সংক্ষিপ্ত
প্রসবের মাত্র দিন দুই পরই ডান বগলে ব্যথা অনুভব করেছিলেন পর্তুগিজ মহিলা। ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখেছিলেন স্তন দিয়ে নয় তাঁর বগল দিয়েই বের হচ্ছে স্তন্যদুগ্ধ।
সন্তানের জন্ম দেওয়ার মাত্র দিন দুই পরই ডান বগলে ব্যথা অনুভব করেছিলেন এক পর্তুগিজ মহিলা। এরপরই ২৬ বছর বয়সী মহিলাটি লক্ষ্য করেছিলেন তাঁর বগল থেকে একটা সাদা স্রাব বের হচ্ছে। ডাক্তারদের কাছে গেলে, তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেন তাঁর ডান বগলে একটি গোলাকার মাংসপিণ্ডের মতো তৈরি হয়েছে। তাতে চাপ দিতেই বের হচ্ছে ওই সাদা স্রাব। পরীক্ষা করে ডাক্তাররা বুঝতে পারেন, সেটি আর কিছুই নয়, স্তন্যদুগ্ধ। কিন্তু তা স্তন দিয়ে না বের হয়ে বগল দিয়ে বের হচ্ছে কেন? দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন-এর সাম্প্রতিক সংস্করণে এই বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণাপত্র অনুযায়ী, এই অদ্ভূত ঘটনাটি ঘটেছে পর্তুগালের লিসবন শহরের 'ডি সান্তা মারিয়া' হাসপাতালে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, আসলে একটি বিরল রোগে আক্রান্ত ওই মহিলা, যার নাম 'পলিমাস্টিয়া'। এই রোগে আক্রান্তদের ভ্রূণ অবস্থায় স্তন গঠনের জন্য দায়ি কোষগুলি যে দাগ বরাবর থাকে, জন্মের পরও অনেক সময় কিছু কোষ সেই দাগ বরাবর থেকে যায়। আর সেখানে স্তনগ্রন্থির কলা বা টিস্যু বিকশিত হয়। এই বিষয়ে ১৯৯ সালে আরও একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, ছয় শতাংশ মহিলা এই ধরনের 'আনুষঙ্গিক' স্তন-কলা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। এঁদের মধ্যে কারোর ক্ষেত্রে এই অতিরিক্ত স্তনের টিস্যুগুলি শরীরে অন্য কোনও স্থানে একটি স্তনবৃন্ত বা অ্যারিওলা (স্তনবৃন্তের চারপাশে রঙ্গক এলাকা) তৈরি করে। অন্যান্য ক্ষেত্রে স্তনবৃন্ত বা অ্যারিওলা গঠিত না হলেও শুধুমাত্র স্তন টিস্যু উপস্থিত থাকে।
"
গবেষকরা জানিয়েছেন, ভ্রূণের বিকাশের সময় স্তন্যগ্রন্থি গঠনকারী কোষগুলি বগল থেকে শরীরের উভয় পাশে কুঁচকি পর্যন্ত একটি রেখা তৈরি করে। একে বলে 'ম্যামারি রিজ' বা 'মিল্ক লাইন'। সাধারণত ভ্রূণের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই রেখা অদৃশ্য হয়ে গিয়ে শুধুমাত্র স্তনের জায়গায় কোষগুলি থেকে যায়। কিন্তু, যখন তা ঘটে না তখনই পলিমাস্টিয়া অবস্থার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, জন্মের পরও শরীরে 'মিল্ক লাইন' থেকে যায় এবং শরীরের এই স্থানগুলিতে অতিরিক্ত স্তন কলা বা টিস্যু গঠন করে। এই আনুষঙ্গিক স্তন টিস্যু তৈরির সবথেকে সাধারণ অবস্থান হল বগল। গবেষণাপত্রটি অনুযায়ী, যদি অতিরিক্ত স্তনবৃন্ত বা অ্যারিওলা না থাকে কারোর পক্ষে গর্ভবতী না হওয়া শরীরে অতিরিক্ত স্তন-কলা আছে কি না তা বোঝা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন - ৪১ বছর ছিলেন জঙ্গলে - নারী-পুরুষের পার্থক্যই জানেন না, দেখুন 'বাস্তবের টারজান'কে
আরও পড়ুন - Viral News - পায়ুছিদ্র দিয়ে ঢোকালেন জ্যান্ত মাছ, চিনা টোটকায় কোষ্ঠকাঠিন্য সারল কি
আরও পড়ুন - SHOCKING - পুরুষাঙ্গের উত্থান ধরে রাখতে এমন কাজ করলেন, হাসপাতালে ডাকতে হল দমকল
এই অদ্ভূত পরিস্থতিতে স্বাভাবিকভাবেই ওই পর্তুগিজ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তবে ডাক্তাররা তাঁকে পুরো বিষয়টি জানিয়ে আশ্বস্ত করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা একেবারে স্বাভাবিক। চিন্তার কিছু নেই। তবে, স্তন ক্যান্সার পরীক্ষা করানোর সময়ে তাঁকে ওই অতিরিক্ত স্তন কলাগুলিকেও ক্যান্সারের জন্য পরীক্ষা করাতে হবে।
তবে, ওই মহিলা তাঁর সন্তানকে কীভাবে দুধ খাওয়াচ্ছেন, সেই বিষয়টি পরিষ্কার নয়। ১৯৯৯ সালের অপর গবেষণাপত্রটিতে উল্লেখ করা হয়েছিলল এক ১৮ বছর বয়সী মহিলার। বগল দিয়ে দুধ বের হলে তাঁর অত্যন্ত ব্যথা হত। তাই তিনি তাঁর বগলে থাকা স্তনের টিস্যু থেকে দুধ পাম্প করে বোতলে ভরে খাওয়াতেন। ২৬ বছরের পর্তুগীজ মহিলাটি তা করতে পারছেন কি না, তা গবেষণা পত্রে জানানো হয়নি।