ভারত বিরোধিতার বড় মূল্য চোকাতে হচ্ছে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলিকে। তাঁর গদিই এখন টলমল। দলের অন্দরেই এখন কোণঠাসা তিনি। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার বাঁচাতে এখন তাই মরিয়া হয়ে উঠেছেন ওলি । সূত্রের খবর, দেশে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করতে চাইছেন ওলি। এই নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি। করোনা পরিস্থিতির কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে দেশে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারির অনুমোদন চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওলির ছক আঁচ করেই সেই প্রস্তাব নাকোচ করে দেন রাষ্ট্রপতি বিডি ভান্ডারি। তিনি উল্টে ওলিকে বলেছেন স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি না করে নিজের দলের লোকেদের সঙ্গে বিবাদ মেটানোয় যেন উদ্যোগী হন।আর এই পরিস্থিতিতেই ফের দিল্লির সঙ্গে সংঘাত বাড়ানোর নতুন পথ তৈরি করলেন ওলি। নেপালে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হল।
নেপালের কেবল টিভি প্রভাইডার দেশে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সিগন্যাল বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে বৃহস্পতিবার থেকে দুরদর্শন ছাড়া পড়শি দেশটিতে দেখা যাবে না কোনও ভারতীয় নিউজ চ্যানেল।
নেপালের বা সম্প্রচারসেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির অভিযোগ, ভারতীয় নিউজ চ্যানেলগুলিতে তাঁদের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। চিনের সঙ্গে ওলির সম্পর্ক নিয়ে বিভ্রান্তিকর খবর পরিবেশন করছে ভারতীয় চ্যানেলগুলি। এদিকে, এদিনই নেপালের শাসকদল ‘নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি’র মুখপাত্র নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের নিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। তিনিও অভিযোগ জানিয়েছেন , উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রধানমন্ত্রী ওলির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে ভারতীয় মিডিয়ায়। যদিও ভারতীয় নিউজ চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের বিষয়ে নেপাল সরকারের তরফ থেকে কোনও নির্দেশ জারি হয়নি।
ভারত-চিন চরম সংঘাতের আবহে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির একের পর এক সিদ্ধান্তে দু-দেশের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়েছে। চিনের অঙ্গুলি হেলনেই যে অলি ভারত বিরোধিতায় নেমেছেন, সেই বিষয়টিও স্পষ্ট। যে কারণে শাসকদলের অন্দরেই এখন কোণঠাসা অবস্থা ওলির। তাঁর এই অতিরিক্ত চিন প্রীতি 'প্রচণ্ড'র মতো নেতারাও মানতে পারছেন না। যে কারণে ওলির কুরসিই নড়বড়ে। আর এই অবস্থায় ওলির কুর্সি বাঁচাতে ময়দানে নেমেছে চিন। সম্প্রতি, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারির সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেন চিনের রাষ্ট্রদূত হউ ইয়ানকি। শুধু তাই নয়, দেশের শাসকদল ‘নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি’র অন্যতম শীর্ষনেতা মাধব কুমার নেপাল-সহ একাধিক শীর্ষস্তরের আমলার সঙ্গেও আলোচনা চালিয়েছেন চিনা রাষ্ট্রদূত। নেপালের শাসকদলের মধ্যে কলহ মিটিয়ে ‘চিনপন্থী’ ওলিকেই আসনে রাখতে মরিয়া বেজিং। তাই মাধব নেপালের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন চিনা রাষ্ট্রদূত।