২০১৫ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান খালেদা জিয়ার ওপর হামলা এবং এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে ২০২৪ সালে হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রবিবার একের পর এক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলা শেখ হাসিনার বিদ্রোহীদের ওপর হামলা, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান খালেদা জিয়ার ওপর হামলা এবং এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে ২০২৪ সালে হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
এসবের সঙ্গে সঙ্গে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা বেড়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক শেখ হাসিনা এখন কোন কোন মামলার সম্মুখীন হচ্ছেন।
দুই কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রিজার্ভেশন বিরোধী বিক্ষোভে দুটি ভিন্ন কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এলাকায় হিংসায় দুই শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় হাসিনা-সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ১৯ জুলাই কবি নজরুল কলেজ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে আরও কয়েকশ শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিক্ষোভ করছিল ওই দুই শিক্ষার্থী। এরপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সমর্থকরা উভয় শিক্ষার্থীকে গুলি করে। এই বিষয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম টঙ্কুল ইসলামের আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। নিহতরা হলেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের ছাত্র ইকরাম হোসেন কায়সার ও শহীদ সোহাওয়ার্দী কলেজের ছাত্র ওমর ফারুক।
খালেদা জিয়ার ওপর হামলার মামলা-
২০১৫ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় শেখ হাসিনা-সহ ১১৩ জন জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নেতা বালাল হোসেন। এরা ছাড়াও আরও ৫০০-৭০০ অজ্ঞাত ব্যক্তিও এই হামলায় জড়িত ছিল। ঢাকার তেজগাঁও থানায় এর এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে একটি রিপোর্ট দায়ের করেন
গত ৪ আগস্ট বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালে ১৮ বছর বয়সী কলেজ ছাত্র নজিবুল সরকারের মৃত্যুর বিষয়ে একটি প্রতিবেদনও নথিভুক্ত করা হয়েছে। জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ছাত্রীর বাবা মজিদুল সরকার বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রাক্তন সড়ক পরিবহনমন্ত্রীসহ আরও ১২৮ জনের নাম এসেছে।
গণহত্যার অভিযোগে মামলাও হয়েছে
ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকার এক খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) সভাপতি বাবুল সরদার চাখারির পক্ষে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে একটি আবেদন করা হয়েছে। এই আবেদনে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে ইসলামী সংগঠন হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত সমাবেশে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার দাবি জানানো হয়।
হাসিনার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অনেক মামলা হয়েছে
এসব মামলার মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার সংখ্যা বেড়ে ১২টি হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ নয়টি হত্যা, একটি অপহরণ এবং দুটি গণহত্যার মামলা রয়েছে।
শেখ হাসিনা অভ্যুত্থানের পর দেশ ত্যাগ করেন
চলতি মাসের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর ভারতে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। এখন তিনি বাংলাদেশে হত্যা, অপহরণ ও জাতিগত নির্মূলের মামলার মুখোমুখি হচ্ছেন। বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর সহিংসতার ঘটনায় ২৩০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। একই সময়ে, সরকারী চাকরিতে বিতর্কিত সংরক্ষণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে প্রাণ হারিয়েছেন ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ।