আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের (volcanic eruption) পর সৃষ্ট সুনামিতে (Tsunami) ক্ষতিগ্রস্ত টোঙ্গা (Tonga)বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উদ্ধারকাজে সাহায্য করছে অস্ট্রেলিয়া (Australia) ও নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) প্রশাসন। তবে কোভিড (Covid)আবহে ত্রাণ পৌছানো নিয়ে উদ্বিগ্ন দ্বীপ দেশটি।
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের একটি জলমগ্ন আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের (volcanic eruption) পর সৃষ্ট সুনামিতে (Tsunami)ক্ষতিগ্রস্ত টোঙ্গা (Tsunami)বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে ঢাকা পড়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ দেশটি। টোঙ্গা প্রায় ৭ লক্ষ বর্গ কিমি জুড়ে বিস্তৃত থাকা ১৭০টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। টোঙ্গায় প্রায় ১ লক্ষ লোক বাস করে, তাদের বেশিরভাগই টঙ্গাটাপু দ্বীপে। সুনামি টোঙ্গার উপকূলগুলিতে আঘাত হানে এবং পুরো দ্বীপটির ফোন ও ইন্টারনেট লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সাগরতলের কেবিল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক যোগাযোগ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এই কেবিল ঠিক করতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লেগে যাবে বলে জানানো হয়েছে টোঙ্গার স্থানীয় প্রশাসনের তরফে। টোঙ্গার টেলিফোন নেটওয়ার্ক চালু হলেও তা পুরোপুরি এখনও ঠিক হয়নি। আগ্নেগিরির ছাইয়ের ফলে স্বাস্থ্য নিয়ে বড়সড় সংকট দেখা দিয়েছে। কারণ বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপটির পানীয় জলও দূষিত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে জরুরিভিত্তিতে কোন সহায়তা দরকার, তা ঠিক করতে বৈঠক করছে টোঙ্গার মন্ত্রিসভা।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে অস্ট্রেলিয়া (Australia) ও নিউ জিল্যান্ড (New Zealand)সরকার সেখানে পর্যবেক্ষণকারী বিমান পাঠিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক মন্ত্রী জেড সেসেলা জানিয়েছেন, শনিবারের অগ্নুৎপাত ও সুনামি থেকে টোঙ্গায় ব্যাপক কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি । কিন্তু উপকুলবর্তী এলাকাগুলির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়ও রাজধানী নুকু’য়ালোফা থেকে ২১ কিলোমিটার পশ্চিমে হিহিফো উপদ্বীপের হা’তাফু বিচ রিজোর্ট ‘পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে’ বলে জানা গিয়েছে। রিসর্টটির ব্যবস্থাপনায় থাকা পরিবারটি সুনামির হাত থেকে তাদের জীবন বাঁচাতে জঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নেন বলে জানান তারা। জেড সেসেলা আরও জানিয়েছেন, টোঙ্গায় একজন ব্রিটিশ নারী নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানা গেছে। ইংল্যান্ডের বাসিন্দা অ্যাঞ্জেলা গ্লভার সুনামির একটি ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে যান। তার স্বামী জেমস গ্লভার একটি গাছ ধরে কোনরকমে রক্ষা পেলেও তার স্ত্রী তাদের পোষা কুকুরগুলোসহ ভেসে যান। কয়েক দশকের মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতায় এবারের অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনাটি সবচেয়ে মারাত্মক।
ত্রাণ নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে টোঙ্গার বাসিন্দারা। কিন্তু কোভিড মুক্ত দ্বীপ দেশটিতে বাইরের লোকেরা যদি ত্রাণ নিয়ে যায় সেক্ষেত্রে কোভিড ছড়িয়ে পড়ার লএকটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। টোঙ্গায় পাঠানো সব ত্রাণ কোয়ারেন্টিন করতে হবে এবং কোনো বিদেশি কর্মীকে সম্ভবত বিমান থেকে নামার অনুমিত দেওয়া হবে না বলে জানা গিয়েছে। টোঙ্গার বাসিন্দারাও সুনামির ঢেউ সহ্য করে নিলেও কোভিডের ঢেউ সহ্য করতে নারাজ। অস্ট্রেলিয়া সরকার ও নিউজিল্য়ান্ড সরকারের তরফ থেকে এছাড়াও রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্টের পক্ষ থেকেও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। করোনার কারমে ত্রাণ নিয়ে জনগণকে ধৈর্য্য ধরার কথা বলেছে টোঙ্গা প্রশাসন।