Afghanistan: মোল্লা বরাদরের উত্থানের পাকদণ্ডী, পশুপালক থেকে রাষ্ট্রপতির পথে তালিবান নেতা

চড়াই উৎরাই বেয়ে তালিবান প্রধান মোল্লা বরাদর হতে চলেছেন আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি। তালিবান নেতা ধরা পড়েছিলেন মার্কিন সেনার হাতে। 

Asianet News Bangla | Published : Aug 15, 2021 3:09 PM IST / Updated: Aug 18 2021, 02:05 PM IST

তালিবানরা কাবুলের দখল নেওয়ার পরেই বিশ্বজুড়ে জোর জল্পনা পরবর্তী আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদার।  তবে আশা করা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা আলি আহমেদ জালালি আপাতত অন্তবর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দেবে। বর্তমানে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সঙ্গে তাঁরই বাসভবনে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনায় বসেছে তালিবানরা। সূত্রের খবর কাবুলে পৌঁছেছে মোল্লা বরাদারও। সম্পূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর হয়ে গেলেই তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার সামলাবেন বলেও সূত্রের খবর। 

মোল্লা আবব্দুল ঘানি বরাদারঃ
১৯৬৮ সালে জন্ম তালিবান কমান্ডারের। ১৯৯৪ সালে আফগানে আফগানিস্তানে তালিবান আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে যে চার জনের নাম উঠে আসে তারমধ্যে অন্যতম হলেন মোল্লা বরাদার। ইন্টারপোলের মতে আফগানিস্তানের উরুজগান প্রদেশে জন্ম। পশু পালন করাই পরিবারের পেশা ছিল। আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসেডিন্ট হামিদ কারজাইয়ের মত মোল্লা বারাদরও একজন দুরানি পাশতুন। 

১৯৯৪ সালে তালিবান আন্দোলনে শুরুর পর মোল্লা ওমরের সঙ্গে বারাদরও সামরিক কৌশলবিদ ও কমান্ডার পদে উন্নীত হয়েছিলেন। তালিবান প্রধান হিসেবে মার্কিন সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন। বিশ্ব জুড়ে তালিবান সংগঠন মজবুত করতে বিশেষ উদ্যোগও গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৮০ সালে কান্দাহার সোভিয়েত সেনার বিরুদ্ধে প্রথম আন্দোলন করেছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে ২০০১ সালে তালিবান পতনের পর থেকেই মার্কিন সেনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে শুরু করেন তিনি। 

আমেরিকা আর ব্রিটেনের বিরুদ্ধে তালিবানদের প্রায় সবকটি বড় যুদ্ধেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন মোল্লা বরাদার। মোল্লা বরাদারের স্ত্রী মোল্লা ওমরের বোন। একটা সময় তিনি তালিবানদের আর্থিক কাজকর্মগুলি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন। তাকেও গ্রেফতার করেছিল মার্কিন সেনা। তবে ২০১০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনার সময় তিনি মুক্তি পান। 

কাবুলের দরজায় কড়া নাড়ছে তালিবানরা, বিনা যুদ্ধে জালালাবাদে পতন আফগানিস্তান সরকারের

মোল্লা বরাদার তালিবান নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিশানাতেও রয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের করাচি থেকে ২০১০ সালে মার্কিন সেনার হাতে ধরা পড়েন তিনি। কিন্তু কিছু পরেই ছাড়া পেয়ে যান। মোলাল ওমরের নাম যেমন বিশ্ববাসী জানত গ্রেফতারের আগে পর্যন্ত মোল্লা বরাদর তেমন পরিচিত তালিবান নেতাদের মধ্যে পড়তেন না। কিন্তু তারপরেই সামনে আসে তাঁর আসল কীর্তি। কারণ সেই সময় মোল্লা বরাদার ছিলেন মোল্লা ওমরের অত্যান্ত বিশ্বস্ত। আর সেই সময় তালিবানদের সেকেন্ড ইন কমান্ড। 

কাবুলে ঢুকেই ক্ষমতা দখলের 'খেলা' শুরু তালিবানদের, আশরাফ ঘানিকে সরিয়ে নতুন রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন মোল্লা বারাদার

একটি সূত্র বলছে আফাগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই মোল্লা বারাদার চিন সফর করেছিলেন। চিনের বিদেশ মন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলেছিলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি নাকি রাশিয়া সফরেও গিয়েছিলেন। আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করার জন্যই দুটি দেশে সফর করেন তিনি। তাবে ২০২০ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলেই মোল্লা বারদারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত মালমে খালিলজাদ চুক্তি করেছিলেন। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন মার্কিন পরোরাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও। তিনি আল-কায়দা জঙ্গিগোষ্টার সঙ্গে তালিবানদের সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও বলেছিলেন। সেই সময় বারাদার আশা করেছিলেন আফগানিস্তান চার দশকের সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসবে। আফগানবাসীর জীবন আরও সমৃদ্ধ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছিলেন। 

Share this article
click me!