
Bangladesh News: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পদে ঢুকে পড়ছে বিদেশিরা। বাংলাদেশ (Bangladsh) সেনা প্রধান সূত্রে থবর তেমনটাই। এই বিষয়ে সে দেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান বলেন, ''অন্তর্বর্তী সরকারে বিদেশিরা ঢুকেছে। ওই রাস্কেলরা দেশবিরোধী কাজকর্ম শুরু করেছে। আমি সেনাপ্রধান থাকতে সে কাজ করতে দেব না।''
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পদে কী করে ঢুকে পড়ছে বিদেশি লোকজন? সরকারের নানা পদ, মন্ত্রিত্ব এবং কমিশনের প্রধান হিসেবে কীভাবে দায়িত্ব পালন করছে? এই বিষয়ে কী বলছে বাংলাদেশের সংবিধান? বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন...
এই বিষয়ে বাংলাদেশের এক সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা থাকায় সমাজের প্রভাবশালী ও ধনীরা দ্বিতীয় কোনও দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারেন। আর এতে কোনও বিধিনিষেধ নেই সরকারের তরফে। বাংলাদেশি নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে জনপ্রিয় দেশ হল- আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের দেশগুলি। বর্তমানে ইউনূস সরকারের রোষে পড়ায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আইনজীবী আরও বলেন, ''বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী, দ্বিতীয় দেশের নাগরিকত্ব পেতে বাধা না-থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদ, নির্বাচন-প্রার্থী, সাংসদ, সচিব ও মন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে যে তাঁরা বসতে পারবেন না, সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।''
তিনি এও জানান, এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত আদালতে যে ক’টি অভিযোগ করা হয়েছে তার সবই নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে। কোনওটিতেই সংবিধানে বর্ণিত অবস্থান ভিন্ন অন্য কোনও ব্যাখ্যা করা হয়নি। উচ্চ আদালতে এই বিষয়ে পৃথক কোনও ব্যাখ্যা বা সিদ্ধান্তও নেই, যা এই আইনের ব্যতিক্রম তৈরি হবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের বিদেশ দফতর সূত্রে খবর, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, যিনি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় মন্ত্রিসভার নেতা, তিনি নিজেই বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন নাগরিকও। বছরের পর বছর তিনি মার্কিন পাসপোর্ট ব্যবহার করে আসছেন। প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার পরে তিনি বাংলাদেশি লাল (কূটনৈতিক) পাসপোর্ট নিয়েছেন, যার নম্বর ডি০০০১৭৭০৩। নতুন পাসপোর্ট নেওয়ার সময়ে পুরোনো পাসপোর্টের নম্বর উল্লেখ করার নিয়ম থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান মহম্মদ ইউনূস তা করেননি। পুরোনো বাংলাদেশি পাসপোর্টের মেয়াদ অনেক আগে শেষ হয়ে গেলেও নতুন বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেননি তিনি।
সূত্রের খবর, বাংলাদেশের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ নাগরিক। অর্থাৎ দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা নিয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে হবিগঞ্জের স্বাধীনতাবিরোধী নেতা সৈয়দ মুহিবুল হাসানের মেয়ে এই পরিবেশবাদী আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে তিনি নৌঘাঁটি করার জন্য আমেরিকার হাতে তুলে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
শুধু তাই নয়, অনেকে আবার রিজয়ানাকে সেন্ট মার্টিনের উপদেষ্টা বলে দাবি করেছেন। কারণ, বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের পরিবেশ সংস্কারে এই ৯ মাসে তাঁকে যৎসামান্য কাজই করতে দেখা গিয়েছে। ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ে তাঁর মাথাব্যথা দেখা যায়নি, রিজ়ওয়ানার যাবতীয় উদ্বেগ সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ নিয়ে।
ইতিমধ্যে সেন্ট মার্টিন যাতাযাতের সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে রাত কাটানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষকে সরকারি নির্দেশে মূল ভূখণ্ডে চলে আসতে হয়েছে। ফলে দ্বীপের কুকুর ও পাখির দল না-খেয়ে মরছে, এমন রিপোর্ট দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে।
এই বিষয়ে ঢাকার বিদেশ দফতর সূত্রের খবর, ইউনূস মন্ত্রিসভার বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট দফতরের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছাড়া একাধিক দেশের নাগরিক। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিক বাংলাদেশের পাশাপাশি সুইৎজারল্যান্ডেরও নাগরিক। তাঁকেও উপদেষ্টা বা ক্যাবিনেট পদমর্যাদায় নিয়োগ করেছেন ইউনূস। সব মিলিয়ে এখন দেখার বাংলাদেশের এই অন্তর্বর্তী সরকারের অচল অবস্থা নিয়ে সেনাবাহিনী কী পদক্ষেপ নেয়।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।