করোনা নিয়ে এসেছে বিশ্বের গাড়ি শিল্পের বাজারে অভূতপূর্ব সংকট, সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখে ইউরোপ

বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ ও লকডাউন সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে গাড়ি শিল্পকে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে জার্মানির রাস্তায় নতুন গাড়ির সংখ্যা কমেছে ৩৫ শতাংশ। গত ৪৫ বছরে এই ঘটনা প্রথমবার ঘটল জার্মানির গাড়ি শিল্পে।

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে জার্মানির ম্যানুফ্যাকচারাররা যে সংকটের মধ্যে রয়েছে তা সাম্প্রতিক প্রকাশিত রিপোর্টেই স্পষ্ট। গাড়ি শিল্পের শক্তিশালী সংগঠন জার্মান অ্যাসোসিয়েশন অব দ্য অটোমেটিভ ইন্ডাস্ট্রি বা ভিডিএর প্রেসিডেন্ট হাইল্ডগার্ড মুয়েলার জানিয়েছেন, জার্মানি ও ইউরোপসহ পুরো বিশ্বের বাজারেই অভূতপূর্ব আকারে বিপর্যয় নেমে এসেছে। 

ভিডিএর প্রকাশিত রিপোর্টে  দেখা গেছে, জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে ইউরোপজুড়ে যাত্রীবাহী গাড়ির বাজার হ্রাস পেয়েছে ৪৩ শতাংশ। মার্কিন  যুক্তরাষ্ট্র ও চিনে বাজার সংকুচিত হয়েছে যথাক্রমে ২৩ ও ২৭ শতাংশ।

পরিসংখ্যান বলছে, কেবল জার্মানিতেই চলতি বছর এখনও পর্যন্ত  গাড়ি নির্মাণ কমেছে ৪০ শতাংশ, যা গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। চলতি বছরের প্রথমার্ধে জার্মানিতে গাড়ি নির্মাণ হয়েছে মাত্র ১৫ লাখ ইউনিট। একই সঙ্গে দেশটিতে গাড়ি রফতানিও কমেছে। গত ছয় মাসে জার্মানি থেকে  গাড়ি রফতানি হয়েছে মাত্র ১১ লাখ ইউনিট।

ইউরোপের অন্যতম দেশ জার্মানিতে গাড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ৮ লক্ষেপও বেশি মানুষ। তবে দেশটির গাড়ি শিল্পের কর্মসংস্থানে এখনো তেমন বড় কোনোও ধাক্কা আসেনি। এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই হয়েছেন। 

তবে সামগ্রিক চিত্রটা একেবারেই আশাব্যঞ্জক নয়। ভিডিএ পূর্বাভাস দিচ্ছে, ২০২০ সালে বিশ্বের গাড়িবাজার ১৭ শতাংশ সংকুচিত হবে। যার ফলে  গাড়ি নির্মাণের পরিমাণ দাঁড়াবে ৬ কোটি ৫৯ লাখ ইউনিট। সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ে পড়বে ইউরোপের গাড়িবাজার, যার গাড়ি নির্মাণ ২৪ শতাংশ কমবে। এর মধ্যে জার্মানির গাড়িবাজার ২৩ শতাংশ সংকুচিত হবে। তার তুলনায় অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের গাড়িবাজার সংকুচিত হবে যথাক্রমে ১৮ ও ১০ শতাংশ।