ভারতে হানা দিতেই বিশ্বজুড়ে একঘরে, দেউলিয়া ব্যাঙ্ক, ক্রমে ভেঙে পড়ছে চিনা অর্থনীতি


ভারতে হানা দেওয়ার পর থেকে একেবারে একঘরে

বিশ্বজুড়ে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকোচনে সামিল ছিল চিন-ও

এখন তাদের অর্থনীতি একেবারে ভেঙে পড়তে শুরু করেছে

দেউলিয়া হচ্ছে একের পর এক ব্যাঙ্ক

করোনাভাইরাস মহামারির প্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়েই অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকোচন দেখা যাচ্ছে। করোনাভাইরাস-এর কারণে চিনের প্রতি অবিশ্বাস জন্মেছিলই, ভারতে সাম্রাজ্যবাদী হানায় একেবারে একঘরে হয়ে পড়েছে বেজিং। আর তাতেই ক্রমে ভেঙে পড়ছে দৈত্যাকৃতি চিনা অর্থনীতি। দেউলিয়া হচ্ছে একের পর এক চিনা ব্যাঙ্ক ও নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থাগুলি।

জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহেই চিনের হেবেই এবং শানজি প্রদেশের স্থানীয় ব্যাঙ্কগুলি বিপুল পরিমাণে গ্রাহক আমানত প্রত্যাহারের জন্য ভিড় করেছিলেন। কিন্তু, তাদেরকে তাদের জমানো টাকা ফেরত দিতে পারেনি ব্যাঙ্কগুলি। চিনা অর্থনীতির পতন এবং এর আর্থিক ব্যবস্থার ভেঙে পড়ার আশঙ্কাতেই আমানতকারীরা এইভাবে একযোগে নিজেদের সঞ্চয় প্রত্যাহার করছেন বলে খবর। যদিও চিন কেন্দ্রীয় সরকার এবং উভয় প্রদেশের স্থানীয় সরকার একে 'গুজব' বলেই উড়িয়ে দিচ্ছে। প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের অনুরোধ করা হয়েছে 'অসমর্থিত গুজব'-এ কান দিয়ে তাঁরা যেন ব্যাঙ্ক থেকে নগদ অর্থ তুলে না নেন।

Latest Videos

আমানতকারীদের এই বব্যাপক নিরাপত্তাহীনতার কারণে বিশ্বের বৃহত্তম হিসাবে পরিচিত ৪০ ট্রিলিয়ন ডলারের বিশাল চিনা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা এখন দারুণ চাপের মধ্যে রয়েছে। আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে না পেরে হেবেই প্রদেশের বাওডিং নগরে বাওডিং ব্যাঙ্ক বলেছে, গ্রাহকদের গুজবে বিশ্বাস করা বা গুজব ছড়ানো উচিত নয়। যৌথভাবে সুস্থ আর্থিক ও সামাজিক ব্যবস্থা রক্ষা করা উচিত। শানসি প্রদেশের ইয়াংকুয়ান শহরের ইয়াংকুয়ান বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কও আমানতকারীদের জমানো টাকা ফেরত না দিতে পেরে একইরকম বিবৃতি দিয়েছে। এমনকী চিনা অর্থনীতির পতন ঘটছে কিংবা ব্যাঙ্কের আমানত পরিশোধে ব্যর্থতার কথা তুললেই নাগরিকদের স্থানীয় পুলিশ গ্রেফতারও করছে বলে শোনা যাচ্ছে।

 এই প্রাদেশিক ব্যাঙ্কগুলি ছাড়াও, ছায়া ব্যাঙ্ক অর্থাৎ নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থাগুলিও ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। চিনে এই শ্যাডো ব্যাঙ্কগুলির মিলিত ব্যবসার পরিমাণ ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিছু দিন আগেই চিনের অন্যতম বড় নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান সিচুয়ান ট্রাস্ট অর্থ প্রদানের সময়সীমা মিস করার জন্য বিনিয়োগকারীদের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছে। তারা জানিয়েছিল বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, নতুন করোনভাইরাস-এর প্রাদুর্ভাব এবং চিনা পণ্যের প্রকতি সন্দিগ্ধতার কারণেই এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।

তবে চিনের আর্থিক ব্যবস্থার অবনতি হঠাৎ ঘটছে না। কয়েক দশকের দুর্দান্ত দৌড়ের পর গত কয়েক বছরে যেন হাফ ধরেছে চিনা অর্থনীতিতে। একদিকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার গতি যেমন বাড়ছে তেমনই চিনা ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য আর্থিক সংস্থায় বাড়ছে ঋণ খেলাপি, নন পারফরমিং অ্যাসেট বা এনপিএ-র পরিমাণ। অনেকটা ভারতের মতোই। এরসঙ্গে করোনাভাইরাস মহামারির পরে চিনা আর্থিক ব্যবস্থায় অবিশ্বাস বৃদ্ধি পাওয়ায়, অনেক ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভারত, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিবদমান দেশগুলিতে চিনা পণ্য বর্জনের জন্য দাবি ও প্রবণতা বাড়ছে। হিমালয় এবং দক্ষিণ চিন সাগরে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির আগ্রাসনেরও মূল্য চোকাতে হচ্ছে চিনা সংস্থাগুলিকে। এই দেশগুলি ছিল চিনা  সংস্থাগুলির বৃহত্তম বাজার।

ভারতে যেমন আরবিআই পিএমসি ব্যাঙ্ক অধিগ্রহণ করেছে, তেমনই চিনেও গত বছর কেন্দ্রীয় সরকার অনেক প্রাদেশিক স্থানীয় ঋণদাতা সংস্থা ও ব্য়াঙ্ক অধিগ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। এর আগে যেমন আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ায় চিন সরকার ইনার মঙ্গোলিয়া প্রদেশের বাওশং ব্যাঙ্ক, জিনজু ব্যাঙ্ক এবং হেনফেং ব্যাঙ্ককে অধিগ্রহণ করেছিল। অনেক ক্ষেত্রে ভারতের মতোই চিনা শহর এবং গ্রামের ছোট ছোট ঋণদাতা সংস্থাদের একীকরণও করা হয়েছে।

গত কয়েকমাসে করোনভাইরাস মহামারি ও তা রুখতে জারি করা লকডাউন এবং চিনা পণ্য বয়কটের প্রবণতার কারণে, চিনের সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি কোটি কোটি ডলারের বাজার হারিয়েছে। অর্থাৎ এই সংস্থাগুলি ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না। ফলে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে অপরিশোধিত ঋণের পরিমাণ আরও বাড়বে, যা ব্যাঙ্কগুলির প্রতি আমানতকারীদের অবিশ্বাসও বাড়িয়ে দেবে। আর, আমানত প্রত্যাহার শুরু হলে যে নিম্মগামী অর্থনৈতিক ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে, তার ধাক্কা কিন্তু লাগবে গোটা পৃথিবীতেই।

 

Share this article
click me!

Latest Videos

Bangladesh-এ হিন্দুনেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার, মুক্তির দাবিতে Md Yunus-কে হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর
Live | India vs Australia : পারথে সাড়ে তিন দিনে টেস্ট জয়, বিদেশের মাটিতে ভারতের সেরা সাফল্য?
ওয়াকফ বিলের (Waqf Bill) আঁচ বাংলার বিধানসভায়, দেখুন কী বললেন Suvendu Adhikari
'ভোট ব্যাঙ্কের জন্য Mamata রোহিঙ্গাদের হিন্দুদের জমি দিচ্ছে' বিস্ফোরক অভিযোগ Agnimitra-র
হাড়োয়ায় তৃণমূল জিততেই বিজেপি প্রার্থীর জমি তচনচ, ক্ষোভ উগরে যা বললেন Samik Bhattacharya