রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে (United Nations Security Council) ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের (Ukraine-Russia War) অবসানের পথ বাতলালো ভারত। ভোটও দিল না রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে (Ukraine-Russia War) সমাপ্তি টানার জন্য, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানালো ভারত। সোমবার, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভায় (United Nations Security Council), ভারত একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন, সার্বভৌমত্ব এবং কোনও রাষ্ট্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছে। উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি আর রবীন্দ্র (Deputy permanent representative R Ravindra) জানান, ভারত মনে করে, শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই যে কোনও দ্বন্দ্বের স্থায়ী সমাধান হতে পরে।
ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান শত্রুতা বন্ধের লক্ষ্যে দুই দেশের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ এবং আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে ভারত। আর রবীন্দ্র জানিয়েছেন, এই বিষয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে রাশিয়ান ফেডারেশন (Russian Federation) এবং ইউক্রেনের (Ukraine) সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ভারত অবিলম্বে ইউক্রেনের সমস্ত রকম হিংসা বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) বারবার অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। বারবারই তিনি বলেছেন, আলোচনা ও কূটনীতি ছাড়া এই দন্দ্বের অবসানের আর কোনও পথ নেই।
আরও পড়ুন - নাৎসিদের 'জ্বলন্ত পেঁয়াজ' ব্যবহার করছে রাশিয়া, ভয়ঙ্কর অভিযোগ তুলল ইউক্রেন
আরও পড়ুন - রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বলি মার্কিন সাংবাদিক - কারা মারল, ঘনাচ্ছে রহস্য
আরও পড়ুন - পোল্যান্ডে সরছে ভারতীয় দূতাবাস - পশ্চিমেও রুশ হামলা, আর নিরাপদ নয় ইউক্রেন
রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে, এদিন ভারতের রাষ্ট্রদূত দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, ইউক্রেনের ক্রমে ভয়াবহ হয়ে ওঠা মানবিক পরিস্থিতির দিকেও। আর রবীন্দ্র বলেন, 'মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে এবং পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।' তিনি আরও জানান, ইউক্রেন থেকে ভারতীয় নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য ভারত সরকার নিবিড় এবং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদকে তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত ২২,৫০০ ভারতীয়কে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অভিযানের ঘোষণা করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। প্রায় তিন সপ্তাহ হতে চলল এই যুদ্ধ চলছে। ইউক্রেনের, বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলের একের পর এক শহর রাশিয়ার হামলায় বিধ্বস্থ। শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বহু মানুষ ঘরছাড়া। বলা হচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (Second World War) পর থেকে ইউরোপে এত ভয়ঙ্কর শরণার্থী সংকট (Refugee Crisis) আর দেখা যায়নি। প্রথমে পূর্ব ইউক্রেনের শহরগুলিই রুশ বাহিনীর নিশানায় থাকলেও, গত রবিবার ভোরে রাশিয়ার আক্রমণ প্রসারিত হয়েছে ইউক্রেনের পূর্বতম অংশেও।
ভারতের পক্ষ থেকে বারবার করে এই যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (USA)-সহ পশ্চিমী দেশগুলির মতো, সরাসরি রাশিয়ার সমালোচনা করার পথে হাঁটেনি মোদী সরকার (Modi Govt)। বরাবরই এই সংকটের বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে নয়া দিল্লি (New Delhi)। এমনকী, ইউক্রেনে, রুশ সামরিক হামলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘে আনা প্রস্তাবের বিষয়ে ভোটাভুটিতে ভোটদান থেকেও বিরত থেকেছে ভারত।