পরীক্ষা হলে টোকাটুকি, নকল নতুন ঘটনা নয়। প্রায়ই এই ঘটনা দেখা যায়। কিন্তু বাংলাদেশের চুয়াডাঙায় যে ঘটনা ঘটেছে তা শিক্ষক ও ছাত্র সমাজের পক্ষে লজ্জাজনক।
পরীক্ষা হলে সহপাঠীর খাতা দেখে লিখছিল এক পড়ুয়া। বাধা দেন শিক্ষক। তাতেই খেপে গিয়ে শিক্ষককে চড় মারে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়া। বাংলাদশের চুয়াডাঙার ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এই লজ্জাজনক ঘটনার ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ওই পড়ুয়ার কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব শিক্ষা মহল। ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররাও এই ঘটনায় সরব। মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা শিশু আদালতে আত্মসমর্পণ করে ওই ছাত্র। বুধবার চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুসরাত জেরিন নির্দেশ দেন, অভিযুক্ত পড়ুয়াকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) পাঠাতে হবে। ওই পড়ুয়ার পক্ষ থেকে জামিনের আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। ফলে আপাতত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রেই থাকছে ওই শিক্ষক। তবে তাকে কতদিন হেফাজতে রাখা হবে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সফিয়ার রহমান জানিয়েছেন, 'ওই পড়ুয়াকে এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদ্যালয়ের এসএসসি নির্বাচনী পরিচালনা কমিটি।'
চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা জানিয়েছেন, ‘ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরেই আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। ইতিমধ্যেই এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষা থেকে ওই পড়ুয়াকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা মঙ্গলবার এই ঘটনার নিন্দা করে মানববন্ধন করেন। তাঁরা অভিযুক্ত ছাত্রর কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। প্রাক্তন ছাত্ররা বলেছেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা এই ঘটনা মেনে নেব না। সামাজিকভাবে আমাদের পতন হয়েছে। এখান থেকে আমাদের উত্তরণ দরকার।’
গত রবিবার ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির হিসাব বিজ্ঞানের পরীক্ষা চলছিল। অভিযুক্ত পড়ুয়া অন্যদের খাতা দেখে লেখার চেষ্টা করছিল। সে অন্যদের বিরক্ত করছিল, পরীক্ষা হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল। তাকে বাধা দেন শিক্ষক। কিন্তু সে বারণ না শোনায় উত্তরপত্র কেড়ে নেন পরীক্ষার সময় কক্ষ পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকা হাফিজুর রহমান। এরপরেই শিক্ষককে চড় মেরে পালিয়ে যায় ওই পড়ুয়া। এরপর জেলা প্রশাসন ও সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রধান শিক্ষক। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই ছাত্রকে আর এই বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন-
Bangladesh Hilsa: বাংলাদেশের ইলিশে অরুচি? ক্রেতার অভাবে মাছবাজারে মাছি তাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা
আবার হিন্দু মন্দিরে তাণ্ডব! বাংলাদেশের টাঙ্গাইলে দুর্গা মূর্তি ভেঙে পুজো বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা