চিনের (China) হেনান (Henan) প্রদেশের এক ডেলিভারি বয়ই বাঁচালেন আত্মঘাতী হতে যাওয়া এক ব্যক্তিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন তাঁর কাহিনি ভাইরাল হয়েছে ।
হলিউডি সিনেমা 'স্পাইডারম্যান ২'তে পিটার পার্কার ওরফে স্পাইডারম্যানকে দেখা গিয়েছিল বাড়ি বাড়ি পিৎজা ডেলিভারি করতে। এবার সেরকমই সুপারহিরো রূপে অবতীর্ণ হলেন, চিনের (China) হেনান (Henan) প্রদেশের এক ডেলিভারি বয়। জীবনের শেষ খাওয়া খেতে চেয়ে অর্ডার দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। সেই খাবার ডেলিভারি করতে এসে ওই ব্যক্তির প্রাণ বাঁচিয়েছেন ওই ডেলিভারি বয়। যার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় যে কোনও সুপারহিরোর সমান মর্যাদা পাচ্ছেন তিনি। স্থানীয় পুলিশও তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ভাইরাল হয়েছে তাঁর কাহিনি।
কী ঘটেছিল ঘটনাটা? জানা গিয়েছে চিনের হেনান প্রদেশের এক ব্যক্তি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। একটি অনলাইন খাবার সরবরাহকারী অ্যাপের মাধ্যমে, খাবার অর্ডার করেছিলেন তিনি। সঙ্গের নোটে লিখেছিলেন, 'আমার জীবনের শেষ খাবার'। সেই নোট দেখেই ডেলিভারি বয়ের মনে কু ডেকেছিল। দ্রুত খাবার সংগ্রহ করে তিনি ওই গ্রাহকের ঠিকানায় পৌঁছে যান। বেশ কয়েকবার বেল বাজিয়েও কারোর সাড়াশব্দ পাননি তিনি। তাতেই, ডেলিভারি বয়ের মনে পড়েছিল, খাবার অর্ডার দেওয়ার সময় গ্রাহকের সেই অদ্ভুত নোটটির কথা। তাঁর মনে হয়, ওই গ্রাহক সম্ভবত আত্মহত্যা করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্থানীয় পুলিশকে খবর দেন।
কিছুক্ষণের মধ্য়েই সেখানে এসে উপস্থিত হয়েছিল পুলিশ, দমকল বিভাগের কর্মীরাও। চিনা সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের ডাকাডাকিতে ওই ব্যক্তি জবাব দিলেও, তিনি তাঁর বাড়ির দরজা খুলতে অস্বীকার করেছিলেন। এমনকী, জানালা থেকে নিচে লাফ দেওয়ার হুমকিও দেন পুলিশ ও দমকল কর্মীদের। এরপর দীর্ঘক্ষণ তাঁর সঙ্গে কথা বলে, তাঁকে আত্মঘাতী হওয়ার ভাবনা থেকে নিরস্ত্র করে পুলিশ। এরপর ওই ব্যক্তি দরজা খুলে দিয়েছিলেন। জানা যায়, তাঁরা আসার আগেই তিনি ৬০ টি ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। এরপর, তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে, তাঁর পেট থেকে ওই ওষুধ বেক করে দেওয়া হয়।
পুলিশ এবং দমকল ওই ডেলিভারি বয়ের প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের দারুণ প্রশংসা করেছে। তারা বলেছে, ওই ডেলিভারি বয় যদি সময়মতো তাদের খবর না দিত, তাহলে ওই ব্যক্তির জীবন বাঁচানো অসম্ভব হতো। পুলিশ আরও জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতে গিয়ে তাঁর বাবা-মায়ের অনেক অর্থ খুইয়েছিলেন তিনি। সেই ব্যর্থতার হতাশা এবং অপরাধবোধ থেকেই তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এবং আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এখন অবশ্য মনস্তত্ববিদরা তাঁকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মনস্তত্ববিদরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির পাঠানো নোটটি থেকে স্পষ্ট যে, তিনি মরিয়া হলেও, অপর কোনও মানুষের সাহায্য চাইছিলেন। ডেলিভারি বয় তা বুঝতে পারাতেই তিনি ফের জীবনের পথে ফিরতে পেরেছেন।