পাকিস্তানে প্রতিদিনই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন ক্রমাগত তাদের ভিডিও প্রকাশ করে বিশ্বের কাছে সাহায্য চাচ্ছেন, পাশাপাশি বলছেন কিভাবে তাদের হত্যা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানে ফের আক্রান্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। ক্রমাগত হামলা চলছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওপর। মঙ্গলবার সকালেও লাহোরের একটি মসজিদ থেকে খ্রিস্টানদের ওপর হামলার নির্দেশ জারি করা হয় বলে অভিযোগ। তার আগে ফয়সালাবাদের একটি চার্চে খ্রিস্টানদের ভয় দেখানোর জন্য উর্দুতে 'হাম আ গয়ে হ্যায়...(আমরা এসে গিয়েছি)' লেখা হয়েছিল, সেই সঙ্গে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দার মামলা নথিভুক্ত করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও ভিডিওটি প্রকাশ করে সাহায্য চেয়েছে।
একই সঙ্গে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ প্রধান বলেছেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এখানে সংখ্যালঘুরা বেশি নিরাপদ। পাকিস্তানে প্রতিদিনই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন ক্রমাগত তাদের ভিডিও প্রকাশ করে বিশ্বের কাছে সাহায্য চাচ্ছেন, পাশাপাশি বলছেন কিভাবে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে লাহোরের শেখুপুর এলাকায় স্থানীয় কিছু লোক মারামারি করে। এরপর সেখানকার স্থানীয় মসজিদ থেকে মুসলমানদের সমবেত হতে বলা হয়। এরপর খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন সেখান থেকে ছুটতে থাকে এবং তাদের জানমাল রক্ষার আবেদন জানিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করে।
ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের একজন ব্যক্তি আজ সকালে তাদের ওপর চলা হামলার কথা বলছেন এবং সাহায্য চাইছেন। এর আগে ফয়সালাবাদের রহমত টাউন এলাকার একটি গির্জার বাইরের দেয়ালে মোহাম্মদ আল্লাহর নামের বাণী লেখা ছিল এবং গির্জার দেয়ালে লেখা ছিল আমরা পৌঁছে গেছি। চার্চের লোকদের সমস্যা হল তারা যদি তাদের চার্চের দেয়ালে লেখা মুহাম্মদ বা আল্লাহর নাম মুছে ফেলে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি মামলা করা যেতে পারে। অন্যদিকে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনকে এখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে, অন্যথায় তাদের মেরে ফেলব।
এর আগে, জরানওয়ালা শহরে মুসলমানরা ২০টি গির্জা পুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে এবং খ্রিস্টানদের ৪০০টিরও বেশি বাড়ি ভাংচুর করা হয় ও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। দুঃখের বিষয় হল খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকেরা যখন ভিডিও প্রকাশ করে সাহায্য চায়, তখন পাকিস্তান প্রশাসন তাদের কোনো সাহায্য করে না এবং যখন তাদের গির্জা ও বাড়িঘর পুড়িয়ে মারা হয়। এত হট্টগোলের পর, পুরো পাকিস্তান প্রশাসন পাশে থাকার বার্তা দিলেও, কাজের সময় তাদের সাহায্য পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। লাহোরের আজকের সকালের ঘটনাও এর স্পষ্ট প্রমাণ দেয় কারণ এখন পর্যন্ত এই মানুষগুলো কোনো সাহায্য পায়নি।