মাটিতে মিশে গিয়েছে বাড়িঘর, শয়ে শয়ে দেহ পড়ে-একবেলার মধ্যে আফগানিস্তান যেন মৃত্যুপুরী

স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে এতটাই গরীব যে পাথর ও মাটি দিয়ে বাড়ি বানান। ফলে প্রবল কম্পনের মুখে সেই দুর্বল বাড়ি ভেঙে পড়তে বেশি সময় নেয়নি। ভূমিকম্পে মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে তালিবানের সুপ্রিম কমান্ডার হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদা।

Parna Sengupta | Published : Jun 22, 2022 12:50 PM IST

যতদূর চোখ যাচ্ছে শুধু নিথর দেহের সারি। বাড়িঘর মাটিতে মিশে। ভোরবেলার এক ভূমিকম্প শেষ করে দিয়েছে আফগানিস্তানে বেঁচে থাকার ছন্দ। জোরালো কম্পনে কার্যত মৃত্যুপুরী তালিবানের দেশ। ২০০২ সালের পর এই প্রথম এত বড় ও ভয়াবহ কম্পনের সাক্ষী থাকল দেশ। বিবিসি জানাচ্ছে ইতিমধ্যে এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। তালিবান প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। 

তবে যত বেলা গড়াচ্ছে, ধ্বংসের তান্ডবের ছবিটা স্পষ্ট হচ্ছে। মাটির বাড়িগুলো তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়তে বেশি সময় নেয়নি। তালেবান নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজাদা বলেছেন, শত শত ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। আফগানিস্তানে গত দুই দশকের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প। পাকতিকা প্রদেশের ইনফরমেশন হেড মহম্মদ আমিন হাজিফি বলেছেন, ১,০০০ মানুষ মারা গেছে এবং ১,৫০০ জন আহত হয়েছে।

মাটির নীচে আর কারা আটকে রয়েছেন, খুঁজে বেড়াচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.১।  এখন পর্যন্ত যা খবর তাতে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, আফগানিস্তানের পূর্বাংশে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আফগানিস্তানের খোস্ত শহরের ৪৪ কিমি দূরে ভূমিকম্পের কেন্দ্র বলে জানা গিয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি আরও জানিয়েছে দুর্গম ও পাহাড়ি এলাকায় ভূমিকম্পের কারণে রীতিমত ক্ষতিগ্রস্ত হটেছে। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত তেমনভাবে উদ্ধার কাজ শুরু হয়নি বলেও অভিযোগ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। 

আফগান সংবাদসংস্থা ও সংবাদপত্রে যে ছবি উঠে এসেছে, তাতে জল ও খাবারের হাহাকার চোখে পড়েছে। অনেক জায়গায় ওষুধপত্রও ঠিক মত নেই বা পৌঁছে দেওয়ায় অনীহা রয়েছে আফগান প্রশাসনের । তেমনই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কাবুলের এক বাসিন্দা বলেছেন, আফগানিস্থানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বড়সড় ক্ষতি হয়েছে। 

আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থাগুলি জানাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে এতটাই গরীব যে পাথর ও মাটি দিয়ে বাড়ি বানান। ফলে প্রবল কম্পনের মুখে সেই দুর্বল বাড়ি ভেঙে পড়তে বেশি সময় নেয়নি। ভূমিকম্পে মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে তালিবানের সুপ্রিম কমান্ডার হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদা। তবে বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, এহেন বিপুল মাত্রার বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার মতো ক্ষমতা নেই তালিবানের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ পাকতিতা প্রদেশ। সেখানে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার কাজ চলছে। তবে নিজেদের অসহায়তার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। যেহেতু তাদের লোকবল কম, তাই উদ্ধার কাজও ধীরগতিতে এগোচ্ছে, এতে প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন - চিন ও পাকিস্তানের হুমকির মোকাবিলা, ৯৬টি যুদ্ধ বিমান দেশে তৈরির সিদ্ধান্ত ভারতীয় বিমান বাহিনীর

আরও পড়ুন - মায়ের পেট কেটে বার করতে হল সন্তানের মুণ্ড, ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী থাকল পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশ

আরও পড়ুন - পাক মহিলা গোয়েন্দার হানিট্র্যাপে ভারতের প্রতিরক্ষা কর্মী, দেশের মিসাইল তথ্য পাকিস্তানের হাতে?

Share this article
click me!