করোনার ভ্যাকসিনের আশায় বসে গোটা বিশ্ব, অমৃত হয়ে উঠতে পারে কাঁকড়ার নীল রক্ত

  • অতিমারী থেকে রক্ষা পেতে ভ্যাকসিনের দিকে তাকিয়ে বিশ্ব
  • দিন-রাত এক করে গবেষকরা টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চালাচ্ছেন
  • এরমধ্যে কয়েকটি ভ্যাকসিন ট্রায়ালে সাফল্যও এসেছে
  • জানা গিয়েছে এই ভ্যাকসিনগুলিতে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঁকড়ার রক্ত

অতিমারী করোনা থেকে রক্ষা পেতে এখন ভ্যাকসিনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিশ্বের মানুষ। দিন-রাত এক করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরমধ্যে কয়েকটি ভ্যাকসিন ট্রায়ালে সাফল্যও পেয়েছে। যদিও  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়ে দিয়েছে খুব দ্রুত হলেও  চলতি বছরের শেষের আগে ভ্যাকসিন বাজারে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। 

জানা যাচ্ছে, বর্তমানে যে ভ্যাকসিনগুলোর পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে, সেগুলোতে ব্যবহার করা হচ্ছে এক ধরণের কাঁকড়ার রক্ত। যার নাম ‘হর্সশু ক্র্যাব’ বা 'নাল কাঁকড়া'। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম একটি প্রাণী হলো এই নাল কাঁকড়া।  ডাইনোসরের বিলুপ্তি হয়ে গেলেও বিশ্বে  নাল কাঁকড়া এখনও টিকে আছে। প্রাণী বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই নাল কাঁকড়ার পৃথিবীতে এসেছে আজ থেকে  প্রায় ৪৫ কোটি বছর আগে।

Latest Videos

আরও পড়ুন: করোনা নিয়ে এসেছে বিশ্বের গাড়ি শিল্পের বাজারে অভূতপূর্ব সংকট, সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখে ইউরোপ

এজন্য নাল কাঁকড়াকে অনেক সময় জীবন্ত জীবাশ্ম বলেও বর্ণনা করা হয়। কোনো টিকা নিরাপদ কিনা তা পরীক্ষার জন্য এই নাল কাঁকড়ার রক্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্যই মনে  করা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে গেলে এই ধরনের কাঁকড়ার চাহিদা বেড়ে যাবে বহুগুণ।

সেই ১৯৭০ এর দশক থেকে বিজ্ঞানীরা কাঁকড়ার নীল রক্ত সংগ্রহ করে আসছেন।  এটি মূলত ব্যবহার করা হয়, চিকিৎসা সরঞ্জাম হিসেবে। ধমনীর ভেতর সরাসরি ঢুকিয়ে দিতে হয়, এমন ওষুধ বিষ বা জীবাণুমুক্ত কিনা সেটা পরীক্ষার জন্যই নাল কাঁকড়া এত প্রয়োজনীয়।

আরও পড়ুন: আগামী বছরের আগে দেশে আসছে না ভ্যাকসিন, সংসদীয় কমিটিকে জানিয়ে দিলেন সরকারি আধিকারিকেরাই

মানুষের রক্তে আয়রন বা লোহার উপস্থিতি রয়েছে। এ জন্য রক্ত লাল দেখায়। আর ‘নাল কাঁকড়ায়’ রয়েছে তামা। ফলে এদের রঙ নীল দেখায়। তবে নাল কাঁকড়ার নীল রক্ত নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ নেই। বিজ্ঞানীদের আগ্রহ হচ্ছে- কাঁকড়ার রক্তে তামা ছাড়াও আছে একটি বিশেষ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, যেটি আসলে ব্যাকটেরিয়াকে আটকে ফেলতে পারে তার চারপাশে রক্ত জমাট বাঁধানোর মাধ্যমে। এছাড়া কাঁকড়ার রক্ত দিয়ে তৈরি করা হয় এক ধরনের প্রোটিন এজেন্ট বা জমাট বাঁধানোর রাসায়নিক।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য প্রতিবছর আটলান্টিক মহাসাগর থেকে প্রায় পাঁচ লাখ নাল কাঁকড়া ধরা হয়। বিশ্বের সবচাইতে দামি তরল পদার্থের একটি হচ্ছে এই ধরণের কাঁকড়ার রক্ত। মাত্র এক লিটার এই কাঁকড়ার রক্ত বিক্রি হয় ১৫ হাজার ডলারে। এই রক্ত সংগ্রহ করতে কাঁকড়ার হৃদযন্ত্রের কাছাকাছি ছিদ্র করা হয়। এরপর সেখানে দিয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ রক্ত সংগ্রহ করা হয়। রক্ত সংগ্রহ শেষে তা আবার আবাসস্থলে ছেড়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় অন্তত ১০ থেকে তিন শতাংশ কাঁকড়া মারা যায়। ফলে বিলুপ্তের পথ রয়েছে এই কাঁকড়া। এ জন্য বিজ্ঞানীরা বিকল্প ভাবছেন। তবে এই মুহূর্তে করোনা ভ্যাকসিনের জন্য নীল কাঁকড়া ছাড়া আর বিকল্প নেই। কারণ, কাঁকড়ার নীল রক্ত কভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরির মূল চাবিকাঠি। 

এই মুহূর্তে পৃথিবীজুড়ে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কাজ করছে বিজ্ঞানীদের দুশরো বেশি দল। কোনও কোনও ভ্যাকসিন এরই মধ্যে মানবদেহে প্রয়োগ করে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ‘দ্য নেচার কনজারভেন্সির’ গবেষক ড. বারবারা ব্রামার বলেন, ‘এখন ৩০টির বেশি কোম্পানি ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। এই কোম্পানিগুলোকে বহু ধরনের স্টেরাইলিটি টেস্ট চালাতে হয়। এজন্য কাঁকড়ার প্রয়োজন হয় ব্যাপক।’
 

Share this article
click me!

Latest Videos

'লুঙ্গিতে গিট বেঁধে আসুক, না হলে ওদের লুঙ্গিকে প্যারাসুট বানিয়ে ছেড়ে দেব' | Sukanta Majumdar Today
বিস্ফোরক অভিযোগ Agnimitra Paul-এর! Mamata-র বিরুদ্ধে RG Kar কাণ্ডের প্রমাণ লোপাটের সরাসরি তোপ
পুরো রুট বলেদিলেন! জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য এই বাংলা! শুভেন্দুর কথায় অশনি সংকেত | Suvendu Adhikari
Suvendu Adhikari: হিন্দুদের ভোটার আইকার্ড কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র, এ কী বলছেন শুভেন্দু
'Uttar Pradesh-এর মতো সুশাসন আনবো West Bengal-এ' Suvendu Adhikari- র চরম প্রতিশ্রুতি #shorts