রাজা হোক বা প্রজা, অপরাধ করলে সবাইকে শাস্তি পেতেই হবে। স্প্যানিশ সরকারের এই ঘোষণাতেই এবার দেশ ছাড়তে হচ্ছে দেশের প্রাক্তন রাজা হুয়ান কার্লোসকে। ইতিমধ্যে ৮২ বছর বয়সী কার্লোস দেশ ছেড়ে যাবার সিদ্ধান্তটি এক চিঠির মাধ্যমে তার ছেলে ফিলিপেকে জানিয়েছেন। ছয় বছর আগে ছেলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন কার্লোস।
দুর্নীতির একটি অভিযোগের তদন্ত শুরু হওয়ায় স্পেনের সাবেক রাজা হুয়ান কার্লোস দেশ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সৌদি আরবে একটি দ্রুত গতির রেল প্রকল্প নির্মাণের চুক্তিতে হুয়ান কার্লোস-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। গত জুন মাসে এই বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেয় স্পেনের সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেই কার্লোস দেশ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। ইতিমধ্যে রাজপ্রাসাদ থেকে তার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকটক কিনে নিতে চাইছে মাইক্রোসফট, চুক্তি হলে ভারতেও ফেরার সম্ভাবনা
প্রাক্তন এই রাজা কোথায় যাচ্ছেন সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। তবে স্পেনের কিছু সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছ যে কার্লোস ইতিমধ্যে দেশ ছেড়েছেন। তবে প্রাক্তন রাজা জানিয়েছেন, তদন্তের জন্য যদি তার সাথে কথা বলার প্রয়োজন হয় তাহলে যোগাযোগ করা যাবে।
১৯৭৫ সালে স্পেনের স্বৈরশাসক জেনারেল ফ্রাঙ্কোর মৃত্যুর পর দেশটিকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে হুয়ান কার্লোস বেশ দক্ষতার সাথেই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। রাজ সিংহাসনে ৪০ বছর থাকার পর ২০১৪ সালে তিনি ছেলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
কার্লোসের জামাইয়ের বিরুদ্ধেও একসময় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তাছাড়া স্পেন যখন আর্থিক সঙ্কটে তখন রাজা হাতি শিকারে বেরিয়েছিলেন। এসব নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর কার্লোস রাজ পদ থেকে সরে যান।
সৌদি আরবে মক্কা-মদিনা রেল সংযোগ স্থাপনের জন্য স্পেনের একটি প্রতিষ্ঠান ৬৭০ কোটি ইউরোর কাজ পায়। এতে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। এছাড়া সুইস ব্যাঙ্কে কার্লোসের অ্যাকাউন্টে গরমিল পাওয়া গিয়েছে। এই বিষয়েও তদন্ত করছে স্পেনের সুপ্রিম কোর্ট। স্পেনের দুর্নীতি বিরোধী আধিকারিকরা মনে করেন, প্রাক্তন রাজা কার্লোসের সুইজারল্যান্ডে অনৈতিক কিছু সম্পদ রয়েছে। এই বিষয়ে সুইজারল্যান্ডেও তদন্ত চলছে।