু, পরে তাঁরা দেখেছিলেন, এডি এসে চিতা নামে একটি ৩৮ বছর বয়সী পুরুষ শিম্পাঞ্জির সঙ্গেই সময় কাটায়। তার সঙ্গে কথা বলে। কাচের দেওয়ালের দুপাশ থেকে তারা একে অপরের দিকে হাত নাড়ে। এমনকী, একে অপরের দিকে চুম্বনও ছুঁড়ে দেয়। চিড়িয়াখানা কর্তারা তাঁকে জেরা করেছিল। যার জবাবে তিনি স্বীকার করেন যে চিতাকে তিনি ভালোবাসেন।
এরপরই, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, এই ক্রমবর্ধমান বন্ধুত্বের বিরুদ্ধে কিছু একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। অ্যান্টওয়ার্প চিড়িয়াখানায় এডির প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। এডি টিমারম্যানস এতে খুবই রেগে গিয়েছেন, এবং আহতও হয়েছেন। বেলজিয়ান সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন,'আমি ওই প্রাণীটিকে ভালোবাসি এবং সেও আমাকে ভালবাসে। আমি অন্য কিছু চাইনি। কেন ওরা সেটুকু কেড়ে নিতে চাইছে? আমি বলব, আমাদের মধ্যে শুধু একটা সম্পর্ক আছে।' চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দিকে তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, অন্যান্য দর্শকরা চিতার কাছে যেতে পারলে, তাকে কেন যেতে দেওয়া হবে না?
আরও পড়ুন - Viral News - প্রসবের দুদিন পরই ব্যথা, স্তন দিয়ে নয়, বগল দিয়ে দুধ বের হল মহিলার
আরও পড়ুন - এক রাতে গায়েব ২০ বছরের স্মৃতি, ৩৬-এর যুবক ঘুম থেকে উঠলেন ১৬-র কিশোর হয়ে
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এই ব্যতিক্রমী 'প্রেমের সম্পর্ক'এর কারণে চিতারই আখেরে ক্ষতি হচ্ছিল। মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে অন্যান্য শিম্পাঞ্জিদের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি হচ্ছিল। তাদের সঙ্গে সে মিশতে পারছিল না। চিতা যখন এডির সঙ্গে গল্পে ব্যস্ত থাকত, তখন অন্যান্য শিম্পাঞ্জিরা তাকে উপেক্ষা করত। আস্তে আস্তে তারা তাকে দলের অংশ বলে মনে করা বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে ভিসিটিং আওয়ারের বাইরেও চিতাকে একা একা বসে থাকতে হত। অথচ দলবদ্ধভাবে থাকাটা শিম্পাঞ্জিদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।