
জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। শুক্রবার পশ্চিম জাপানের নারায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। শহরে দলীয় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ই গুলি করা হয় তাঁকে। গুলি তাঁর গলায় লেগেছিল। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই সময়ই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। যদিও প্রথমে জাপান সরকার জানিয়েছে তেমন গুরুতর নয় শিনজো আবের অবস্থা। তারপর জাাপনি একটি মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছিল পালমোনারি কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে চলে গেছেন। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শিনজো আবে।
শিনজো আবের আততায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর সে জানিয়েছেন শিনজো আবের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলে। সেই কারণেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল।
শিনজো আবে, জাপানের সবথেকে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৫৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন, ২০০৬ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত এবং আবার ২০১২ থেকে ২০২০ পর্যন্ত জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল ছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে একাধিকবার নিজের ঘনিষ্ট বন্ধু বলে উল্লেখ করেছেন। শিনজো আবে দুই বারের জন্য লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্টও ছিলেন।
শিনজো আবে জাপানের সবথেকে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কৃত্বের দাবি করেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরু তিনি প্রধান মন্ত্রিপরিষদের সচিব হন। বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচিত হওয়ার পরই শিনজো আবের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়।
২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে, প্রধানমন্ত্রী জুনিচিরো কোইজুমি তাকে প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে মনোনীত করেন। এক বছর পরে, তিনি প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি হিসাবে তার স্থলাভিষিক্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি ছিলেন জাপানের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। বছর খানেক আগে শারীরিক সমস্যার কারণে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে দেন। তাঁর হাত ধরেই জাপানের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসে। তাঁর আগে পাঁচ জন প্রধানমন্ত্রী ১৬ মাসও একটানা রাজ করতে পারেননি।
শিনজো আবে ২০১২ সালে সফল হন। তারপর ২০১৭ সালেও তিনি সফল হন। জাপানি রাজনীতিতে তিনি রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত ছিলেন। জাপানের ধনী পরিবারের জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা ছিলেন সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর মামাও জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাঁর হাত ধরেই পশ্চিমের দেশগুলির সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক দৃঢ় হয়। যা জাপানকে আর্থিক দিক দিয়ে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ
গুলিবিদ্ধ শিনজো আবে হৃদরোগে আক্রান্ত, প্রাক্তন জাপান প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে
এবার মহার্ঘ হবে বিদ্যুৎ, কয়লা সংকটের কারণে সাধারণকে গুণতে হবে অতিরিক্ত বিদ্যৎ বিল
জ্যোতি বসু জনপ্রিয় কমিউনিস্ট নেতা, দল না ছেড়েও সমালোচনা করেছিলেন দলীয় সিদ্ধান্তের