
ইসকন ঢাকায় তিন দিনব্যাপী জন্মাষ্টমী উদযাপন শুরু করেছে। ভক্তগণ ইসকন মন্দিরে কৃষ্ণ ও রাধার দর্শন করছেন। এই উৎসব বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। বাংলাদেশে পালাবদলের পর হিন্দু ধর্মের উৎসবের দিনগুলি রীতিমত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে স্থানীয় সংখ্যালঘুদের জন্য। হিন্দু ধর্ম পালন করার জন্য অনেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অত্যাচারিত হতে হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে এদিন ইসকনের মন্দিরে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে দেখে সেদেশের অনেক সংখ্যালঘুই স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক, চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, এএনআইকে বলেন, "... ভগবান কৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি... সারাদিন ধরে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে কীর্তন সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যায় অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে... আমাদের তিন দিনের কর্মসূচি রয়েছে এবং অনেক লোক এতে অংশগ্রহণ করবেন... সরকার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেছি... তারা নিশ্চিত করেছে যে এবার কিছু ঘটবে না..."
হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি উৎসবের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য তুলে ধরেন। "ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অবতারের জন্মবার্ষিকী, শুভ জন্মাষ্টমী, হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সমাজে সমতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সারা জীবন ন্যায়বিচার, মানবতা এবং শান্তির বাণী প্রচার করেছেন," ইউনূস বলেন। তিনি আরও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর জোর দিয়ে বলেন, "প্রাচীনকাল থেকেই এই দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে আসছে। আসুন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, বৈষম্যমুক্ত, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।"
ভক্তরা ঢাকার স্বামীবাগে ইসকনের কেন্দ্রীয় মন্দিরে ভিড় করছেন উৎসবের বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণ করার জন্য, যার মধ্যে রয়েছে পূজা, কীর্তন, উপাসনা, মহাভিষেক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কীর্তন মেলা এবং ধর্মীয় নাটক। মন্দিরে একটি মেলাও অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ভক্তরা মিষ্টি এবং উপহার কিনে এই উপলক্ষটি উদযাপন করেন।
উৎসবের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য সম্পর্কে মন্তব্য করে দাস ব্রহ্মচারী বলেন, "ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যারা ধার্মিক তাদের আশীর্বাদ করুন এবং যারা দুষ্ট তাদের মনোভাব পরিবর্তন করে তাদের ভালো মানুষে পরিণত করুন। আমি প্রার্থনা করি যে পৃথিবীতে যত মানুষ আছে, সবাই সুখী হোক। আমাদের স্নান কর্মসূচি আছে - কৃষ্ণকে জল দেওয়া, ধর্মীয় সভা, কীর্তন। অনেক লোক উপস্থিত থাকবেন।" তিনি অতীতের চ্যালেঞ্জগুলির কথাও স্মরণ করে বলেন, "মাঝে মাঝে বাংলাদেশে হিন্দু এবং হিন্দু মন্দিরের উপর হামলা হয়েছে। আমরা ভুক্তভোগী পরিবারগুলিকে সাহায্য করেছি। আমরা গ্রামে গ্রামে, শহরে শহরে গিয়ে আশ্বাস দিচ্ছি। আমরা বাংলাদেশ ছাড়ব না। বাংলাদেশ আমাদের জন্মভূমি। আমরা হিন্দু সম্প্রদায়কে আশ্বাস দিচ্ছি।"